মহাকাশে যেতে চাই আমরা সবাই। ছোট থেকেই অনেকের স্বপ্ন থাকে মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা করার এবং সেই জগতে কাজ করার। সেটা যখন সত্যি হয়, তখন যেন স্বপ্ন সত্যি হয়ে ওঠে। সেরকমই ঘটনা ঘটেছে ভারতের নভোশ্চরদের ক্ষেত্রে। 'চন্দ্রায়ন-২' শুরু হওয়ার প্রাক্কালেই ভারতের পরবর্তী মহাকাশ জয়ের লক্ষ্য ঘোষিত হল। 'গগনায়ন' অভিযানের জন্য ভারতের ৩ জন নভোশ্চর বিজ্ঞানীকে ২০২২ সালের মধ্যে মহাকাশে পাঠানো হবে এবং তারা সেখানে সাতদিন থাকবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনই একটি মহাকাশ প্রকল্পের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির রূপায়নে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী বছর জানুয়ারিতেই চন্দ্রায়ন-২ চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা। ২০০৮ সালে চন্দ্রায়ন-১ প্রকল্প শুরু হয়েছিল, আরো উন্নত প্রযুক্তির রোভার সম্বলিত চন্দ্রায়ন-২ চাঁদে যাবে, তা তখনই ভাবা হয়েছিল। চাঁদের সমতল, আবহাওয়া, মাটি এবং খনিজ পদার্থ আরো গভীরভাবে পরীক্ষা করে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে থাকবে চন্দ্রায়ন-২। গোটা বিশ্বের মহাকাশবিজ্ঞানী জগৎ এই উৎক্ষেপণের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কারণ ভারত এত স্বল্প খরচে চন্দ্রায়ন-১ এবং চন্দ্রায়ন-২ উৎক্ষেপণ করছে, তা যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে সমগ্র দুনিয়ায়। 'গগনায়ন' প্রকল্পটি সফল হলে ভারত হবে পৃথিবীর চতুর্থ দেশ, যারা মহাকাশে হিউম্যান রকেট পাঠাচ্ছে। বাকিরা হল আমেরিকা, রাশিয়া এবং চীন। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের বিজ্ঞানীরা উক্ত অভিযানের জন্য একটি বৃহত্তম রকেট নির্মাণ করবেন-জিএসএলভি মার্ক-থ্রী। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে আগামী ৪০ মাসের মধ্যেই এটি নিক্ষিপ্ত করা হবে। মোট তিনটি রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে, দুটি আনম্যানড এবং একটিতে তিনজন মহাকাশবিজ্ঞানী থাকবেন। মহাকাশের লো আর্থ অরবিটে তাঁরা অন্তত সাতদিন থাকবেন। এই প্রকল্পে রাশিয়া এবং ফ্রান্সের প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া হবে। যে মহাকাশবিজ্ঞানীদের পাঠানো হবে, তাদের প্রশিক্ষণ পর্বও শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। ভবিষ্যতে ভারত সরকার এই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ব্যোমনাট্স নাম আখ্যায়িত করবে বলে জানা যাচ্ছে, কারণ ব্যোম মানে আকাশ, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এই নামকরণের কথা ভাবা হয়েছে।