‘আবির’আর ‘পরম’ নাকি প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন টলিউডের এক নায়িকার! কেন এমন ত্রিকোণ প্রেমের বিভ্রাটে জড়ালেন তাঁরা? এই ‘প্রেম’ শুধুই প্রেম, নাকি আড়ালে আছে অন্য রহস্য? ‘টলিকথার আড্ডায় ফাঁস করলেন অভিনেত্রী লহমা ভট্টাচার্য্য
প্রঃ টলিউডের দুই নায়ক পরমব্রত আর আবির তোমার প্রেমে পাগল, ছাদনাতলায় একসঙ্গে হাজির দু'জনে ব্যাপারটা কী?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ তুমি যখন বলছ, তখন আমার সত্যি মনে হচ্ছে কতটা প্রেশার আমার ওপর! আবির চট্টোপাধ্যায় আর পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এদের যেমন ফ্যান ফলোইং, আমিও সিনেমায় আসার আগে সেই ফ্যান ক্লাব মেম্বারদের একজন হতে পারতাম। এত ফ্যান বিশেষ করে ফিমেল ফ্যান এতটাই বেশি আর তাদের বিশাল এক্সপেক্টেশন- আমাদের ফেভারিট হিরোদের সঙ্গে যিনি অভিনয় করছেন, তো সেদিক থেকে তুমি আমায় লাকিও বলতে পারো, আবার সেটা একটা প্রেশারও আমার জন্য।
প্রঃ যে দুজনেই তোমার প্রেমে পাগল?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ প্রেমে কি আসলে সত্যিই পাগল? জানার জন্য দেখতে হবে 'বিবাহ বিভ্রাট' ছবিটা।
প্রঃ আবির চট্টোপাধ্যায় আর পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এটাই তো প্রথম কাজ তোমার, কতটা এক্সাইটেড ছিলে কাজ করে ?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ ওরে বাবা, ভীষণ এক্সাইটেড বিকজ যেমন আমি বললাম আমি যখন থেকে বাংলা সিনেমা দেখছি দুজনেরই কাজ দেখে দেখে, দুজনেই ফেভারিট অভিনেতা, দুজনের সঙ্গেই এক সঙ্গে কাজ করাটা মানে ড্রিম অপারচ্যুনিটি আমার কাছে। ছবির গল্পটা আসলে পরমদার লেখা। অনেকদিন আগে ওঁরা একবার একসঙ্গে শুট করছিল। তখন পরমদা আবীরদাকে এই গল্পটা বলেছিল, যে কোনও না কোনওদিন গল্পটা নিয়ে স্ক্রিপ্ট বানিয়ে কাজ করবে। আমি যখন ফাইনালি জানতে পারলাম এরকম একটা কাজ হতে পারে বা হতে চলেছে তখন মারাত্মক এক্সাইটেড হয়েছিলাম। এখনও সেটা চলছে। রিলিজ ডেট যত এগিয়ে আসছে এক্সাইটমেন্টটা বাড়ছে।
প্রঃ অনস্ক্রিনে তো আমরা দেখতেই পাব যে লহমা কাকে বেছে নিচ্ছে, আদৌ প্রেমে পাগল কি না, অফস্ক্রিন বন্ডিং কেমন ছিল? কোথায় কোথায় শুট হয়েছে, মজা কেমন হয়েছিল?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ কলকাতাতেই শুট করেছি আমরা পুরো সিনেমাটা। আর মজা তো বলে বোঝাতে পারব না। এমনিতেই ছবিটা কমেডির। স্ক্রিপ্ট পড়েই হাসি পাবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি ভীষণ কমেডি ছবি দেখতে ভালবাসি। যারাই মজার ছবি দেখতে পছন্দ করেন আমার মনে হয় তাদের ভীষণ ভাল লাগবে। অফস্ক্রিনে পরমদা-আবিরদা দুজনেই শটের আগে, নিজেদের মধ্যে সারাক্ষণ ওরা মজা করতে থাকে। ওঁদের মধ্যে সব চেয়ে ছোট আমি, লেগপুল করত। শুটিংয়ে মজাও হয়েছে তাই। আমার এটা দ্বিতীয় ছবি, সবাই এত সিনিয়র, নিজেদের কাজে তারা সবাই এত ভাল। সে পরিচালক হোক বা অভিনেতা। নিউকামার হিসেবে একটা ভয় থাকে, নার্ভাস লাগে কিন্তু এখানে সেটে এত মজা হয়েছে যে তখন আর মনেই হচ্ছে না যে অভিনয় করছি, মনে হচ্ছে যে আসলে আমরা তিনজন বন্ধু।
প্রঃ কোন মুহূর্তটা সবচেয়ে মনে রাখার মতো?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ বলাটা কঠিন কিন্তু আমাদের কিছু কিছু সিন্ আছে যেখানে আমরা তিন জনেই আছি আর তিনজনেরই যে একটা বন্ডিং, অফ স্ক্রিন মুহূর্তগুলো বা আমার যে প্রথম আর শেষ শট সেগুলো খুব স্পেশাল, বিশেষ করে শেষটা। ভীষণ আবেগের মুহূর্ত। আমার মনে হয় শুধু অভিনেতারা নয় পুরো টিমের। রোজ সকালে সেটে সবার সঙ্গে দেখাটা খুব মিস করি।
প্রঃ তুমি কমেডি মুভি দেখতে ভালবাসো কিন্তু তোমার সিনেমায় আসা অ্যাকশন মুভি দিয়ে, সেই গল্পটা কেমন ছিল?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ জীবনের প্রথম সব কিছুই খুব স্পেশ্যাল হয়। ওটা আমার প্রথম ছবি 'রাবণ'। খুব মেমোরেবল। আমার প্রথম ছবি অ্যাকশন, দ্বিতীয় ছবির তুলনায় একদম আলাদা। অন্য চরিত্র, অন্য ট্রিটমেন্ট।
প্রঃ 'রাবণ'র জন্য তুমি 'মোস্ট প্রমিসিং অ্যাক্টর' পুরস্কার পেয়েছ। জিৎ-এর সঙ্গে প্রথম কাজ। অনেকের কাছে এটা স্বপ্ন। অফার যখন এল সেই জার্নিটা কেমন ছিল?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ এক বছর কমপ্লিট হল 'রাবণ'র। সিলেকশন থেকে শুরু করে যে সুযোগ আমি পেয়েছিলাম, একসঙ্গে কাজ,সব অভিজ্ঞতাই খুব স্পেশ্যাল। এই ছবিটা 'বিবাহ বিভ্রাট' দিয়ে প্রায় এক বছর পর আমি স্ক্রিনে ফিরছি। যে পুরস্কার আমি পেয়েছি সেটা আমার একার নয়, পুরো টিমের জন্য। এই এক বছরে অনেক কিছু শিখেছি।
প্রঃ কমেডি আর অ্যাকশন দুই করেছ, কোনটা তোমার বেশি এন্টারটেনিং লাগল?
লহমা ভট্টাচার্য্যঃ দুটোই এন্টারটেনিং। যারা অ্যাকশন পছন্দ করে তাদের 'রাবণ' ভাল লাগবে। এই ছবিতে আমারও অনেকটা জায়গায় অ্যাকশন ছিল। যতদূর মনে আছে প্রথম কিছু দিনেই আমার কিছু অ্যাকশন শটস ছিল, যা আমার জন্য একদম নতুন অভিজ্ঞতা। শুধু অভিনয়ের জন্য না এমনিই অ্যাকশন মুভি খুব দেখতাম না। অ্যাকশন জিনিসটা আগে খুব পছন্দ করতাম না। কিন্তু এখন কাজ করার পর বুঝতে পেরেছি একটা অ্যাকশন মুভি বানানোর পিছনে কতটা পরিশ্রম থাকে।
বিবাহ বিভ্রাটে অ্যাকশন নেই কিন্তু প্রেম, বন্ধুত্ব আছে। যেগুলো খুব সুন্দর। দুটোই যে করতে পেরেছি এটা আমার কাছে দারুণ অভিজ্ঞতা।