মমতাজ এবার বাইশ গজের আসরে!

ম্যাজিশিয়ানের বাড়িতে জন্ম হলেও তিনি অভিনেত্রী হিসেবেই বেশি পরিচিত। সঙ্গে আছে অ্যাথলেটিক্স, বক্সিং, নাচ আর অবশ্যই ম্যাজিক। তিনি মমতাজ সরকার। বিরশা দাসগুপ্তের '০৩৩' ছবি দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু। বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি, দক্ষিণী ছবিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। চলতি বছরেই মুক্তি পাবে মমতাজের অভিনীত হিন্দি ছবি 'সাবাশ মিঠু'। যা নিয়ে দর্শকদের মধ্যেও যথেষ্ঠ সাড়া ফেলেছে। সম্প্রতি জিয়ো বাংলার 'আড্ডা উইথ অপ্সরা' অনুষ্ঠানে এসে নিজের জীবনের গল্প তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী।

প্র: তুমি 'সাবাশ মিঠু' ছবিটিতে অভিনয় করেছ। এই বিষয়ে নিয়ে তুমি কী বলবে?
মমতাজ: আমি যে এই ছবিতে অভিনয় করছি সেটা এখন প্রায় সবাই জেনে গিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে নিয়ে  আমার কথা বলা বারণ রয়েছে। তবু মানুষ ঠিক জেনে গিয়েছে। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার মিতালী রাজের জীবনের উপর নির্মিত এই ছবিতে আমিও একজন ক্রিকেটারের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। ১৫ জুলাই ছবিটা রিলিজ হতে চলেছে। এবার দর্শকরা বলবে কেমন হয়েছে ছবিটা।

প্র: তোমার প্রত্যেকটি ছবিতেই তুমি নতুন নতুন চরিত্রে অভিনয় করেছ। আমরা সকলেই অপেক্ষা করছি 'সাবাশ মিঠু' ছবিটিতে তোমার অভিনয় দেখার জন্য।
মমতাজ: এটি একদম সত্যি। আমার প্রথম হিন্দি ছবি ছিল 'শালা খারুশ'। সেটাও একটা স্পোর্টস ফিল্ম ছিল। যদিও ওই ছবিটার গল্প ছিল বক্সিং নিয়ে। আমি নিজেও একজন বক্সার। তাই আমাকে আলাদা ভাবে কিছু শিখতে হয়নি। আমার ছবির চরিত্রটিও খুব ভালো লেগেছিল। তারপর ছোট ছোট শর্ট ফিল্ম করেছি। তবে আমি এখনও  প্রায় সব ধরনের খেলাই শিখে ফেলেছি। 'সাবাশ মিঠু'র জন্যেও অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে। আমি যার চরিত্রে অভিনয় করছি তিনিও খুব লম্বা তাই তার মতো বল করতে গিয়ে আমি দিনে রাতে তারা দেখেছি।

প্র: তুমি একজন অ্যাথলিট, ট্রেন বক্সার এছাড়াও তুমি ড্যান্সার। 'ল' নিয়ে পড়াশুনা করার পর তুমি কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে এলে কীভাবে?
মমতাজ: এটা খুবই কমন প্রশ্ন। ম্যাজিশিয়ান ঘরানার মেয়ে হয়ে ম্যাজিক ছেড়ে অ্যাক্টিং কেন? কিন্তু আমি সবাইকে বলি, যে আমি ও আমার তিন বোনই ম্যাজিক করি। বিশেষ করে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যখন শো থাকে তখন আমাদের তিনজনকে ম্যাজিক করতে হয়ে। আমার বড়দি মনিকা এক মাত্র ম্যাজিককে কেরিয়ারের হিসেবে বেছে নিয়েছে। ও আমাদের পরিবারের নবম প্রজন্ম যে ম্যাজিককে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। বাবা যখন মঞ্চে ম্যাজিক করছে সেটাও একটা অভিনয়। ম্যাজিশিয়ানের অভিনয়। সেরকম আমিও যখন পর্দায় কোনও চরিত্রে অভিনয় করছি তখনও সেটা দর্শকের ম্যাজিক মনে হতে পারে। তাই আমি যেটা করছি সেটা হল সিনেমা ম্যাজিক। আর 'ল' নিয়ে আমি পড়ার পাশাপাশি পাঁচ বছর কাজও করেছি। আমার স্যার আমাকে বলেছিল, "তোমার যখন বয়স হয়ে যাবে তখনই তুমি এখানে আসবে।" তবে আমি এখনও বন্ধু-বান্ধবদের এই বিষয়ে সাহায্য করি। তবে আমি কখনও ভাবিনি আমি অভিনেত্রী হব। কিন্তু বক্সিং থেকে অভিনয় জগতে এসে ছিলাম হঠাৎ করে। একটা মিউজিক ভিডিয়োতে কাজ করার জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে একজন বক্সারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমি। তারপর পরেই আমি একটি ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তবে '০৩৩' ছবিটিতে করার পরে অভিনয়কেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম।

প্র: তোমার জার্নিটা কেমন ছিল?
মমতাজ: ইন্ডাস্ট্রিতে ১৬ বছর অভিনয় করার পর আমি এখনও বলবো যে স্ট্রাগল করছি। কারণ যদি তুমি সত্যিই এই ব্যাপারটা নিয়ে সিরিয়াস থাকো তাহলে সেটা অনেক বড়ো স্ট্রাগল। হ্যাঁ, তুমি লাকিলি চান্স পেয়ে যেতে পারো। কিন্তু তুমি না খাটলে তুমি সারভাইভ করতে পারবে না।

প্র: এখন দর্শকদের ওয়েব সিরিজ নিয়ে উৎসাহ বেড়েছে। তুমিও কী তাই জন্যে ওয়েব সিরিজের কাজ করতে চাও?
মমতাজ: আমি বাংলা ছবির পাশাপাশি হিন্দি, তামিল, তেলেগু ছবি করেছি। ইন্টারন্যাশনাল ছবিতেও হয়তো আমাকে কাজ করতে দেখা যাবে কিছু দিনের মধ্যে। কিন্তু ওয়েব সিরিজ দর্শকদের মধ্যে অনেক দিন আগেই আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে আমি যেখানে ভালো কাজ পাবো সেখানেই কাজ করতে রাজি।

প্র: তুমি একজন ডগ লাভার। বাড়ি ফিরে তোমার তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে কেমন লাগে?
মমতাজ: আমি শুধু ডগ লাভার না আমি একজন অ্যানিমেল লাভার। তবে এটা হওয়াও স্বাভাবিক কারণ সবার বাড়িতে কুকুর, বেড়াল পোষা হয়। আর আমি ছোটবেলা থেকেই বাঘ, সিংহ, হাতি দেখে বড় হয়েছি। তাই আমার পরিবারের সকলেই অ্যানিমেল লাভার। কিন্তু তখন তারা যখন ছেড়ে চলে যায় তখন অনেক কষ্ট হয়ে।

এবার অভিনেত্রী মমতাজ সরকার জবাব দেবেন কিছু ফাস্ট কোয়েশ্চেনের।

প্র: তোমার ডাক নাম কি?
মমতাজ: বাড়িতে সবাই আমাকে ‘মমতাজ’ বলেই ডাকে। শুধু মাত্র বাবা আমাকে ‘আহ্লাদী’ বলে ডাকে।

প্র: তোমার বাড়িতে যে পোষ্যরা রয়েছেন তাদের নাম কী?
মমতাজ: তিনটে কুকুরের নাম গুপি, বাঘা, পুচকি অ্যান্ড একটা কাঠবেড়ালি রয়েছে যার নাম সুড়সুড়ি।

প্র: তোমার কী কী ট্যাটু কোথায় কোথায় করা রয়েছে?
মমতাজ: আমার হাতে, পিঠে, কোমরে আর পায়ে একটা ট্যাটু রয়েছে।

প্র: চা নাকি কফি?
মমতাজ: ডিপেন্ড করছে আমার মুডের উপর।

প্র: নাইট আউট না আর্লি-রাইজার?
মমতাজ: শুটিং থাকলে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠি। আর নাইট-আউট কাজের জন্যেই করতে হয়।

প্র: তোমার প্রিয় ক্যুইজিন কী?
মমতাজ: যা আমার ভাল লাগবে তাই খাই। সেভাবে কোনও প্রিয় খাবার নেই। তবে বাঙালি খাবার সবচেয়ে বেশি পছন্দের।

প্র: মুভি না ওয়েব সিরিজ?
মমতাজ: মুভিজ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...