পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যা কেন হয় ?

আজকাল বহু মহিলাই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যায় ভুগছে। সাধারণত মহিলাদের শরীরে পুরুষ হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়। এটি আসলে একটি হরমোন জনিত সমস্যা। ১৮ বছর থেকে ৪৪ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে প্রায় কুড়ি শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। পুরুষের মতো মেয়েদের শরীরেও অ্যান্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোন থাকে।

কিন্তু অনেক সময় এই হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়।‌ যার ফলে ডিম্বাশয়ের আশে পাশে অসংখ্য ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়ে এই গুলিকেই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বলে। সঠিক সময় এই রোগের চিকিৎসা না করালে ভবিষ্যতে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষত কোনো পরিশ্রমের কাজ না করা ফলে এই রোগ হতে পারে। এছাড়াও এই রোগ জিনগত কারণেও হতে পারে। তবে এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় কী?

এই রোগ সম্পর্কে বিশদে জানালেন ডা: বি.ডি মুখোপাধ্যায়

ডাঃ বি.ডি মুখোপাধ্যায়ের মতে, অনেক সময় মেয়েরা হঠাৎ মোটা হতে শুরু করে। পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যা দেখা দিলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। বহু মেয়েদের মাসিকের সময় নানান সমস্যা হয়ে যেমন- অনেক সময় মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, অসময় মাসিক দেখা যায়, বারবার মাসিক হতে পারে। এই সবকিছুই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের সমস্যা থাকলে হয়ে। এছাড়াও শরীরের নানান জায়গায় লোম দেখা যেতে পারে। এই ধরনের ঘটনা তখনই হয়ে যখন শরীরে পুরুষ হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এইধরনের সমস্যা হলে মহিলাদের পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

সাধারণত অত্যাধিক জাঙ্কফুড খাওয়া ও বেশি পরিশ্রম না করলেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো মহিলার যদি পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকে তাহলে তার শরীরের ব্রোণ অথবা ফুসকুড়ি হয়। সুতরাং এটিও একটি উপসর্গ। তবে এই রোগ আক্রান্ত হলে অনেক সময় মহিলাদের মা হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হ্তে পারে। তবে সিস্ট মানেই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নয়। এই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে মানুষের দেহে কোলেস্টরল বেড়ে যায়। এখন খুব কম বয়সী মহিলাদের মধ্যেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে।

তাহলে এই রোগ এড়িয়ে চলার উপায় কী?

ডাঃ বি.ডি মুখোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন, এখনকার দিনে কমবয়সী মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পরিশ্রমের অভাব। কম পরিশ্রম করার জন্যেই মহিলা সবচেয়ে বেশি এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সব বয়সের মহিলাদেরই যোগ ব্যায়াম কিংবা অন্য কোনো পরিশ্রমের কাজ করতে হবে তাহলেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। জাঙ্কফুড খাওয়া কমিয়ে দিতে করতে হবে। এর বদলে শাক-সবজি ও ফল খেতে হবে তাহলেই এই পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে সমস্যা তৈরি হবে না।

তবে এই রোগের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা হচ্ছে হরমোনাল ট্রিটমেন্ট। এছাড়াও ওষুধের মাধ্যমেই এই রোগ থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। যাদের মাসিক সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যে হরমোনাল ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন। কিন্তু ম্যাটফরমিয়াম নামক একটি ওষুধ প্রয়োগ করা হয় এই রোগের চিকিৎসার জন্যে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...