গায়ে হাত না তুলে শিশুকে কী ভাবে শাসন করবেন? অভিভাবকদের কথায় কথায় মারধরের নেপথ্যে কোন মানসিকতা কাজ করে? অতিরিক্ত মারধর কীভাবে শিশুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে? পরামর্শ দিলেন পেরেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষ (Payel Ghosh, Parenting Consultant)
হাইলাইটসঃ
১। অতিরিক্ত মারধর কীভাবে শিশুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে?
২। শাসন ছাড়া অভিভাবকরা শিশুদেরকে শাসন করবেন কী ভাবে?
৩। অভিভাবকরা শিশুদেরকে অত্যাধিক মারধর করেন কেন?
অতিরিক্ত মারধর কীভাবে শিশুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে?
শাস্তি দেওয়া ও সংশোধন এই দুটি শব্দের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শাস্তি কথাটির মধ্যেই মারধরের একটি প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু সংশোধন করা শব্দটির মধ্যে সেই সমস্যাটির সমাধান করার কথা উল্লেখ করা হয়। পারস্পারিক কথা বলার মাধ্যমে মানসিকভাবে সমস্যার সমাধান ঘটানো হয়।
মারধর করে শিশুকে শাসন করা কখনওই ভালো পেরেন্টিং এর উদাহরণ নয়। মারধর এক অসম শক্তির প্রকাশ। ছোট শিশুকে মারধর করা হয়, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে কখনওই মারধর করা হয়না।
অনেক মানুষের মনে এই ধারণা থাকে যে, পূর্বে মারধরের মাধ্যমে শিশুদেরকে শাসন করা হতো। কিন্তু এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, অত্যাধিক মারধর করার কারণে শিশুটি সেই বিশেষ বিষয়টিকে নিয়ে ভয় পেয়েছে ও সমস্যার সমাধান না করে পিছিয়ে এসেছে।
মারধর ছাড়া অভিভাবকরা শিশুদেরকে শাসন করবেন কী ভাবে?
বিষয়টিকে মূলত কিছু ভাগে ভাগ করা যেতে পারে -
১। প্রথমত, শিশুটি সেই ভুল করছে কেন, সেই কারণটিকে চিহ্নিত করতে হবে।
২। শিশুটিকে একটি স্বাভাবিক জীবন দিতে হবে।
৩। সমস্যা সমাধানে লজিক কনসিকোয়েন্স অবস্থায় বাচ্চাদেরকে রাখতে হবে।
৪। বাচ্চাকে কথা বুঝিয়ে বলতে হবে।
অভিভাবকরা শিশুদেরকে অত্যাধিক মারধর করেন কেন?
১। অনেক অভিভাবকরাই নিজেদের জীবন নিয়ে সমস্যা ও ডিপ্রেশনে ভোগেন। তখন নিজের মানসিক পরিস্থিতি সঠিক করার জন্য এবং নেগেটিভ ধারণা রিলিজ করার জন্য শিশুটিকে মারধর করেন তারা।
২। অভিভাবকরা নিজেরাও ছোটবেলা থেকে মারধরের মাধ্যমে বড়ো হয়েছেন, তাই নিজের শিশুকেও সেই পদ্ধতিতেই শাসন করতে চান।
ছেলেকে শাসন করার জন্য অভিভাবকদের কোন কোন নিয়ম মেনে চলা উচিত?
১। বাচ্চাদেরকে শাসন করার সময় মাথায় রাখতে হবে, যে কারণে জন্য শিশুটিকে শাসন করা হচ্ছে, শাসনের সময় বিষয়টি সেই কারণের মধ্যেই যেন সীমাবদ্ধ থাকে। পুরাতন কোন ঘটনা টেনে আনা উচিত নয়।
২। শিশুকে শাসন করার সময় সঠিক ভাষা প্রয়োগ করতে হবে। অকথ্য ভাষা বাচ্চাদের প্রতি প্রয়োগ করা যাবেনা।
৩। বাচ্চাদেরকে শাসন করার সময় মারধর যাবে না।
৪। বাচ্চাদের নিয়মিত খেলাধুলা, পড়াশোনা, খাওয়া-দাওয়া, অর্থাৎ ব্যালেন্স লাইফ দেওয়া।
বাচ্চাদেরকে মোবাইল থেকে দূরে রাখবেন কীভাবে?
বাচ্চাদেরকে মোবাইল থেকে দূরে রাখার জন্য প্রথমে অভিভাবকদের মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে। বাচ্চারা বড়োদের অনুকরণ করে। তাই বাচ্চাটির সামনে যেমন উদাহরণ থাকবে, সেই অনুযায়ী বাচ্চাটি শিখবে। এছাড়াও, ফোনের বদলে বাচ্চাটিকে অন্যান্য আউটডোর গেমের প্রতি আকর্ষণ করা জরুরি।