ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন কী?

বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় আশার আলো দেখিয়েছে আইভিএফ বা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন। তবে এই প্রক্রিয়া শুরুর আগে রোগীর দেহে অন্য কোনও সমস্যা আছে কী না তার পরীক্ষা করে নিতে হয়। না হলে সন্তান জন্মের সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় রোগীকে। তাই আইভিএফ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানলেন গাইনোকোলজিস্ট ডাঃ সুদীপ বসু।

গাইনোকোলজিস্ট ডাঃ সুদীপ বসু বলেছেন, ফার্টিলাইজেশন একটা ইংরেজি শব্দ যার মানে হল ভ্রুণ নিষিক্ত হওয়া। স্ত্রী জননাঙ্গে মূলত দুটি ভাগ একটি হল জরায়ু, আর অন্যটি ইউটেরাস। এই ইউটেরাসের উপর থেকে দুটো হাতের মতো অংশ বেরোয় যাকে বলে ফেলোপিয়ান টিউব। তার খুব কাছে থাকে ওভারি বা ডিম্বাশয়। প্রতি মাসে ডিম্বাশয় থেকে একটা ডিম বড় হয় বাইরে বেরোয়। টিউব সেটা তুলে নেয়। সেখানেই থাকে ডিমটা। স্পার্ম ইউটেরাস ভিতর দিয়ে গিয়ে ডিমটাকে নিষিক্ত করে। সেখান থেকে যে ভ্রুণ উৎপন্ন হয় সেটা আবার ইউটেরাসের লাইনিং-এ গিয়ে বসে। এই লাইনিং-এর নাম হল 'এর্ন্ডোমেট্রিয়াম'। যদি কোনও মাসে ভ্রুণ নিষিক্ত না তাহলে 'এর্ন্ডোমেট্রিয়াম' বেরিয়ে আসবে। তার মানে যদি কারুর মেন্সট্রুয়েশন না হলে মহিলাদের প্রশ্ন ওঠে সে গর্ভবতী হয়েছে কী হয়নি সেটা নিয়ে? ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন শরীরের বাইরে হয় ইন ভিবো ফার্টিলাইজেশন শরীরের ভিতরে।

ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের একটি উদাহরণ হল- টেস্ট টিউব বেবি। যেখানে ডিমটাকে প্রথমে বাইরে আনা হয়। তারপর সেটির সঙ্গে স্বামীর স্পার্মের সঙ্গে মিশিয়ে ভ্রুণ তৈরি করা হয়। সেই ভ্রুণটাকে ইউটেরাসে ইনজেক্ট করা হয়। তবে সকলের আইভিএফ-এর প্রয়োজন হয় না। যদি স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যায় কখন ডিমগুলো বেরোচ্ছে তাহলে আইভিএফ-এর ছাড়াই সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়। যখন অনেক চেষ্টার পরেও সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তখন আইভিএফ-এর ব্যবহার করতে হবে। তবে আইভিএফ-এর সাকসেস রেট ৫০-৫৬ শতাংশ। রোগীকে অনেক ধরনের পরীক্ষা করাতে হয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে। কারণ রোগীর শরীরে যদি অন্য সমস্যা থাকে তাহলে সে হয়তো গর্ভবতী হয়ে যাবে। কিন্তু সন্তানের জন্ম দেওয়া সময় তার প্রাণ হারানোর সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন রোগী সব ধরনের কাজই করতে পারবে।

বর্তমান সময় বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিলে সমাজে নারীকেই দোষারোপ করা হয়। যার ফলে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তারা। তাই সব সময় পজিটিভ থাকতে হবে। এই বিষয়ে নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...