একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ফিটনেস এবং লাইফ স্টাইলের জন্য অনেক সময়ই যোগাকে শারীরিক সুস্থতার মাধ্যম হিসাবে ফলো করে। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যোগা কতটা উপকারী? এটা কী বাচ্চাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে?
হাইলাইটস:
১। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যোগা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
২। কোন বয়স থেকে বাচ্চাদেরকে যোগা শেখানো উচিত?
৩। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ গঠনে যোগা কতটা সাহায্য করে?
যোগা বাচ্চাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ? এই নিয়ে কথা বললেন যোগা ও ফিটনেস ট্রেনার মি. সোমনাথ বিশ্বাস...
ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যোগা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
শারীরিক ইমিউনিটি বুস্ট করার জন্য এটি খুব প্রয়োজনীয়। কারণ ছোট বাচ্চাদেরকে সব সময় বাড়ির বাইরে বের করা সম্ভব হয় না। তাই ঘরের মধ্যে যোগা করলে শরীর অনেক সুস্থ থাকবে।
কোন বয়স থেকে বাচ্চাদেরকে যোগা শেখানো উচিত?
সর্বনিম্ন তিন বছরের বয়স থেকে বাচ্চা যোগ ব্যায়াম অভ্যাস শুরু করতে পারে। আর ৯০ বছর বয়স অবধি যে কোন মানুষ যোগ ব্যায়াম করে যেতে পারে।
বাচ্চাদের যোগা কার তত্ত্বাবধানে করা উচিত?
ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে বাবা-মা তাদের যোগা করাতে পারেন। আর যদি কোন যোগা ইনস্টিটিউশনে ছোট বাচ্চা যায়, তবে যোগা ট্রেনার সঠিকভাবে বাচ্চাদেরকে যোগার সব নিয়ম শিখিয়ে দেবে। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগার অনেক ভিডিও রয়েছে। সেগুলো দেখেও বাবা-মা বাচ্চাদেরকে শেখাতে পারেন।
যোগব্যায়াম বাচ্চাদের শারীরিক বৃদ্ধিতে কতটা সাহায্য করে?
বর্তমান সময়ে সাধারণ মানুষের শারীরিক উচ্চতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এর সব থেকে বড় কারণ, শরীরে কম ইমিউনিটি। এক্ষেত্রে যোগ ব্যায়াম অভ্যাসের ফলে শারীরিক উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ইমিউনিটি বুস্ট হয়।
এছাড়াও বাচ্চা ছোট থাকলে চলাফেরার ক্ষেত্রে ব্যালেন্স রাখতে পারেনা। ফলে শরীরে আঘাত পায়। কিন্তু ছোট থেকে যোগ ব্যায়াম করলে তাদের ব্যালেন্স বাড়বে এবং সহজে আঘাত পাবে না।
বাচ্চাদের কন্সেন্ট্রেশন বা ফোকাস বাড়াতে যোগা কতটা জরুরি?
আমাদের দেশে যোগার চল কম। অল্প সংখ্যক মানুষই এই অভ্যাসের মধ্যে থাকে। কিন্তু বাইরের দেশে বাচ্চাদের স্কুল থেকেই যোগা শেখানো হয়। এটি বাচ্চাদের মনোযোগ বাড়ায়, পড়াশোনায় একাগ্রতা আনে, এবং ধৈর্য বাড়াতেও সাহায্য করে।
স্কুলে যোগা ক্লাস কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
যতদিন মানুষ বেঁচে থাকবে ততদিনই তার যোগার মধ্যে থাকা উচিত। সেক্ষেত্রে প্রাইমারি ক্লাস থেকে কলেজ অবধি যোগ ব্যায়ামের ক্লাস রাখা যেতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের জন্য যোগার ভিন্ন ভিন্ন সুফল দেখা দেয়।
বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ গঠনে যোগা কতটা সাহায্য করে?
যোগা অভ্যাস করলে বাচ্চাদের ইমিউনিটি বেড়ে যায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তবে, মহিলাদের জন্য যোগার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কারণ, মহিলাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের শারীরিক সমস্যাও বাড়তে থাকে। যোগা সেক্ষেত্রে তাদের খুব সাহায্য করে।
দিনের কোন সময় যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করা উচিত?
সকালবেলা খুব ভোরে ওঠা বা প্রত্যেকদিন জিমে যাওয়া সকালের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি রোজ অন্তত ৩০ মিনিট যোগা করা যায়, তবে তা শরীরের পক্ষে খুব ভালো।
প্রাথমিক স্তরে ছোট বাচ্চারা কোন কোন যোগা করতে পারে?
একদম ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সমস্ত রকম যোগা একদম সঠিকভাবে অভ্যাস করা সম্ভব হয়না। তাই তাদের পক্ষে সূর্যনমস্কার, ছোট ছোট মুদ্রা, যেমন- চন্দ্র মুদ্রা, সাপ মুদ্রা, কোবরা মুদ্রা, ক্যাট মুদ্রা ইত্যাদি অভ্যাস করা গেলে সেটি খুবই ভালো।
যোগা ছাড়াও অন্য কোন কোন ফিটনেস অভ্যাস বাচ্চারা করতে পারে?
যোগার সাথে সাথে যদি বাচ্চাদের পার্ক বা ময়দানে মর্নিং ওয়াকে নিয়ে যাওয়া যায়, তবে সেটা বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধির পক্ষে উপযোগী।
দর্শকদের প্রশ্ন:
স্পেশাল চাইল্ডদের ক্ষেত্রে যোগা কতটা উপকারী?
স্পেশাল চাইল্ডদের মনোযোগ বাড়ানো খুবই দরকার। আর সেখানে যোগা তাদেরকে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, স্পেশাল চাইল্ডরা অনেক সময় শারীরিকভাবে দুর্বল হয়, তারা তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। যোগা সেক্ষেত্রে কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
যোগা বাচ্চাদের বিকাশে কতটা ভালো?
যোগা বাচ্চাদের কন্সেন্ট্রেশন, ইমিউনিটি এবং হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও যেহেতু এটি মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, ফলে বাচ্চারা বিভিন্ন কাজ খুব মনোযোগের সাথে করতে পারে।