ছোট্ট এক নস্যির কৌটো। তার মধ্যেই যত ম্যাজিক! সদ্য মুক্তি পেয়েছে সপরিবারে দেখার মতো মজার ছবির 'নস্যির কৌটো'। নস্যি তার দস্যিপনা দেখিয়েছে শুটিং সেটেও। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতা? ‘টলিকথা’র আসরে নস্যির দস্যি গল্পে মুখোমুখি টিম 'নস্যির কৌটো' রূপসা মুখোপাধ্যায়, অভিষেক সিং এবং পরিচালক রাজীব ঘোষ। তাঁদের জমজমাট আড্ডা দেখতে ক্লিক করুন ভিডিয়োতে।
প্র: উৎসব তো চলছেই। দুর্গাপুজো, কালিপুজো পর এবার জগদ্ধাত্রী পুজো। কি প্ল্যান রয়েছে এই পুজোয়?
রাজীব ঘোষ: জগদ্ধাত্রী পুজোর সেলেব্রেশন মানে আমার মাসির বাড়িতে পুজো হয়, চন্দননগরে। প্রত্যেক বছর প্ল্যান থাকে ওখানে যাওয়ার। এবারেও তাই। তাছাড়া আমাদের পাড়াতেও পুজো করা হয়।
রূপসা মুখোপাধ্যায়: জগদ্ধাত্রী পুজোয় আলাদা করে আনার কোন প্ল্যান নেই। কিন্তু আমি এবছরের দুর্গাপুজোয় ছিলাম না। তো সেইভাবে কোনো পুজোই ভালোভাবে কাটাতে পারিনি। প্ল্যান করছি ফ্যামিলিদের সাথে সময় কাটাবার আর বন্ধুদের সাথে।
অভিষেক সিং: আমি তো রূপসাকে ইনভাইট করেছি। দেখি কি হয়।
প্র: তোমাদের এই ছবি 'নস্যির কৌটো' ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়ে গেছে বড় পর্দায়। রাজীব দার থেকে জানতে চাইব কি ভাবনা চিন্তা ছিল এই ছবির পেছনে?
রাজীব ঘোষ: আমি ছোটবেলা থেকেই গল্পের বই পড়ে বড় হয়েছি। যখন শীর্ষেন্দুর গল্প যখন পড়তাম ওই যে ধারাটা আমায় খুব টাচ করতো। যেটাকে বলে একটু ভৌতিক একটু হাস্য। একটা মিশ্রণ। সেইজন্য এই ছবির প্ল্যানিং, দস্যিপনা।
প্র: যেহেতু তুমি বই পড়ে ভৌতিক, কমেডি ব্যাপারটা পেয়েছো, ওখান থেকেই কি স্ক্রিপটের হিউমর যেটা লাগে লেখার জন্য সেটা কি ওখান থেকেই লেখা?
রাজীব ঘোষ: হ্যাঁ। ওখান থেকেই তারপর আশে পাশের ঘটনা থেকে নেওয়া। ছোটবেলায় দাদু-জ্যাঠাকে দেখেছি নস্যি খেতে নস্যির কৌটো থেকে। তো সেখান থেকেই আইডিয়া আসে। এবার ওখান থেকে তারপর বিভিন্ন গল্প ঘটনা ত্যেকে স্ক্রিপ্টটা তৈরী হয়েছে।
প্র: দাদুর স্মৃতি হিসেবে আমরা অনেক কিছুই ব্যবহার করতে পারি যেমন লাঠি, ছাতা। কিন্তু নস্যির কৌটোই কেন বেছে নিলে?
রাজীব ঘোষ: নস্যির মধ্যে একটা ইউনিকনেস রয়েছে। এখনকার জেনারেশন কিন্তু জানেনা এই নস্যির ব্যাপারটা। হয়েতো দেখেনি। আমি ছোটবেলায় নস্যি নিয়েছি। তো এই নস্যির মধ্যে একটা জমিদারি ব্যাপারও আছে।
প্র: ছবি তো মুক্তি পেয়েই গেছে। কেমন রেসপন্স পাচ্ছ দর্শকদের কাছ থেকে?
রাজীব ঘোষ: ভালোই। এটাতে তো আর ওই লেভেলের মেথড বা কাস্টিং নেই। এইগুলো স্লো র স্টেডি মেথডে যাচ্ছে। লোকদের ভালো লাগছে ছবিটা। আশাকরি ছবিটা অনেকদূর যাবে।
প্র: রূপসা কো-এক্টর হিসেবে তো অভিষেককে প্রথমে পেয়েছেলে। কিন্তু হঠাৎ করে যখন ওর ভেতরে নস্যির কৌটোর জাদুটা ঝলকায়। তখন তোমার কি প্রতিক্রিয়া ছিল?
রূপসা মুখোপাধ্যায়: আমার কোনো রিঅ্যাকশন ছিল না। রিমলির ছিল। 'নস্যির কৌটো'তে আমার চরিত্রের নাম রিমলি। রিমলি হচ্ছে প্রচন্ড পসেসিভ। যখন শোনে যে এরকম দাদু হয়ে গেছে, কান্নাকাটি করে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। পরে শট নেওয়ার পর এইগুলো নিয়ে হাসাহাসি করতাম। নস্যির কৌটো আসলে একটা কমেডি-লাইট ছবি। যেটা দেখে দর্শকরা হাসতে হাসতে বেরোবে।
প্র: অভিষেকের কোন নায়িকাকে বেশি ভালো লেগেছে? নাতনিকে নাকি ঠাকুমাকে?
অভিষেক সিং: লাবনী দির সাথে তো প্রথমবার কাজ করেছি। তাই খুবই কমফোর্টেবল, ভালো লাগলো কাজ করে। রূপসার সাথে এটা তৃতীয় ছবি শুট করছি। তো ওকেই বেশি ভালো লেগেছে।
প্র: তোমরা দুজনে অনেকটা সময় একসাথে কাজ করেছো। অন স্ক্রিন কেমিস্ট্রি যেমন ভালো তেমন অফ স্ক্রিন কেমিস্ট্রিটা কেমন?
রূপসা মুখোপাধ্যায়: খুব ভালো। প্রথম যখন ওর সাথে দেখা হল একটু চুপচাপ ছিলাম দুজনে। তবে এখন আমরা পুরো চোখে চোখে কথা বলি।
প্র: তোমাদের এতগুলো ষ্টারকাস্ট নিয়ে কাজ করা, সেটে মজার কি মুহুর্ত রয়েছে?
রাজীব ঘোষ: প্রত্যেকটা কো-এক্টর এবং টেকনিশানরা ফ্যামিলির মধ্যেই। লাবনী দি, বিশ্বনাথ দা, জয় দা, অনিন্দিতা সবাই একটা ফ্যামিলির মতন হয়ে গেছে। বিশ্বনাথ দা দারুন গান গায়। তো গানে মজায় জমিয়ে রাখত সবসময়।
প্র: তোমাদের এখানে দাদুর স্মৃতি নিয়ে ছবি। তো তোমাদের কাছে দাদুর স্মৃতি হিসেবে কি আছে?
রূপসা মুখোপাধ্যায়: আমার একটা একটা দুর্ভাগ্য যে আমি আমার দাদুকে দেখতে পাইনি। সেরকম স্মৃতি সেরম নেই। কিন্তু যদি হত খুব ভালো হত।
অভিষেক সিং: আমিও আমার দুটো দাদুকে দেখিনি। মায়ের বাবা বা বাবার বাবা কাউকেই দেখিনি। গল্প শুনেছি অনেক।
রাজীব ঘোষ: এইদিক থেকে আমি খুব লাকি যে আমি ঠাকুরদা, দাদু দুজনকেই দেখেছি। তাঁদের আদর খেয়েছি, মারও খেয়েছি, বকাও খেয়েছি। প্যাম্পার করেছে অনেক। আমার কাছে স্মৃতিটাই হল দাদুর নস্যির কৌটো। ওইজন্যই ‘নস্যির কৌটো’।
প্র: আমরা এই ছবিতে কমেডির সঙ্গে একটা হরর-ও দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের জীবনে কোনও ভৌতিক ঘটনা রয়েছে?
রূপসা মুখোপাধ্যায়: ভৌতিক কোনও অভিজ্ঞতা নেই আমার। আর যেন না হোক। আমি এমনি খুব ভীতু।
রাজীব ঘোষ: ভূত থাকলে ভগবানও রয়েছে। সামনে কোনওদিনও দেখিনি তবে, অনেকবার প্রাঙ্ক করেছি।
প্র: এখানে কাকার বিয়ে নিয়ে একটা জটিল ধাঁধা রয়েছে যার কারণেই নাতির আসা ও তারপর সব হওয়া। তো সেই ধাঁধাটার ব্যাপারে যদি কিছু বলো।
রাজীব ঘোষ: কাকার বিয়ে উপলক্ষ্যে ভাইপো (অভিষেক) বাইরে করে সে গ্রামের বাড়িতে আসে। তখন তরঙ্গ থেকে নস্যির কৌটো বের হয়নি এইখান থেকেই গল্পটা শুরু হয়। অন্যদিকে কাকা বিয়ে পাগল। বিয়ে করতেই হবেই। তারপর এই দস্যিপনা হয়। লাস্টে দেখা যায় সবকিছু।
প্র: দর্শকরা নস্যির কৌটো অবধি কী করে পৌঁছাবে সেটা যদি একটু বলে দাও।
রাজীব ঘোষ: খুব সোজা। হলে যাবেন, টিকিট কাটবেন এবং ছবিটা দেখবেন। এটুকু বলতে পারি মজা পাবেন দেখে।