ঘুম থেকে উঠেই জুস কিংবা ব্ল্যাক কফি খাওয়া কি ভাল? দিনের শুরুতেই টক ফল খেলে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়? কোন কোন খাবার খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়? টিপস দিলেন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট, ওয়েলনেস কনসালট্যান্ট ডাঃ অনন্যা ভৌমিক (Dr. Ananya Bhowmik, Clinical Nutritionist and Wellness Consultant)
ডাঃ অনন্যা ভৌমিক জানিয়েছেন, প্রথমত অনেকেরই অভ্যাস থাকে সকালে ব্ল্যাক কফি খাওয়ার। যদি দিনের শুরুতেই একেবারে প্রথমে খাওয়া হয় তাহলে যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তারা অসুবিধায় পড়তে পারেন। পেট ভার হয়ে থাকা, বদহজমের সমস্যা হতে পারে। ব্ল্যাক টি নিরাপদ। সকালে খালি পেটে ফ্রায়েড ফুড খেলেও এমন অসুবিধা আসতে পারে। রাত ঘুমের একটা লম্বা বিরতির পর ফ্রায়েড ফুড খাওয়া একেবারেই বাঞ্চনীয় নয়। তাতেও নানা শারীরিক অসুবিধা হতে পারে। এছাড়া খালি পেটে প্রথমেই টক ফল খাওয়াতেও অনেকের ব্লটিং হয়। প্রচন্ড তেল মশলাদার, ঝাল খাবারও দিনের শুরুতেই এড়িয়ে যাওয়া ভাল। একেবারে খালি পেটে খেলে সারা দিনের হজম ক্ষমতার ওপর একটা চাপ পড়ে। যাদের গ্যাসট্রিক আলসার আছে, গ্যাসট্রাইটিসের প্রবলেম আছে তাদের সকালে বুঝে খেতে হবে।
অনেকের ধারণা সকালে উঠেই জুস্ খাওয়াটা সবচেয়ে ভাল। কিন্তু খুব টক ফলের জুস্ যদি সকালে খাওয়া হয় তাহলে হজম ক্ষমতার ওপর চাপ ফেলে। সকালের ব্রেকফাস্টে লুচি পরোটা খাওয়ার আগে চা বিস্কুট খেয়ে নিলেও ভাজাভুজির বিপদগুলো আটকানো সম্ভব।
পুজো উপবাস বা লম্বা ব্রেকের পর প্রথম খাওয়ার সময় আমন্ড বাদাম খাওয়া যেতে পারে। দুধ বা দুধ জাতীয় জিনিস একদম সকালে খেলে অ্যাসিডিটি হতে পারে। যাদের অ্যাসিডিটির ধাত আছে তাদের ঘুম থেকে উঠে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়া, অনেক দেরীতে ব্রেকফাস্ট বা দিনের পর দিন ব্রেকফাস্ট না করলে, এই অভ্যাসের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলে অবশ্যই প্রফেশনাল ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ নিয়েই করা উচিত। সূর্যাস্তের পর ফল, দই খাওয়া যাবে না এই ধারণাও ভুল। আমাদের শরীরে খাদ্য হজম হয় এনজাইমের মাধ্যমে। তার সঙ্গে সূর্যের সম্পর্ক নেই। আমরা খাবার যখন খাই সেই অনুযায়ী আমাদের শরীরে এনজাইম তৈরি হয় যার দ্বারা আমাদের পরিপাক হয়। আমাদের দরকার সুষম খাবার।
সুষম আহার দরকার। এই অভ্যাস যদি ছোটবেলা থেকে করা হয় তাহলে পরবর্তীকালে গিয়ে লাইফস্টাইলজনিত রোগ থেকে দূরে থাকা যাবে।
সুষম আহার কী?
আমাদের কার্বোহাইড্রেড খেতে হবে। ডায়েট থেকে কার্বোহাইড্রেড বাদ দিয়ে রোগা হবেন না। কারণ সেটা সাময়িক। তা থেকে পরে আরও অনেক রোগ হতে পারে। প্রোটিন অবশ্যই খেতে হবে, কিন্তু অত্যাধিক নয়। আসল খাবার বাদ দিয়ে সাপ্লিয়েন্ট খেলে সুস্থতা ব্যাহত হয়। সাপ্লিমেন্ট চিকিৎসক বা নিউট্রিশন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে খাবেন। সবজি, মরসুমি ফল বেশি করে খাবেন। জল খেতে হবে। অন্য কোনও পানীয়তে তার বিকল্প সম্ভব নয়। আর চাই ঘুম।
ভাল থাকতে গেলে এই সব মেনে চলতে হবে। ঠিক সময়ে ঠিক অনুপাতে খেতে হবে।