Bone Fever কী? এই রোগের প্রধান লক্ষণ কী কী?

Bone Fever কী? এই রোগের প্রধান লক্ষণ কী কী? কোন বয়সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি? চিকিৎসা কী ভাবে করা হয়? বিস্তারিত জানালেন বিশিষ্ট অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অনুপম দাস Dr. Anupam Das (Orthopaedic & Joint Replacement Surgeon)

 

হাইলাইটসঃ
১। Bone Fever কী?
২। এই রোগের প্রধান লক্ষণ কী কী?
৩। কোন বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে?

Bone Fever কী?
Bone fever পরিচিত শব্দ নয়। অনেকে Break bone fever কথাটি শুনেছেন, যা ডেঙ্গু-কে বলা হয়। কিন্তু Bone fever রোগটি ভিন্ন। এটি অর্থোপেডিক চিকিৎসার অন্তর্গত।

সাধারণভাবে হাড়ের মধ্যে ইনফেকশন ও তা থেকে যন্ত্রণা হলে তাকেই Bone fever বলা হয়। ডাক্তারি ভাষায় এটিকে বলা হয় অস্ট্রিওমাইলাইটিস বা হাড়ের সংক্রমণ। এই রোগের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল হাড়ে ব্যথা এবং জ্বর।

কোন কোন পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ ধরা পড়ে?
এই রোগ মূলত শিশুদের শরীরে দেখা যায়। তাই কোন শিশু যদি বারবার জানায় যে তারা হাড়ের জয়েন্টে ব্যাথা করছে ও সেই যন্ত্রণা থেকে বাচ্চাটির জ্বর আসে, তবে এই লক্ষণগুলি Bone fever -এর কারণ হতে পারে। এই রোগ হলে বাচ্চাদের এনার্জি লেভেল কমে যায় এবং তাদের শরীরের অঙ্গ মুভমেন্ট করতে সমস্যা দেখা দেয়।

এই সমস্যা দেখা দিলে কী করা উচিত?
এই সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই কোন বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে হবে। রোগ চিহ্নিত হবার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা, এমআরআই, এক্সরে ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

বাচ্চাদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায় কেন?
Bone fever - এর দুটি ভিন্ন ধরনের রয়েছে -

প্রথমটি, Hematogones। এটির কারণ হল, আমাদের রক্তে বাইরের ব্যাকটেরিয়া মিশে গীয়ে bone end –এ ইনফেকশন সৃষ্টি করে।

দ্বিতীয়ত, সেকেন্ডারি টু ডিরেক্ট কস। যদি কারোর অ্যাক্সিডেন্টের ফলে হাড়ের ক্ষতি হয়, তবে বাইরে থেকে শরীরে ব্যকটেরিয়া ঢুকে হাড়ের ক্ষতিসাধন করে। এছাড়াও অপারেশনের ফলে হাড়ের নানা ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই রোগ মূলত বাচ্চাদের শরীরে হয়, কারণ তাদের শরীরে ইমিউনিটি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।

Bone Fever নির্মুল হবার পরেও কী ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা যায়?
অস্ট্রিওমাইলাইটিস এমনই এক রোগ, যদি এটি প্রাথমিক স্টেজে চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি লাইফটাইম প্রবলেম হিসেবে থেকে যায়।

এই কারণেই রোগ চিহ্নিত করা গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এই থেরাপি মোট ৬ মাস ধরে চলে। কিন্তু যদি সঠিক চিকিৎসা না হয় এবং রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে তাহলে রোগ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়ে যাওয়ার কিছু বছর পরেও এই সমস্যা আবারও দেখা দিতে পারে। তাতে বলা হয় ক্রনিক অস্ট্রিওমাইলাইটিস ।

এছাড়াও যদি Bone ইনফেকশন জয়েন্ট সেকশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাকে বলা হয় সেপটিক আর্থারাইটিস। আর এই রোগ যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে সেটি চিরকালীন জয়েন্ট প্রবলেমে পরিণত হয়।

মেডিসিনের পর কতদিন অবধি Physical therapy করতে হবে?
অস্ট্রিওমাইলাইটিস -এর ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে পায়ের মুভমেন্ট করা যাবেনা। যদি পা নাড়ানো হয়, তবে পায়ে ফ্রাকচার হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে, যাকে বলা হয় প্যাথলজিক্যাল ফ্যাকচার। কিন্তু প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা চলাকালীন পায়ের পেশি জমে যায়, ফলে মেডিসিন চিকিৎসার পরে পায়ের সঠিক মুভমেন্টের জন্য ফিজিওথেরাপি করাতে হবে। এই ফিজিওথেরাপি স্বাভাবিকভাবে ১ থেকে দেড় মাস অবধি হয়। কিন্তু এটি মূলত নির্ভর করে পায়ের কন্ডিশনের উপর।

এই রোগ কি বয়স্ক মানুষদের হতে পারে?
মূলত বাচ্চাদের শরীরে এই রোগ বেশি দেখা যায়। বড়দের ক্ষেত্রে এই রোগটি ক্রনিক অস্ট্রিওমাইলাইটিস হিসেবে দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীর যদি এই রোগের পুরাতন হিস্ট্রি থাকে ও সেটির সঠিক চিকিৎসা না হয়, তবে পরবর্তীকালে এটি আবারও দেখা দেয়।

খেলাধুলা করার ফলে কী Bone অস্ট্রিওমাইলাইটিস দেখা দিতে পারে?
না, খেলাধুলা করার সাধে এই রোগের কোন সরাসরি সম্পর্ক নেই। কিন্তু খেলাধুলা করার সময় কেউ যদি অত্যাধিক আঘাত পায় তবে সেই ফ্যাকচার থেকে এই রোগ হতে পারে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...