টিনিটাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী?

কানের সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল টিনিটাস। অনেক সময় চারদিক নিস্তব্ধ থাকলেও কানে অস্বাভাবিক শব্দ শোনা যায়। এই সমস্যাকে টিনিটাস বলা হয়। বিভিন্ন কারণে মানুষের কানে এই সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যেই এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তবে আজকের যুগে কম বয়সীদের মধ্যেও এই রোগ দেখা যায়। তাই টিনিটাসের লক্ষণ দেখা দিলে শীঘ্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। না হলে এই সমস্যা বড় আকার ধারণ করলে মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাহলে কানে টিনিটাসের সমস্যা কেন দেখা দেয়? টিনিটাসের উপসর্গগুলি কী কী? এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী?

টিনিটাস নিয়ে বিশদে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডাঃ সুদীপ্ত চন্দ্র

চিকিৎসক ডাঃ সুদীপ্ত চন্দ্র বলেছেন, টিনিটাস হল এক ধরনের কানের অসুখ। সাধারণত এই রোগে যে ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন সে অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পান। কিন্তু  অনেক ক্ষেত্রে এই রোগ বড় আকার ধারণ করলে চিকিৎসকরা রোগীর কানে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে এই ধরনের শব্দগুলি শুনতে পান। মানুষের কানের নার্ভ কিছু ভাবে ড্যামেজ হলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কানের শিরা-উপশিরার মধ্যে অস্বাভাবিক ভাবে রক্তচাপ বেড়ে যায় এর ফলেও টিনিটাসের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও মানুষের মুখে একটি কানেক্টিং টিউব রয়েছে যা নাক আর কানের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই টিউবটি অনেক সময় বন্ধ হয়ে যায় বা খুলে যায় যার ফলে একটি আওয়াজ শোনা যায় এটিও এক ধরনের টিনিটাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কানের ইনফেকশন থেকে টিনটাসের সমস্যা দেখা দেয়।

 

Tinnitus1

 

অনেক সময় চর্ম রোগ বা সাইনাসের ইনফেকশন থাকলে কানের ভিতর ইচিং ও মাথা ব্যথা হয়। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই সমস্যাগুলি টিনিটাসের লক্ষণ। তবে কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলি অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহার করলে কানের নার্ভ ড্যামেজ হয়। এর ফলেও টিনিটাস দেখা দিতে পারে। তাই পরিমাণ মেনেই এই ধরনের ওষুধগুলি ব্যবহার করতে হবে। 

বয়স জনিত কারণেই সবচেয়ে বেশি টিনিটাসের সমস্যা দেখা দেয়। ষাটের বেশি বয়স যাদের তাদের মধ্যে এই রোগ দেখা দিতে পারে। যদি কানের নার্ভ ড্যামেজ না হয় তাহলে এই সমস্যার চিকিৎসা সম্ভব। তবে একবার কানের নার্ভ ড্যামেজ হয় গেলে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব না। যেহেতু কানে টিনিটাসের সমস্যা বিভিন্ন কারণে হয় তাই আসল কারণ না জানলে এই রোগের চিকিৎসা করা যায় না। যেমন- সাইনাসের ইনফেকশন থেকে টিনিটাস হলে তখন সাইনাসের চিকিৎসা করতে হবে তাহলে টিনিটাসের সমস্যা থেকেও নিস্তার পাওয়া যাবে। তবে অনেক সময় এই চিকিৎসার পরেও টিনিটাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। তখন সাউন্ডথেরাপি, টিনিটাস রেট্রেনিং থেরাপি, টিনিটাস মাস্কিং ও অস্ত্রপচারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু টিনিটাসের সমস্যা এড়িয়ে চলতে ইয়ার ফোন ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। ইয়ার ফোনের বদলে হেড ফোন ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও ঠান্ডা খাবার কম খেতে হবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...