শিশুদের বিকলাঙ্গতা কেন দেখা যায়?

শিশুদের ডিফরমিটি (Deformity) বা বিকলাঙ্গতা কেন দেখা যায়? জন্মগত বিকলাঙ্গতা চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব? বিস্তারিত জানালেন পেডিয়াট্রিক অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ অভিষেক সাহা (Pediatric Orthopedic Surgeon Dr. Abhishek Saha)

ডাঃ অভিষেক সাহা  জানিয়েছেন, বিকলাঙ্গতায় অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী জিন। কিন্তু সেটাই একমাত্র কারণ নয়। হয়ত শিশুর পরিবারে কয়েক প্রজন্মের কোনও শারীরিক সমস্যাই নেই, কিন্তু শিশুর মধ্যে প্রকট হয়েছে ত্রুটি, এমন ঘটনাও আছে। বিকলাঙ্গতায় জিনের বিষয়টাকে ৮০-২০ ধরা যায়।

মিডেকেল সায়েন্সে সবকিছু জেনেটিক ডায়াগোনেসিস, প্রিনেটাল ডায়াগোনেসিস সেটা এখনও পুরোপুরি এই সমস্যাকে চিহ্নিত করে উঠতে পারে না এটাও একটা কারণ।

দ্বিতীয়ত, এখনও এমন অনেক ডিজওর্ডার আছে যা বোঝা যায় না, তাই এই সমস্যা যে কারুর ক্ষেত্রে ঘটতে পারে।

মায়ের গর্ভাবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, শারীরিক সমস্যা, পরিবেশগত কারণ, দূষণও বিকলাঙ্গতার নেপথ্যে অনুঘটক হয়ে উঠতে পারে। গর্ভবতী অবস্থায় ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে মায়েদের। কোথায় যাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন সেটাও একটা ব্যপার।

অর্থোপেডিক ডিভরমিটি বা বিকলাঙ্গতার কারণে হাড়ে যে সব সমস্যা দেখা যায় তার চিকিৎসার সুযোগ আছে। শিশুর জন্মের পরেই সমস্যা চিহ্নিত করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু সম্ভব। সার্জারি, বিশেষ ধরনের জুতো, টেকনিক এই সবের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রক্রিয়া চলে।

কোনও শিশুর বিকলাঙ্গতা ধরা পড়লে প্রথমেই দেখা হয় শরীরের আর কোনও অংশে সমস্যা আছে কি না। তাই পুরো বডি চেকআপ করা হয়। যাদের হাত বা পা সমস্যা আছে তাদের হার্ট থেকে শুরু করে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়।

অনেক সময় হাঁটাচলা শুরু করার পর শিশুর প্রকৃত সমস্যা সামনে আসে। এছাড়া হাড়ে সংক্রমণ, ছোট টিউমার-এগুলো শিশুর এক বছরের আশপাশ বয়সে বোঝা যায়।

বিশেষ কয়েকটা ক্ষেত্রে ছাড়া হাড়ের বিকলাঙ্গতায় চিকিৎসা প্রক্রিয়া সব সময় শিশুর এক মাস বা দু’মাস বয়সের পর শুরু হয়। সার্জারিরও নির্দিষ্ট বয় আছে। তিন বা চার বছর বয়সের পর করলে সুবিধাজনক। যে সব শিশুর বা বাঁকা তাদের চিকিৎসা একমাস বয়সের মধ্যে শুরু হয়।

চিকিৎসার সময় নির্ভর করে সমস্যার ধরনের ওপর। বিকলাঙ্গতায় সার্জারি, চিকিৎসা পদ্ধতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত ও আধুনিক হয়েছে। বলা যায় গত দশ বছরে অনেকটাই বদল এসেছে। যে কোনও অপারেশন এমনি ইঞ্জিকেশনেও ঝুঁকি থাকে। তবে সার্জারি করা হয় শিশুর শারীরিক ত্রুটি মিটিয়ে তাকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। সব কিছুর নির্ধারিত বয়স আছে সেটা যদি ঠিক মতো মেনে চলা হয় তাহলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...