তিন বছরে একশো পাঁচটি টেলিফিল্ম পরিচালনা করার রেকর্ড করেছিলেন রেশমি মিত্র

স্বপ্ন ছিল অভিনেত্রী হবেন। কিন্তু তার চেয়েও বড় এক স্বপ্ন ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। তাই বদলে নেন নিজের জায়গাটা। ক্যামেরার সামনে নয়, চলে আসেন ক্যামেরার পিছনে। মানুষ চিনল তাঁকে ‘পরিচালক রেশমি মিত্র’ পরিচয়ে। তাঁর নেশা ক্যামেরা। আর এক নেশাও আছে তাঁর। লেখার নেশা। পরিচালনার পাশাপাশি তাঁর কলমও ছোটে তরতরিয়ে। ছবির দুনিয়ায় জীবন শুরু করার আগে কাজ করেছেন প্রথমসারির সংবাদপত্রে। তাঁর পরবর্তী ছবি 'বড়বাবু' নাট্য সম্রাট শিশিরকুমার ভাদুড়ির জীবন অবলম্বনে নির্মিত হতে চলেছে। সেই ছবি ও নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতা জিয়ো বাংলার ‘টলিকথা’ অনুষ্ঠানে শেয়ার করলেন পরিচালক রেশমি মিত্র।

প্র: আমরা সবাই জানি আপনি একজন পরিচালক। কিন্তু তার পাশাপাশি আপনার অসাধারণ লেখনীর কথা অনেকে জানেন না। ক্লাস ফাইভ থেকে আপনার লেখালেখি শুরু। এরপর যাত্রা পথটা কেমন ছিল?
রেশমি মিত্র: আমার প্রথম লেখা বেরোয় ক্লাস থ্রি-তে পড়ার সময়। তারপর এইট-নাইনে পড়ার সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমার লেখা বেরোনো শুরু হয়েছিল। কিন্তু কলেজে পড়ার সময় বিভিন্ন ছোট-বড় ম্যাগাজিনে আমার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বইমেলাতে প্রতিবছর আমার লেখা ছড়ার বই প্রকাশিত হত।

প্র: আপনার কেরিয়ারের আপস অ্যান্ড ডাউনসগুলোকে কীভাবে ওভারকাম করেছেন?
রেশমি মিত্র: যখনই তুমি উপরে উঠতে চাইবে ডাউন ব্যাপারটা আসবেই। কিন্তু যখন এরকম একটা টাইম আসে। সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করি। যেমন- লকডাউনের সময় আমার একটা ছবিও মুক্তি পায়নি। কিন্তু এখন আমি বম্বেতে হিন্দি ছবিতে কাজ করছি।

প্র: আপনার ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেখান থেকে ক্যামেরার পিছনে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
রেশমি মিত্র: ছোটবেলা থেকে অভিনয়ে করার খুব ইচ্ছে ছিল। আমি যখন ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ি তখন অভিনয়ের সুযোগও পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাবা বলেছিলেন ছবিতে অভিনয় করলে পড়াশোনা হবে না। কিন্তু ক্যামেরার পিছনে কাজ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই আমি কোনও গল্প পড়লে তা ভিজুয়্যালাইজ করতে পারতাম। কোনও ছবি দেখার সময় অভিনয়টা মন দিয়ে দেখতাম। তারপর আমি টেলিফিল্ম করা শুরু করে ছিলাম। তিন বছরে ১০৫টা টেলিফিল্ম করেছিলাম। আমি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলাম এর জন্য। আমার তৈরি করা ৫২টা টেলিফিল্ম টেলিভিশনে দেখানো হয়েছিল। আমার সিরিয়ালে প্রথম অ্যাক্টিং করেছিলেন উত্তম কুমারের ছেলে। সিরিয়ালের প্রযোজনা করেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। আমি কিছুদিন সংবাদপত্রে কাজ করেছি।

প্র: আপনার নতুন ছবির নাম 'বড়বাবু'। শিশির কুমার ভাদুড়ির বায়োপিক। এটা নিয়ে একটু বলুন?
রেশমি মিত্র: ওটা আমার ড্রিম প্রজেক্ট। ছবির শুটিং অক্টোবর মাস থেকে শুরু হবে। থিয়েটারে অনেক কন্ট্রিবিউশন ছিল শিশির বাবু। থিয়েটারকে তিনি বিদেশে নিয়ে গিয়েছিলেন। থিয়েটার করবেন বলে তিনি কখনও ছবিতে অভিনয় করেননি। পরবর্তী প্রজন্ম যারা থিয়েটার নিয়ে পড়তে চান বা রিসার্চ করতে চান তাদের জন্য এই ছবির একটা ভ্যালু রয়েছে।

প্র: আপনার কী মনে হয় বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে বায়োপিক ছবিগুলো কোন স্থানে বিলং করছে?
রেশমি মিত্র: আমার মনে হয় দর্শকদের দেখার চোখটা আরও বড় করতে হবে। বায়োপিক দেখার জন্য একটা মন লাগে। শুধু মাত্র চোখ দিয়ে দেখলেই হয় না।

এবার র‌্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে পরিচালক রেশমি মিত্র।

প্র: পাহাড় না সমুদ্র?
রেশমি মিত্র: সমুদ্র।

প্র: মঞ্চ না সেলুলয়েড?
রেশমি মিত্র: এখন সেলুলয়েড।

প্র: লেখিকা রেশমি মিত্র না পরিচালক রেশমি মিত্র?
রেশমি মিত্র: পরিচালক।

প্র: 'শ্লীলতাহানির পরে' না 'বড়বাবু'?
রেশমি মিত্র: বড়বাবু।

প্র: ঋত্বিক ঘটক নাকি মৃণাল সেন?
রেশমি মিত্র: ঋত্বিক ঘটক।

প্র: ফেলুদা নাকি ব্যোমকেশ?
রেশমি মিত্র: ব্যোমকেশকে ভাল লাগে কিন্তু ফেলুদা খুব কাছের।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...