ক্যামেরার পিছনেই কাজের স্বপ্ন ছিল অভিনেতা দেবপ্রসাদ হালদারের। সেই মতো বিভিন্ন টেলিভিশন প্রজেক্টে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু অভিনেতা তথাগত বন্দোপাধ্যায়ের পরামর্শেই অভিনয় নিয়ে এগিয়ে চলা শুরু করেছিলেন তিনি। আর অভিনয় জীবনের শুরুতে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের '২২ শে শ্রাবণ' ছবিতে অভিনয়ের করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। টলিউডের পাশাপাশি বলিউডের ছবিতেও দেখা গিয়েছে তাকে। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার যে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে তিনি সেই গল্প শেয়ার করেছেন জিয়ো বাংলার টলিকথা অনুষ্ঠানের আড্ডায়।
প্র: 'বাইশে শ্রাবণ' ছবি দিয়ে আপনার যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেখানে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
দেবপ্রসাদ হালদার: যাত্রা শুরু হয়েছিল 'বাইশে শ্রাবণ'-এর আগেই। এই ছবিতে অভিনয় করার আগে আমি টেলিভিশনে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করেছি। সেই সময় রিলে ছবি শ্যুট হত তাই প্রথম দিন থেকেই আমি নার্ভাস থাকতাম। যদিও ওয়ান টেকেই শ্যুট শেষ করেছিলাম।এখন ডিজিটালে শ্যুট হয়। তাই টেনশন কম থাকে।
প্র: আপনার সব সময় ক্যামেরার পিছনেই কাজ করার বেশি ইচ্ছা ছিল, তাহলে কখন সিদ্ধান্ত নিলেন ক্যামেরার সামনে এসে কাজ করার?
দেবপ্রসাদ হালদার: আমি এমনিতেই কম কথা বলি তাই কখনও ভাবিনি যে অভিনেতা হব। আমার সব সময় ক্যামেরার সামনে কাজ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কখনও অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল না। আমি একটা চ্যানেলে ক্যামেরার পিছনে কাজ করেও ছিলাম। আমাকে তথাগত বলেছিলেন যে "তুই শুধু শুধু সময় নষ্ট করছিস। তুই ক্যামেরার সামনে আয়।"
প্র: আপনি কোনও চরিত্র প্লে করার আগে কী প্রিপারেশন নেন?
দেবপ্রসাদ হালদার: সবাই আমাকে এই প্রশ্নটা করে আমি জানি না কী উত্তর দেব। আমি চরিত্র পাওয়ার পর প্রিপারেশন সেভাবে করি না। যখন আমি অভিনয় করছি তখনই ভাবি যে এমন একটা চরিত্র আগে দেখেছি কি না। আর তাছাড়াও সব সময় অবজার্ভ করতে হবে। এই ইন্টারভিউটা দিতে দিতেও আমি অবজার্ভ করছি।
প্র: গড ফাদার ছাড়া ইন্ডাস্ট্রিতে আসলে অপমান ও অসম্মানের শিকার হতে হয়। আপনার সঙ্গেও কী এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে?
দেবপ্রসাদ হালদার: অবশ্যই ঘটেছে এবং অপমান তখন মনে হয়েছিল। কিন্তু এখন বুঝেছি সেই অপমানটা আমাকে একটা টার্গেট দিয়েছিল এগিয়ে চলার। আজ হয়তো সেই কারণেই আমি কিছু শিখতে পেরেছি।
প্র: অনেক অভিনেতার মুখে শুনেছি যে প্রথমে তাদের একটা চরিত্রের জন্য কাস্ট করার পর আবার অন্য জনকে সেই চরিত্র দেওয়া হয়েছে। এমনটা কী আপনার সঙ্গে হয়েছে?
দেবপ্রসাদ হালদার: আমাকে এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু তারপর কখনও ভেঙে পড়িনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। আর এখনও তাই করে যাচ্ছি।
প্র: ইদানিং ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন অভিনেত্রীরা অভিযোগ করছেন যে ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু মানুষ তাদের সঙ্গে অসংলগ্ন ব্যবহার করছেন। তারা সেই প্রমাণ দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ক্রিনশর্ট শেয়ার করে। আপনি এই নিয়ে কী বলতে চান?
দেবপ্রসাদ হালদার: যেটা হচ্ছে খুব খারাপ হচ্ছে। কিন্তু যার এই কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে পাঁচ বছর পর কেন অভিযোগ করছে। যখন ঘটনাটা ঘটছে তখনই বলা উচিত।
প্র: আপনার সবচেয়ে কাছের তিনটে চরিত্র কী কী?
দেবপ্রসাদ হালদার: 'ইকির মিকির', 'কেবিন গার্ড'-এর মতো প্রজেক্টে আমি অভিনয় করেছিলাম। তবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল 'বার্নিং বাটার ফ্লাই' ও 'গুল্মো'র চরিত্রটা।
প্র: ইন্ডাস্ট্রির বাইরে ব্যক্তি দেবপ্রসাদ হালদার ঠিক কেমন?
দেবপ্রসাদ হালদার: প্রচন্ড রাফ, মুখচোরা। আমি চেষ্টা করি ইন্ডাস্ট্রির সকলের সঙ্গে আড্ডা না দেওয়ার। কারণ আড্ডা দিলে হয়তো আমি বলে ফেলব অনেক সত্যি কথা।
প্র: ফ্যামেলির সঙ্গে কীভাবে সময় কাটাও?
দেবপ্রসাদ হালদার: ঐ কাজের পর যতটুকু সময় পাই ততটুকু সময় কাটাতে পারি।
এবার র্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে কোয়েশ্চেনের উত্তর দেবেন অভিনেতা দেবপ্রসাদ হালদার।
প্র: বসন্ত না শরৎ?
দেবপ্রসাদ হালদার: বসন্ত।
প্র: ক্ষণিকের পুরস্কার না ক্ষণিকের তিরস্কার?
দেবপ্রসাদ হালদার: ক্ষণিকের তিরস্কার।
প্র: মুর্খ বন্ধু না শিক্ষিত শত্রু?
দেবপ্রসাদ হালদার: শিক্ষিত শত্রু।
প্র: সৃজিত মুখোপাধ্যায় না কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়?
দেবপ্রসাদ হালদার: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
প্র: অনির্বাণ ভট্টাচার্য না অনির্বাণ চক্রবর্তী?
দেবপ্রসাদ হালদার: অনির্বাণ চক্রবর্তী।
প্র: সিরিজ না সিনেমা?
দেবপ্রসাদ হালদার: দুটোই।
প্র: ওটিটি না হল?
দেবপ্রসাদ হালদার: দুটোই।
প্র: মিমি না নুসরাত?
দেবপ্রসাদ হালদার: কেউ না।
প্র: কোনটা বেশি মজার প্রথম প্রেম না প্রথম সিগারেট?
দেবপ্রসাদ হালদার: প্রথম সিগারেট।
প্র: রোমান্টিক হিসেবে কত নম্বর দেবে নিজেকে?
দেবপ্রসাদ হালদার: শূন্য।