সাড়া জাগিয়েও হারিয়ে যাওয়া নব্বইয়ের নায়িকারা

সময়টা করিনা ,আলিয়া দের যুগ। বদলে গিয়েছে বলিউডি সিনেমার ভাষা। বদলে গিয়েছে দর্শকদের রুচি। এখন বলিউডের সিনেমা তৈরি হয় আন্তর্জাতিক দর্শকদের কথা মাথায় রেখে।  এই সবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে গিয়েছে অভিনেতা অভিনেত্রীরা। কিন্তু নব্বই দশকটা ছিল ওঁদেরই। মাধুরীর, জুহির চোখ ধাঁধানো গ্ল্যামারের পাশে আলাদা করে চিনেছিল দর্শক।  অভিনয়, সৌন্দর্যে, নিজস্বতায় দর্শকদের নজর কেড়ে নিলেও বি টাউন তাঁদের বেশিদিন পায়নি।  বলিউড সাম্রাজ্যের নিজস্ব নিয়মে অনেকেই হারিয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় বিদায় জানিয়েছেন পর্দা জীবনকে। সেরকমই কয়েকজনের খবর রইল এই প্রতিবেদনে।

মীনাক্ষী শেষাদ্রি- ‘হিরো’, ‘ঘাতক’, ‘ঘায়েল’, ‘দামিনী’...লিস্টটা আর লম্বা হবে। নজরকাড়া সুন্দরী, অনবদ্য অভিনেত্রী। তার সঙ্গে ধ্রুপদী ঘরানার নৃত্যশিল্পী। বলিউডে তাঁর জায়গাটা ছিল একেবারেই আলাদা। মাধুরী, জুহির সঙ্গেই। কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই সিল্ভার স্ক্রিন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। নেপথ্য কারণ অবশ্য বিয়ে। এক ব্যবসায়ী বিয়ে করে আমেরিকা প্রবাসী হয়ে যান মীনাক্ষী। বলিউড আর তাঁকে পায়নি।     

FotoJet (132)

 

ফারহা নাজ-  মাত্র ১৭ বছর বয়সে ‘ফয়সলা’ ছবি দিয়ে ডেবিউ হয়। অভিনেত্রী টাবুর দিদি। আশি-নব্বই এর দশক এ প্রথম সারির হিরোইন। মিঠুন চক্রবর্তী, সানি দেওল থেকে শুরু করে আমির খান, ঋষি কাপুর, অনিল কাপুর সকলের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বিন্দু দারা সিং-এর সঙ্গে বিয়ের পর সিনেমা থেকে বিদায় নেন।

FotoJet (134)

পূজা ভাট-  নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে সিনেমার দুনিয়ায় প্রবেশ। প্রথাভাঙ্গা সুন্দরী। হৃদয় জ্য় করে নিয়েছিলেন সিনেমা প্রেমীদের। অন্য পরিচয় তিনি বিখ্যাত চিত্র পরিচালক মহেশ ভাটের বড় মেয়ে। পূজা ভাট। দিল হ্যায় কে মানতা নেহি, ড্যাডি, ন্যাহি, সড়ক এর মতো সিনেমায় হিরোইনের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। তারপর হঠাৎ সরে যান ছবির দুনিয়া থেকে। ২০০৪ সালে আবার ফিরে আসেন পর্দায়। তবে এবার পরিচালকের ভূমিকায়। জিসম-টু, পাপ, হলিডে’র মতো ছবির পরিচালক তিনি।    

FotoJet (137)

অনু আগরওয়াল-   নব্বইয়ের দশকে মহেশ ভটের সুপার-ডুপার হিট সিনেমা আশিকির সেই কৃষ্ণা সুন্দরীকে মনে আছে?  অনু আগরওয়াল। সারা ভারত প্রেমে পড়েছিল অনুর।  প্রথম ছবিতে সাফল্য এলেও পরের ছবি সেরকম সাড়া জাগাতে পারেনি।  রূপালি জগতে মাটি শক্ত করার লড়াইটা যখন চলাচ্ছিলেন তখনই বড়সড়  দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। টানা কোমায় থাকার পর ২০১৫ তে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন।  তাঁর সেরে ওঠার লড়াই নিয়ে একটি বইও লিখেছেন প্রাক্তন অভিনেত্রী। এখন বিহারের এক গ্রামে থাকেন। পেশায় যোগা প্রশিক্ষক।  

FotoJet (138)

কিমি কাটকার- অমিতাভ বচ্চনের ‘হাম’ ছবিতে দুর্দান্ত হিট হয়েছিল একটা গান। আজও চ্যার্টবাস্টারের হিট লিস্টে সেই গান। 'জুম্মা চুম্মা দে দে'। গান আছে, কিন্তু সেই গানের সঙ্গে  ছিলেন এক দুরন্ত আবেদনময়ী অভিনেত্রী। তাঁকে আর গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে দেখা যায় না। কিমি কাটকার। টারজানগার্ল হিসেবেও জনপ্রিয় ছিলেন। পরে ফটোগ্রাফার ফোটোগ্রাফার শান্তু শোরেকে বিয়ে করার করার পর সরে যান অভিনয় জীবন থেকে।

FotoJet (139)

মমতা কুলকার্নি-  ‘ওয়াক্ত হামারা হ্যায়’, ‘ক্রান্তি বীর’, ‘করন-অর্জুন’, ‘সবসে বড়া খিলাড়ির’ মত একাধিক মুভি তাঁর ঝুলিতে। নয়ের বলিউডে মমতা ছিলেন ‘বোল্ড’ নায়িকা। কিন্তু বিতর্ক এই অভিনেত্রীর কেরিয়ার গ্রাফকে ক্রমশ নিচের দিকে ঠেলে দেয়। এক সময় সরে যান।  ২০০০ সালে হঠাৎ খোঁজ মেলে অভিনেত্রীর। কেনিয়ায় এক যোগিনীর বেশে। আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নিয়েছিলেন।  পরে ড্রাগ ব্যবসায় যুক্ত থাকার ঘটনায় অভিযুক্ত হন।

FotoJet (136)

আয়েশা জুলেখা -  জো জিতা ওহি সিকান্দার,  খিলাড়ি তে তাঁর নাচ, অভিনয় অনেকেই আজও মনে করে পারেন। নব্বই-এর বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে ঘিরে আলাদা সেনসেশন তৈরি হয়েছিল। তিনি আয়েশা জুলেখা। বলিউডে একের পর এক ছবির অফার এলেও বলিউডকে তিনি জীবনের মাপকাঠি ধরেননি। গ্ল্যামার জগতের বাইরের পৃথিবীটাকে দেখতে চেয়েছিলেন।তাই বলিউড ছেড়ে ব্যবসায় মন দেন। গড়ে তোলেন নিজের কনসট্রাকশন কোম্পানি। সঙ্গে স্পা বিজনেস।

FotoJet (133)

নম্রতা শিরোদকার- দিদি শিল্পা নম্রতা শিরোদকার।  ১৯৯৮ তে প্যার ক্যায়সে হোতা হ্যায়, বাস্তব এর মতো সিনেমায় দেখা গিয়েছিল।  পরের দিকে বক্স অফিসে সেভাবে সাফল্য না দেখাতে পারায়  হিন্দি ছবির অফার পাওয়া বন্ধ হয়ে হয়ে যায়। নম্রতা ব্যস্ত হয়ে পড়েন দক্ষিণী সিনেমার কাজে। ২০০৫- এ দক্ষিণী ছবির সুপারস্টার মহেশ বাবুকে বিয়ে করেন। দুটি সন্তানও আছে ন্ম্রতার।

FotoJet (135)

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...