মেনোপজের পর জয়েন্ট পেইন কেন হয়? মেনোপজের জয়েন্ট পেইন থেকে কি আর্থারাইটিজের সমস্যা দেখা দিতে পারে? এই সময়ে জয়েন্টের ব্যথা এড়াতে কী করা উচিত, জানালেন পেইন ম্যানেজমেন্টের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মনীশ দে (Dr. Manish De, Pain Management Doctor )
ডাঃ মনীশ দে জানিয়েছেন, মেনোপজের কারণে জয়েন্ট পেইন খুব কমন। ৪৫-৫৫ বছরের ৫০ শতাংশের বেশি মহিলারা এই ধরনের সমস্যায় পড়েন। জয়েন্ট পেইন বিভিন্ন কারণে হতে পারে। বয়স জনিত কারণে মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেন কমে যাওয়ার কারণে হাড় ও জয়েন্টে যে কার্টিলেজ থাকে তাতে ক্ষয় শুরু হয় তার জন্য জয়েন্ট পেইন দেখা যায়। সেই ধরনের ব্যথা যদি হয় তাহলে অবশ্যই ব্যথার বিশেষজ্ঞকে দেখানো উচিত। কিছু পরীক্ষার দ্বারা বোঝা যায় যে এই ব্যথা মেনোপজ থেকেও হতে পারে আবার বাতের ব্যথা থেকেও হতে পারে।
মেনোপজের পরেই নানারকম উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন ঘুম কম আসা, দুর্বল ভাব, ক্লান্তি, ওজন বেড়ে যাওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যথা। জয়েন্ট বা মাংস পেশিতে। তার জন্য সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লাইফ স্টাইলে বদল। ডায়েট, ওয়াকিং আর এক্সারসাইজ, মেডিসিন আর ইনজেকশন। তেল মশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ক্যালসিয়াম, আয়রন আছে এমন খাবার খেতে হবে। সারা সপ্তাহে দেড়শো ঘন্টার মতো হাঁটতে হবে।
ডায়েট চার্টে ব্রেকফাস্ট খুব ভাল ভাবে করা উচিত। লাঞ্চ যেন খুব হেভি না হয় আর দিনের শেষে ডিনার হবে খুব কম। তাহলে হজম ও পরিপাক ঠিক হবে। খাবার সময় আর পরিমান দুই খুব গুরুত্বপূর্ণ। মেনোপজের পর শাক সবজি, দুধ, হলুদ বা আদা জাতীয় খাবার খেতে হবে। দুধ না খেতে পারলে দই বা ছানাও খাওয়া যায়।
মাছের তেল খুব জরুরি। মেনোপজের সময় লাইফ স্টাইল যদি ঠিক ভাবে মেনে না চলা হয় তাহলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পরবর্তীকালে জয়েন্ট পেইন বড় আকার নিতে পারে। বাড়তি ওজনের জেরে অস্টিও আর্থারাইটিস হতে পারে। শুরু থেকেই খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ এবং শারীরিক কসরত করা গেলে এই ধরনের সমস্যা এড়িয়ে চলা যায়। জয়েন্টের ব্যথার ধরন দেখে চিকিৎসা হয়। কোন জায়গায়, কবে শুরু হচ্ছে, কোন দিকে যাচ্ছে সেটা দেখে নির্ণয় করা হয় তা তাৎক্ষণিক ব্যথা নাকি অনেক দিনের ব্যথা। তারপর টেস্ট হয়। ব্যথার উৎস জানা হয়। মেনোপজের পেশেন্টর জন্য বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট করা হয়। এই সময় অস্টিওপরোসিস বলে একটি রোগ হয় যাতে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। একটু পড়ে গেলেই হাড় ভেঙে যায় সেই কারণে। সেটা আটকানোর জন্য বোন ডেনসিটি টেস্ট করা হয়। মেনোপজের জয়েন্ট পেইন থেকে রেহাই পেতে কিছু কিছু ঘরোয়া উপায় আছে। যারা হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন তাঁরা যত কম হাঁটু ভাঁজ করবেন তত ভাল। সিঁড়ি ওঠা নামা, বাবু হয়ে মেঝেতে বসা, হাঁটুতে চাপ পড়ে এমন কাজ এড়িয়ে চলতে হবে। কোমরের ক্ষেত্রে নীচু হয়ে কাজ করা। কাঁধের ব্যথার জন্য ভারি জিনিস বহন থেকে বিরত থাকতে হবে। বসার ধরন বদল, টানা এক জায়গায় বসে না থেকে বিরতি নেওয়া এসব বদলে ব্যথা খানিকটা কমতে পারে।