কোর্টের বিচারপতির আসনে বসলেন কোর্টেরই পিওনের মেয়ে

কথায় বলে, পরিশ্রম আর কাজের প্রতি সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো অসম্ভবকেই সম্ভব করা যায়| সেই কথা আবারও প্রমান করলেন বিহারের বাসিন্দা অর্চনা পাঁচ সন্তানের মা অর্চনার বাবা ছিলেন কোর্টের এক সাধারণ পিওন| তার মেয়ে হয়ে বিহারের কোর্টের বিচারপতি হয়ে নিজেকে প্রমান করলেন অর্চনা|

বিহারের কংকরবাগ এলাকায় জন্মগ্রহণ করা অর্চনা ছোট থেকেই দেখেছেন তাঁর বাবাকে বিহারের সরণ জেলার সোনপুর কোর্টের বিচারপতির পিওনের কাজ করতে| ছোট থেকেই এই কাজ তাঁর ভালো লাগত না| তখন থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন একদিন কোর্টের বিচারপতি হয়ে তিনি সকলকে দেখাবেন| মাত্র দুইবারের প্রচেষ্টাতেই বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষায় পাশ করেন অর্চনা| এই মুহূর্তে অর্চনার একটাই দুঃখ তাঁর বাবা গৌরিনন্দন তাঁর এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি|

জানা গেছে, বাবা মারা যাওয়ার পর পড়াশোনা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় অর্চনার| কিন্তু সেই সময় তিনি তাঁর পাশে পেয়েছিলেন তাঁর মাকে| যিনি স্তম্ভের মত দাঁড়িয়ে সব ঝড়ঝাপটা থেকে আড়াল করে গেছেন তাঁর মেয়েকে| এছাড়াও সেই সময় কিছু আত্মীয়স্বজনকেও পাশে পেয়েছিলেন অর্চনা, জানিয়েছেন তিনি নিজেই|

শাস্ত্রীনগর সরকারী বিদ্যালয় থেকে স্কুল পাশ করার পর পাটনা ইউনিভারিতি থেকে স্নাতক পাশ করেন অর্চনা| এরপর তিনি তাঁর নিজের স্কুলেই কম্পিউটার টিচার হিসেবে যোগ দেন| এরপর অর্চনার বিয়ে ঠিক হলে তাঁর মনে হয় সে হয়তো আর তার স্বপ্নটি পূরণ করতে পারবেন না| কিন্তু তাঁর স্বপের কথা জানতে পেরে তাঁর পাশে দাঁড়ান তার স্বামী রাজীব রঞ্জন| পেশায় পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লার্ক রঞ্জনবাবু তার স্ত্রীকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন| শ্বশুরবাড়ির পূর্ণ সমর্থনে তিনি পুনে যান এবং সেখান থেকেই এলএলবি পড়েন| এরপর ২০১৪ তে তিনি ফিরে আসেন পাটনায়| পুর্নিয়ার বিএলটি ল কলেজ থেকে তিনি এরপর এলএলএম পাশ করেন|

পড়াশোনা এইভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত সহজ ছিল না, জানিয়েছেন অর্চনা| তাঁর কথায়, বিয়ের পর বিশেষ করে সন্তানের দেখভালের পর সময় বের করা পড়াশোনা করা খুবই কঠিন| তিনি জানিয়েছেন, কিন্তু সেই কঠিন মুহূর্তে তিনি পাশে পেয়েছেন তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোককে|স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোককে এই জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি|      

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...