কী ব্রেকফাস্ট করবে ভেবে
খাচ্ছো কি হিমশিম?
ভাবনা কীসের আছেই যখন
পাউরুটি আর "ডিম"..
সারাদিনের কাজের পরে
কান মাথা ঝিমঝিম
এক নিমেষেই আহ্লাদী মন
খেয়ে ভাজা দুটো ডিম।।
এই অসামান্য কবিতাটি কার রচিত জানেন কি? অবশ্যই জানেন না। জানবেন কোথা থেকে... আপনারা মশাই এসব বিখ্যাত সাহিত্যিকের খবরাখবরই রাখেন না। আজ "বিশ্ব ডিম দিবস" কে স্মরণীয় করে তুলতে এই কবিতাটি এই নিবন্ধকার নিজে আজ সকালে রচনা করেছে। কেমন হয়েছে জানাবেন এই "ঘোড়ার ডিম".. থুড়ি "ছড়ার ডিম"..
মজা দিয়ে শুরু করে এবার আস্তে আস্তে সিরিয়াস আলোচনায় ঢুকি। মনে করুন বাড়িতে হঠাৎ অতিথি এসেছে। ঘরে সেরকম কোন খাবার নেই। কুছ পরোয়া নেহি.... চায়ের সঙ্গে গরম গরম একখানা ওমলেট ভেজে অতিথির হাতে তুলে দিলেন। দেখবেন তার মুখটা কি সুন্দর হাসি হাসি হয়ে যাবে এক মুহূর্তে। অথবা সকালে তাড়াহুড়োর সময় আপনার বিশেষ কিছু রান্না করতে ইচ্ছে করছে না। ভাতের মধ্যে দিয়ে দিলেন আলু আর ডিম সেদ্ধ। সঙ্গে একটু ঘি.... ব্যাস আর কিছু লাগেনা। সারাদিনের এনার্জি ওখান থেকেই পেয়ে গেলেন। অথবা ঘনঘোর বর্ষার দিন। মনটা নেচে উঠবেই "খিচুড়ি খিচুড়ি" বলে। আর খিচুড়ির সঙ্গতকারী... কে আর হতে পারে ডিমভাজা ছাড়া?
সাদা রঙের এই ছোট্ট খাদ্যবস্তুটি শুধু সুস্বাদু নয়... পুষ্টিকর খাদ্য তালিকায় এর নাম একেবারে প্রথম দিকে। বড় কোনো অসুখ থেকে সেরে ওঠার সময়ও শরীরকে তাড়াতাড়ি ঠিক করার জন্য ডাক্তারবাবুরা দিনে একটা করে ডিম খেতে বলেন।
জানেন কি, পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ডিমে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন? আপনার পরিবারের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে ডিমের বিকল্প নেই। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তত: একটি ডিম রাখা উচিত। আমার আপনার সবার প্রিয় এই খাদ্য বস্তুটি দেখতে ছোট হলেও গুণের দিক থেকে অনেক অনেক বড়।
আমরা সকলেই জানি প্রাণিজ আমিষে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়। শরীরের সম্পূর্ণ গঠনে অথবা মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য মানুষের শরীরে প্রোটিনের যথেষ্ট পরিমান চাহিদা থাকে। আর এই চাহিদা পূরণে ডিমের সত্যিই কোনো বিকল্প হয় না। দুধের পরেই সম্পূর্ণ সুষম খাবার হিসেবে বিজ্ঞানীরা ডিমের নাম করেন। একটা সুস্থ, স্বাস্থ্যবান এবং মেধাবী জাতি গঠনে ডিমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সবথেকে মজার বিষয় হলো ডিম সেদ্ধ, ভাজা, ঝোল, তরকারি, চপ, কাটলেট, কোর্মা, কালিয়া... সব রকম পদ বানিয়ে খাওয়া যায়। আর অত্যন্ত সহজপাচ্য বলে চার মাসের বয়সী বাচ্চাকেও ডাক্তার এবং পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ডিম খাওয়াতে বলেন।
ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার প্রথম বিশ্ব ডিম দিবসের আয়োজন করা হয়। এর পর থেকেই প্রতিবছর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
রোগ প্রতিরোধে এবং শরীর গঠনে ডিমের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে বর্তমানে বিশ্বের ৪০ দেশে পালিত হয় দিনটি।
তাহলে আর দেরি কেন? চলুন মহাসমারোহে আজ, অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার চব্বিশতম "বিশ্ব ডিম দিবস" পালন করা যাক..
হর দিন কো বনাও 'ফান ডে'
খুব খাও আন্ডে...
আজ্ঞে হ্যাঁ পাঠক বন্ধুরা এই মহান কবিতাটিও এই লিখিয়েরই রচনা। দেখেছেন ডিম খেয়ে কেমন কবিত্ব শক্তিও বেড়ে গেছে... সুকুমার রায়ের বিখ্যাত কবিতার একটা লাইন ধার নিয়েই লিখি ...."আদিম রাতের চাঁদিম হিম গরম ভাতে সিদ্ধ ডিম"...
ঋণ স্বীকার: আবোলতাবোল–সুকুমার রায়