ছট পুজোর সময় যমুনার বেশ কিছু ঘাটে দেখা যায় অস্বাভাবিক কিছু দৃশ্য| দেখা যায়, ঘাটে ঘাটে জমে রয়েছে বেশ অনেকটা করে ফেনা| তখন থেকেই এই ফেনার উৎস সন্ধানে নেমে পড়েন বিজ্ঞানীরা|সম্প্রতি যমুনা দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ফসফেটযুক্ত বাড়ির নিকাশির জলই যমুনার ফেনার মূল উৎস|
ছট পুজোর সময় ভক্তেরা যখন কালিন্দী কুঞ্জের জলে হাত ডুবিয়ে তাদের অর্ঘ্য ভাসাচ্ছিলেন সেই সময়েই মিডিয়ার চোখে ধরা পড়ে যমুনার জলে জমে থাকা ফেনার দৃশ্য| এরপরেই ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল কমিটি, দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি এবং কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটিকে নির্দেশ দেয় যমুনার জলের অবস্থা নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করার জন্য|
জানা গেছে, কালিন্দী কুঞ্জ এবং আইটিও ব্রিজের কাছ থেকে জলের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করতে পাঠানো হলে দেখা যায় সেইস্থানে জলের মধ্যে ফসফেটের ঘনত্ব ০.৫১ এমজি প্রতি লিটার| যেখানে জলে ফসফেটের স্বাভাবিক ঘনত্ব হওয়া উচিত ০.০০৫ থেকে ০.০৫ এমজি প্রতি লিটার সেখানে দাঁড়িয়ে ফসফেটের এত বেশি ঘনত্ব চিন্তায় ফেলেছিল বিজ্ঞানীদের| এরপর থেকেই এই ফসফেটের উৎস খোঁজা শুরু হয়| যমুনা প্যানেল মেম্বারদের কথা অনুযায়ী, যমুনার জলের মধ্যে এসে মেশে প্রায় ৯০% বাড়ির নিকাশির জল| যার মধ্যে মিশে থাকে প্রচুর ডিটারজেন্ট এবং লন্ড্রির কেমিক্যাল|
জানা গেছে, জলের মধ্যে এইধরনের ফেনার অস্তিত্ব সারাবছর দেখা যায় না| যেই মুহুর্তে যমুনার জলের ঢেউ অশান্ত হয়ে যায় সেইসময়ে মন্থন শক্তির ফলে তৈরী হয় এই ফেনা| নদীর জল যখন শান্তভাবে বয়ে যায় সেইসময় ফসফেট কনটেন্ট নদীর নিচে জমা হতে থাকে আর নদীর জল অশান্ত হয়ে উঠলেই তৈরী হয় এই ফেনা|
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছট পুজোর মত ফেস্টিভালের সময় ওয়াজিরাবাদ ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয় যা নিচে গিয়ে মেশে ওখলা ব্যারেজের মধ্যে দিয়ে যমুনার জলে| অনেক উঁচু থেকে পড়ার ফলে সেখানে সৃষ্টি হয় এক মন্থনগতির আর তার ফলেই সৃষ্টি হয় এই ফেনার| যমুনা জিয়ে অভিযানের মনোজ মিত্র জানান, প্রতিবছর বর্ষার পরে যখন আবহাওয়া ঠান্ডা হতে শুরু করে সেই সময় ডিটারজেন্ট-এর বুদবুদ একত্রিত হয়ে তৈরী করে এই ফেনার|