মহিলাদের জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার কারণ কী?

মহিলাদের মধ্যে ভীষণ ভাবে বাড়ছে জরায়ুর ক্যান্সার। চিকিৎসকদের মতে মানুষের দেহে প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ জরায়ু ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এই রোগ মহিলাদের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে অনিয়ন্ত্রিত মেলামেশা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্যেও জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে। আসলে ক্যান্সারের কোষগুলিতে এস্ট্রোজেন রিসেপ্টর থাকে যা হরমোনের সাথে বিক্রিয়া ঘটিয়ে জরায়ুতে ক্যান্সারের বৃদ্ধি ঘটায়। তবে এই ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় কী? লক্ষণগুলি-ই বা কী কী?

এ বিষয়ে নিয়ে বিশদে জেনে নিন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুজাতা দত্তের কাছে।

ডাঃ সুজাতা দত্ত-এর মতে, জরায়ুতে এই সংক্রমণের সূত্রপাত হয় ভাইরাস ঘটিত কারণে। বিশেষ করে যদি কারুর শরীরে এই ভাইরাস থেকে থাকে তাহলে তার সঙ্গে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়াবে তার মধ্যেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। তবে এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে আগে থেকে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে এই সমস্যা তৈরী হয়। কিন্তু এটি ক্যান্সারে পরিণত হতে অনেক সময় লাগে। প্রায় দশ বছর সময় লাগতে পারে ক্যান্সারে পরিণত হতে।

তবে জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা এখন অনেক সহজেই হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের উপসর্গ প্রথম থেকে বোঝা সম্ভব হয় না। তাই যখন মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত, অস্বাভাবিক গ্যাসবদহজমপেটের সমস্যা দেখা দেবে তখন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। বুঝতে হবে বিষয়টি হালকা নয়। যেহেতু এই রোগের উপসর্গ দেখা দেয় অনেক বছর পর সেই কারণে আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত বোঝা সম্ভব হয় না।

যদিও বর্তমানে অনেক ধরণের চিকিৎসা রয়েছে এই রোগ সারানোর। সবার আগে রোগটি ধরা পড়তে হবে তারপরেই এই রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। যেহেতু এই রোগ ক্যান্সারে পরিণত হতে দশ বছর সময় লাগে তাই জরায়ুতে কোনও সমস্যা দেখা গেলে আগে চিকিৎসকে বলতে হবে সেই সমস্যার কথা। এছাড়াও একটি ভ্যাকসিন রয়েছে যেটা নিলে এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।

এই ভ্যাকসিনের মোট তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পর ২ মাস এর মধ্যে দ্বিতীয় ভ্যাকসিনটি নিতে হবে। তৃতীয়টি ভ্যাকসিনটি ৬মাস পর নিতে হবে। তবে মহিলারা ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগে অর্থাৎ কারুর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কে জড়ানোর আগে যদি ভ্যাকসিনটি নিয়ে নেওয়া যায়, তাহলেই এড়ানো যাবে এই রোগ। কিন্তু কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে সেক্ষেত্রে অস্ত্রপ্রচার ও ওষুধ খেলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। রোগ বেশি ছড়িয়ে গেলে তখন অবশ্যই কেমোথেরাপি,বিকিরণ থেরাপি ও অস্ত্রপ্রচারের প্রয়োজন পড়বে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...