রূপকথা ও আজকের সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায় তৈরি করেছেন 'ভটভটি' ছবিটি। ভালোবাসা ও ঘৃণা এই দুটোই মানুষের জীবনের অঙ্গ। এই ছবিতে এই দুই বিষয়কে এক সঙ্গে দেখিয়েছেন পরিচালক। কোভিড পরিস্থিতির জন্য প্রায় দুই ছবির মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই ছবি। আর ছবির বিষয় নিয়ে আড্ডা দিতেই জিয়ো বাংলার টলিকথা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে হয়েছিলেন পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, রজতাভ দত্ত, এবং অনির্বাণ চক্রবর্তী।
প্র: 'ভটভটি'র গল্প সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। এখানে একদিকে ভালোবাসার গল্পের পাশাপাশি একটি ঘৃণার গল্প দেখানো হয়েছে। এর সমকালীন তাৎপর্যতা কোথায়?
তথাগত মুখোপাধ্যায়: আসলে সকলের জীবনেই ভালোবাসা আর ঘৃণা দুটোই পাশাপাশি সহবস্থান করে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে এটা সত্যি। আমরা 'ভটভটি'তে এই বিষয়টাকে দেখিয়েছি।
প্র: রনিদা, এই ছবিতে যে আপনি বাঘার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সেটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
রজতাভ দত্ত: না, ছবিতে বাঘা অর্নিবাণ চক্রবর্তী। আমি ডোমের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। তবে ডোমের চরিত্রে অভিনয় করে অনেক সাজগোজ করার সুযোগ পেয়েছি আমি। চরিত্রের জন্য আমার সারা গায়ে রঙ করা হয়েছিল। মাথায় চুল পরানো হয়েছে। এছাড়াও স্পেশাল এফেক্টে সারা গায়ে অনেক কাটা দাগ করা হয়েছে।
প্র: তথাগতদার ছবিতে অভিনেতাদের নতুন ভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। অর্নিবাণদা আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল শুটিং নিয়ে?
অর্নিবাণ চক্রবর্তী: ও আমাকে কিছু জানা কিছু অজানা সিচুয়েশনের মধ্যে ফেলেছিল। একবার একটা দৃশ্যের শুটিং চলাকালীন একটা স্টেশনের সামনে প্রচুর জল জমে ছিল। সেখানে প্রথমে আমাকে বলা হয়েছিল প্ল্যাটফর্মের সামনে দৌড়ে গিয়ে দাঁড়াতে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আমি দৌড়োনোর সময় স্লিপ করে পড়ে যাচ্ছিলাম। ওকে এই কথাটা বলতে ও বললো স্লিপ করে পড়ে গেলে আবার উঠে দৌড়াতে। কিন্তু থামতে বারণ করেছিল। তাই সেই ভাবেই শটটা দিতে হয়েছিল আমাকে।
প্র: দেবলীনাদি ছবিতে আপনার চরিত্রটা অভিনয় করার সময় কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
দেবলীনা দত্ত: ছবিতে এই চরিত্রে অভিনয় করার জন্য আমাকে গলার স্বরও পরিবর্তন করতে হয়েছে। আমার প্রত্যেকটা ছবি করার পরেই মনে হয় যে আমার ডাবিং খারাপ হয়েছে। তাই আমাকে আবার ডাবিং করতে হয়েছে। একবার আমি রনিদার চরিত্রের ডাবিংও করে ফেলেছিলাম।
প্র: অনির্বাণদাকে দর্শকরা আগেও অন্য ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছে। এই চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
অনির্বাণ চক্রবর্তী: এখন 'এক্কেন বাবু' ও জটায়ু ছাড়াও বেশি কিছু চরিত্রের জন্য পরিচালকরা আমাকে সিলেক্ট করে। কিন্তু তার অনেক আগেই তথাগত আমাকে 'ভটভটি'র বাঘার চরিত্রটা করবার কথা বলেছিল। আর এই ধরনের চরিত্র আমি আগে কখনও করিনি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল চরিত্রটার কোনও সংলাপ নেই। আমরা অভিনেতা হিসেবে এই চ্যালেঞ্জগুলোই নিতে চাই।
প্র: রনিদা আপনার এক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে করতে আর ভালো লাগে না। তাই পরিচালক রবি ওঝাকেও আপনি বলেছিলেন 'অতুল' চরিত্রটা অন্য কাউকে অভিনয় করতে দেওয়ার কথা।
রজতাভ দত্ত: না, এই দুটোর মধ্যে একটু তফাৎ রয়েছে। আসলে 'এক আকাশের নীচে' ছবিতে অভিনয় করার সময় প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর একটা সংলাপ বলে যেতে হয়েছিল আমাকে। কিন্তু অন্যদিকে আমি প্রায় ১৭ বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই মনে হয়েছিল আমার যদি চরিত্রটায় অভিনয় করতে ভাল না লাগে তাহলে দর্শকদের কীভাবে ভাল লাগবে। আমার কাজ হবে চরিত্রটাকে অন্য ভাবে দর্শকদের তুলে ধরার।
প্র: সেই 'এক আকাশের নীচে'তে নন্দীর চরিত্রে দেখা গিয়েছিল দেবলীনাদি'কে। এখনও একই রকম রয়েছ কীভাবে?
দেবলীনা দত্ত: সেই সময় আমি আরও রোগা ছিলাম। তাই সবাই আমাকে সরু বলে ডাকতেন। তারপর অনেক কষ্ট করে মোটা হয়েছি আমি।
প্র: শুটিংয়ের সময় কী কী মজার ঘটনা ঘটেছে। শেয়ার করুন আমাদের সঙ্গে?
রজতাভ দত্ত: পুরোটাই মজার ছিল।
দেবলীনা দত্ত: আমার প্রচুর মজার অভিজ্ঞতা রয়েছে কারণ আমি অভিনয় ছাড়াও ছবিতে অন্য কাজ করেছি। মেকআপ করেছি, চুল বেঁধে দিয়েছি। তাই ভবিষ্যতে অভিনয় ছাড়াও এই সব কাজগুলো করতে পারব আমি।
প্র: 'ভটভটি'তে আমরা ভালো গ্ৰাফিক্সের কাজ দেখতে পেয়েছি। জলের তলায় শুট হয়েছে।
তথাগত মুখোপাধ্যায়: জলের তলায় শুট আমরা বম্বেতে করেছিলাম। বম্বেতে শুধু ঋষভ, বিবৃতি ও অন্য একজন অভিনেত্রী গিয়েছিল। জলের তলায় তিরিশ ফিট নিচে শুটিং চলেছিল। তার আগে দুই দিন ট্রেনিং চলেছিল।