এ প্রজন্মের সঙ্গে তার খুব একটা পরিচিতি নেই বললেই চলে। অথচ কয়েক শতক আগে অসংখ্য মানুষের নিত্যদিনের সফর সঙ্গী ছিল সে। হলুদ পিচবোর্ড টিকিট। দেড়শো বছরেরও বেশী বয়স এই টিকিটের। ইউটিএস পদ্ধতি আসার পর বদলাতে শুরু করে ছবি। এখন তো এই টিকিট প্রায় দেখাই যায় না। কালের নিয়মে নতুনকে জায়গা করে দিতে পুরনো সবকিছুকেই একদিন বিদায় নিতে হয়। আর মাত্র একটা বছর। তারপরই চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে বহুদিনের স্মৃতিবিজড়িত রেলের হলুদ পিচবোর্ডের টিকিট। ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই বাজার থেকে উঠে যাবে এই টিকিট।
যে সব জায়গায় এখনও মিলত এই টিকিট মার্চ মাসের পর সেখানেও কম্পিউটারাইসড টিকিট দেওয়া হবে বলেই খবর। রেল সূত্রে খবর, দেশের সব স্টেশনে ইউটিএস টিকিট প্রবর্তন করার ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। পুরনো এই টিকিট আগামী মার্চেই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন রেলের জাদুঘরে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রাখা থাকবে 'এডমন্ডসন টিকিট'। হ্যাঁ, হলুদ পিচবোর্ডের টিকিটের আসল নাম এডমন্ডসন টিকিট।
এডমন্ডসন টিকিটের দৈর্ঘ্য ২.২৫ ইঞ্চি, প্রস্থ ১.২২ ইঞ্চি। এই টিকিটের জন্ম ইংল্যান্ডে। ১৮৪০ সাল নাগাদ চালু হয় এই টিকিট। এরপর যখন ভারতে ট্রেন চালু হয়, তখন ইংল্যান্ডের অনুকরণে এখানেও শুরু হয় এডমন্ডসন টিকিট। প্রথম দিকে ইংল্যান্ডেও ছাপা হয়েছে ভারতীয় রেল টিকিট। ‘এডমন্ডসন ক্যাবিনেট’ নামে একটি বাক্সে থাকত বিভিন্ন জায়গার টিকিট। যে যেখানে যাবে, সেই অনুযায়ী বাক্স থেকে টিকিট বের করে দেওয়া হত। শুধু দিনটা একটি মেশিনের সাহায্যে টিকিটে খোদাই করে দেওয়া হত।
আগামী বছর থেকে এ সবকিছুই হয়ে যাবে ইতিহাস আর জাদুঘরে স্থান পাবে হলুদ পিচবোর্ড-টিকিট ওরফে 'এডমন্ডসন টিকিট'।