সুপারস্টার দেব হোক বা জিৎ দুজনেই তাঁর পরিচালনায় বহু হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। ‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘বলো না তুমি আমার’, ‘সেদিন দেখা হয়েছিল’, ‘পাগলু ২’, ‘অরুন্ধতী’, ‘রোমিও’ তাঁর হিট ছবিত লিস্ট বেশ লম্বা। তবে শুধু টলিউড না সমানতালে কাজ করেছেন বলিউডেও। বলিউডের বহু ছবিতে সহ-পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন পরিচালক সুজিত মন্ডল। সম্প্রতি জিয়ো বাংলার টলিকথা অনুষ্ঠানে বাংলা কমার্শিয়াল সিনেমার দুনিয়ায় কীভাবে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল তা জানালেন পরিচালক।
প্র: ২৫ নভেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে আপনার ছবি 'তোকে ছাড়া বাঁচব না', ছবিটা নিয়ে কিছু বলুন।
সুজিত মন্ডল: ছবিটা নিয়ে তোমরা যেমন এক্সসাইটেড, আমি সেই তেমনই এক্সসাইটেড। 'তোকে ছাড়া বাঁচব না' রোমান্টিক ছবি। আমার 'সেদিন দেখা হয়েছিল', 'হান্ড্রেড পার্সেন্ট লাভ'-এ যেমন গান, নাচ ছিল এই ছবিতেও তেমনি আছে। ছবির গল্পটা একটা ছেলেকে নিয়ে। যে তার বাবাকেই জীবনের সব খারাপ পরিস্থিতির জন্য দায়ী মনে করেন। কিন্তু একদিন ছেলেটার সঙ্গে একটা মেয়ের দেখা হয়। মেয়েটাই ছেলেটার জীবন বদলে দেয়। তারপর কী হবে? সেটা জানার জন্য ছবিটা দেখতে হবে।
প্র: এখন বাংলা কমার্শিয়াল ছবি আগের মতো চলে না। কেন হচ্ছে এমনটা?
সুজিত মন্ডল: সঠিক কারণটা আমিও জানি না। তবে আমার মনে হয় আমাদের এখানে কমার্শিয়াল ছবি কেউ বানাতে পারে না। এছাড়াও এখন কমার্শিয়াল ছবির জন্য তেমন কোনও অভিনেতাও নেই যারা ভালো নাচবে। দেব কতদিন ধরে নাচ গান করবে। দর্শক ওকে এতদিন দেখেছে। কিন্তু এখন ওর মতো কেউ নেই বা হয়তো ওর জায়গা নেওয়ার মতোও কেউ নেই। তবে জিৎ এখনও চেষ্টা করছে। আমি গ্ৰে ফিল্ম করবো বলেই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে কমার্শিয়াল ছবি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় আমি ছাড়াও অনেক পরিচালক এই ধরনের সিনেমা করতে শুরু করেছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলেছে। তবে এখন দর্শক এখনও একই আছে। না হলে 'পুষ্পা', 'আর আর আর' বাংলা থেকে এত ব্যবসা করতে পারত না।
প্র: আপনি ছিলেন সুপারস্টার দেব-এর কোচ। দেব'দার সেই জার্নির কিছু ঘটনা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন। সুজিত মন্ডল: দেবের বাবা আমার পরিচিত ছিল। ওর বাবাই দেবের ছবি দেখিয়েছিল আমাকে। আমি তখন বম্বেতে অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টরের কাজ করতাম। ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করবে বলেই আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আমি ওকে বলেছিলাম বাংলা ছবির কাজ করার জন্য। আর তারপর বাকিটা ওর চেষ্টা। সেই জন্যই আজ ও দীপক অধিকারী থেকে সুপারস্টার দেব হতে পেরেছে। এতে আমার কোনও ভূমিকা নেই। আমি সাহায্য না করলেও দেব আজ এই জায়গাতে আসতে পারত।
প্র: সুজিতদা আপনার সিনেমা মানেই বিদেশে শ্যুটিং। যা বাংলা সিনেমাকে একটা আলাদা এক্সপিরিয়েন্স দিয়েছিল। সেই নিয়ে একটু বলুন?
সুজিত মন্ডল: বিদেশে শ্যুটিং করে ছিলাম প্রথম 'সাতপাকে বাঁধা' ছবির জন্য। কিন্তু অনেক চেষ্টার পর আমাকে এই সুযোগটা দেওয়া হয়েছিল। কারণ সেই সময় কেউ ভাবতেও পারত না যে বাংলা ছবি বিদেশে শ্যুটিং হতে পারে। শ্রীকান্তদা প্রথম আমাদের উপর বিশ্বাস দেখিয়েছিল। তারপরেই আমরা সুইজারল্যান্ডে ছবির শুটিং শুরু করেছিলাম।
প্র: আপনি 'অরুন্ধতী'র মতো ছবি বানিয়েছেন। যেটা সম্পূর্ণ একটি অন্য ধরনের ছবি। সেই ছবির শ্যুটিংয়ের এক্সপিরিয়েন্স সম্পর্কে কিছু বলুন।
সুজিত মন্ডল: এই ছবি তৈরির ইচ্ছা ছিল শ্রীকান্ত মোহতার। তিনিই চেয়েছিলেন এই ছবিটা আমি পরিচালনা করি। কিন্তু যেহেতু আমরা কোনও গল্প পাইনি তাই রিমেক করতে হয়েছিল। আর ছবির নামও ঠিক হচ্ছিল না বলে আমরা 'অরুন্ধতী' নামটাই রেখেছিলাম। ছবির শ্যুটিং হয়েছিল প্রায় ১৫০ জন জুনিয়র আর্টিস্টদের নিয়ে। এছাড়াও ছবির সেট তৈরি করতেও অনেক টাকা খরচ হয়েছিল।
প্র: আপনি এত নায়ক ও নায়িকার সঙ্গে কাজ করেছেন? আপনার প্রিয় নায়িকা কে?
সুজিত মন্ডল: যখন যার সঙ্গে কাছ করি সেই আমার প্রিয় হয়ে যায়।
প্র: 'পাগলু-৩' কী আসছে?
সুজিত মন্ডল: হ্যাঁ, ইচ্ছা রয়েছে। দেব আর কোয়েল যদি চায় তাহলে নিশ্চয়ই হবে।