বঙ্গের ঐতিহ্য ভারতের সবথেকে বড়ো মসজিদ !!

মালদা এমনি ইতিহাসে সমৃদ্ধ একটি শহর।  সেই মালদার ঐতিহাসিক শহর - ফিরোজাবাদ এই নাম বাংলার সুলতান শামসউদ্দিন ফিরোজ শাহের থেকে এসেছে। টাঁকশালের জন্য  বিখ্যাত ছিল এই শহর। এই    ফিরোজাবাদ  নামটির সাথে এখন পরিচিতি না থাকলেও পাণ্ডুয়া নামটি কিন্তু একেবারে অচেনা   নয়।  বাংলার  স্বাধীন সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ এখানে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেছিলেন  শাসনকার্য চালাতেন এখান থেকেই। শহরটি কিন্তু লোকমুখে  হজরত পান্ডুয়া নামেও   পরিচিত।  এর  কারণ হলো  পান্ডুয়াতে রয়েছে জালালউদ্দিন তবরিজি এবং নুর কুতুব আলম নামের দুই নাম করা সুফি সাধকের খানকাহ।

                       পাণ্ডুয়ার বিশেষত্ব  হলো, এখানকার   আদিনা মসজিদ এক সময়ে ছিল গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের সবথেকে বড়ো মসজিদ জনশ্রুতি  আছে যে, এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লক্ষ মানুষ নামাজ পড়তে পারতেন। সংখ্যাটি অতিরঞ্জিত হলেও  এই মসজিদের  বিশালতা ভ্রান্ত নয়,  তা অবশ্য  মসজিদের পরিত্যক্ততা দেখেই অনুমিত হয় ।

                    

                           সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের পুত্র এবং উত্তরসূরি সিকান্দার শাহ   নিজেকে আরব এবং পারস্যের শাসকদের থেকে যোগ্যতর মনে করে নিজেকে ‘খলিফাবলে ঘোষণা করে খুৎবা পাঠ করেন। বাগদাদ, দামাস্কাস, কায়রো, কর্ডোভার শাসকদের থেকে নিজের সৃষ্টিকে মহিমান্বিত করতে  এমন এক মসজিদ তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা এই সব শহরের সেরা মসজিদের আভিজাত্য ও জৌলুসকে ম্লান করে দেবে। আর সে উদ্দেশ্যেই সিরিয়ার উমাইয়া মসজিদের আদলে  ১৩৭৩ সাল নাগাদ তৈরি করিয়েছিলেন আদিনা মসজিদ এর স্থাপত্যরীতিতে বাঙালি, আরব, পার্শি বাইজান্টাইন শিল্পরীতির মিশেল সুস্পষ্ট অবশ্য মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কে পিছনের দেওয়াল থেকে প্রাপ্ত ফলক জানান দেয় ।

                           

                             দ্বিধাহীন ভাবে বলা যায়, বিশালতায় এই মসজিদ সত্যিই  বিস্ময়কর তৎকালীন আদিনা মসজিদ গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের সবথেকে বড়ো মসজিদ  - এ গর্বের।  তিন দিকে খিলান দিয়ে ঢাকা পথ,  বিশাল প্রার্থনা ঘর মাঝখানে অনেকটা ফাঁকা জায়গা – এসব আজও আছে  এবং স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, আজ তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। আর তাই এই মসজিদ মালদা তথা বঙ্গের গুরুত্বকে বাড়িয়ে তুলেছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...