মনখারাপ আর মানসিক অবসাদ কি এক? মনের স্বাস্থ্য ভাল রাখবেন কীভাবে? অবসাদ থেকে মুক্তির উপায় কী? শিশুদের অবসাদের লক্ষণগুলি কী কী? শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল কীভাবে রাখবেন? পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পিয়ালী পাঠক ঘোষ (Dr Piyali Pathak Ghosh, Psychiatrist)
পিয়ালী পাঠক ঘোষ জানিয়েছেন, ডিপ্রেশন শব্দটা প্রতিদিন আজকাল খুব বেশি ব্যবহার হচ্ছে। মনখারাপ একটা আবেগ। ছোট ছোট বিভিন্ন কারণে হতে পারে। আনন্দ বা দুঃখ পাওয়ার মতোই মন খারাপ খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। ডিপ্রেশন বা অবসাদ কিন্তু অসুখ। যখন মন খারাপ দীর্ঘ স্থায়ী হয় আরও একাধিক উপসর্গ যোগ হয় তার সঙ্গে তখন তা অবসাদ। কাজের ইচ্ছে চলে যাওয়া, আগে যে বিষয়গুলির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় খুব আনন্দ ছিল, সেই বিষয়গুলিতে আগ্রহ হারানো, নহতাশা, নেতিবাচক ভাবনা ঘিরে ধরা, খাওয়া ঘুমের অভ্যাস বদলে যাওয়া, অতিমাত্রায় খাওয়া বা না খাওয়া সবই অবসাদের লক্ষণ। তবে সবচেয়ে ভয়ের উপসর্গ হল মৃত্যু চিন্তা।
অবসাদের দরুন আত্মহত্যার প্রবণতা আসে। এগুলোর কোনওটাই সাধারণ মনখারাপের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। অবসাদ এক ভয়ানক সমস্যা। পরিণতিও ভয়ানক। সেক্ষেত্রে মন খারাপ ক্ষণিকের। নিউরো বায়োলজিক্যাল কারণে ডিপ্রেশন হয়। স্নায়ুতন্ত্রে বদল আসে। ব্যক্তিগত, সামাজিক যে কোনও বিপর্যয়ই হয়ে উঠতে পারে অবসাদের কারণ। এটা কখনই একদিনের ঘটনা নয়। কোনও ব্যক্তির স্বাভাবিক ও সাধারণ জীবনযাত্রা হঠাৎ বদলে গেলেই সচেতন হওয়া উচিত তার চারপাশের মানুষের। বেশ কিছু সময় ধরে সামাজিক জীবনের মেলামেশা থেকে আচমকা নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া, কথা কমে যাওয়া, আচরণ বদলে যাওয়া, খাওয়া ঘুমের রুটিন বদলে যাওয়া এবং সব কিছুতেই নেতিবাচক মনোভাব দেখা গেলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে অবসাদের প্রবণতা। শিশুর আচরণে বদল, পছন্দের কাজে, খেলাধুলোয় আগ্রহ হারানো, পড়াশোনায় অমনোযোগ, জেদি, রাগী হয়ে যাওয়া, কথায় কথায় বিরক্ত- এই ধরনের বদল দেখা গেলে বুঝতে হবে শিশুর মানসিক অবস্থার তারতম্য ঘটেছে। অবসাদের বিভিন্ন পর্যায় আছে। মুক্তির জন্য থেরাপি, মেডিসিন লাগবে। পারিবারিক সচেতনতা ও সাহচর্য জরুরি।