অনিয়মিত ঋতুস্রাব গর্ভধারণের ক্ষেত্রে কি সমস্যায় ফেলতে পারে?

অনিয়মিত পিরিয়ডসের মূল কারণ কী? অতিরিক্ত স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা কি মহিলাদের স্বাভাবিক ঋতুস্রাব চক্রে প্রভাব ফেলতে পারে? অনিয়মিত ঋতুস্রাব ভবিষ্যতে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে কি সমস্যায় ফেলতে পারে? এই সমস্যার হাত থেকে কীভাবে রেহাই পাওয়া যায়, সমাধান জানালেন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিশেষজ্ঞ ডাঃ সুনাভ কুমার ঘোষ (Dr Sunabha K Ghosh, Gynaecologist & Obstetrician)

ডাঃ সুনাভ কুমার ঘোষ জানিয়েছেন, পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। স্ট্রেস তার মধ্যে অবশ্যই অন্যতম কারণ। স্ট্রেস থেকে পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়, তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঋতুচক্র শুরু হওয়ার একদম প্রথম দিকে অর্থাৎ বয়সন্ধি কাল এবং একদম শেষের দিকে যাকে মেনোপজ বলা হয় সেই সময় হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্নরকমের হরমোনের সমস্যা, থাইরয়েড, প্রোল্যাকটিং ইত্যাদির কারণে হতে পারে। পিসিওএস একটা কারণ এবং পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে অ্যানিমিয়া একটা বড় কারণ। পুষ্টির অভাব, রক্তল্পতা থেকেও এই সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে রোজকার খাদ্যভ্যাস অন্যতম দিক। সুষম, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত সোডিয়াম আছে এমন খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। অতিরিক্ত নোনতা খাবার, ভাজাভুজি। মাছের তেলে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে সেটাও পিরিয়ডকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। নির্দিষ্ট পরিমান জল, সারাদিনে যে কোনও একটা লেবু এবং দই সামগ্রিকভাবে ভাল থাকার জন্য জরুরি।

প্রথম যখন পিরিয়ড শুরু হয় প্রথম ২-৩ বছর অনিয়মিত পিরিয়ড কোনও অসুবিধা নয় বরং সেটাই নিয়ম। দেরীতে হওয়া, মাঝে মাঝে হওয়ায় ভয় পাওয়ার কিছু নয়। তবে তিন চার মাস যদি পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়, বাড়াবাড়ি হয় তখন চিকিৎসকের পরামৰ্শ নেওয়াই ভাল। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালীন গর্ভ ধারণ এক্ষেত্রে একটা সমস্যা, প্রথম পিরিয়ডের পর থেকেই কারও কারও সেই সমস্যা শুরু হয়ে যায়।

অনিয়মিত পিরিয়ডস কোনও রোগ নয়। এটা রোগের লক্ষণ। কেন হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। রোগের কারণ অনুযায়ী তার গতিপথ। সার্ভাক্যাল ক্যানসার, পলিস্টিক ওভারি এরকম অনেক রোগের উপসর্গ হতে পারে অনিয়মিত মাসিক। বাজার চলতি ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। একবার অন্তত চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রত্যেকের উচিত একটা মেন্সস্ট্রুয়াল ডায়েরি রাখা। কবে পিরিয়ড হল, কতদিন রইল, ব্যথা হল কিনা, ব্যথা হলে কতদিন হল, ব্যথার জন্য ওষুধ খেতে হয়েছে কিনা, কাজে যেতে পেরেছে কিনা, এছাড়া কোনও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্ক আছে কিনা,  এ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য রাখতে হবে। সেই ডায়েরি মেনটেন করে যদি কেউ চিকিৎসকের কাছে যায় তাহলে চিকিৎসার সুবিধা হয়। এখন অনিয়মিত ঋতুস্রাব ট্র্যাকিং-এর জন্য অ্যাপের সুবিধাও আছে।        

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...