কিডনির সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় কী?

কিডনি মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের একটি। কিডনির সমস্যা হলে শঙ্কা আসা অস্বাভাবিক নয়। এ ক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসাই একমাত্র সমাধান। এখন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যেও কিডনির সমস্যা দেখা যাচ্ছে। কিডনির রোগ হচ্ছে এমন একটি সমস্যা যার থেকে শরীরে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোনও ব্যক্তির কিডনির সমস্যা থাকলে তার ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড ও ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলেই কিডনির সমস্যা হয় মানুষের। এই কারণেই কমবয়সিদের মধ্যেও আজকাল বেশি কিডনি সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

কিডনির সমস্যা হলে অনেক সময় তা বোঝা যায় না। সুতরাং কিডনির সমস্যা থাকলে বুঝবো কীভাবে? এই সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায়ই বা কী?

তাই এবার কিডনির সমস্যা নিয়ে বিশদে জানালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়

ডাঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়ের মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ ব্যাধিগুলি যখন মানুষের শরীরে বাসা বাধে তখন সহজে বুঝতে পারা যায় না। এরকমই একটি রোগ হচ্ছে কিডনির সমস্যা। কিডনির সমস্যা হলে বুঝবেন কীভাবে?

তার জন্য সবার আগে নজর দিতে হবে প্রস্রাবের ওপর। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনা বেরোতে পারে। তাই কোনও ব্যক্তির মধ্যে এই লক্ষণ দেখতে পাওয়া গেলে বুঝতে হবে তার কিডনির সমস্যা হয়েছে। এই ধরণের সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণত শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে গেলে এই সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও সুগার রোগীদের চোখের তলা যদি ফুলে যায় কিংবা পা ফুলে যায় তাহলেই বুঝতে হবে তাদের কিডনির সমস্যা শুরু হয়েছে।

তবে ডায়লিসিস এখন অনেক আধুনিক ভাবে করা হচ্ছে। যার ফলে এখন কিডনির চিকিৎসা আগের থেকে একটু হলেও সহজ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও এখন কিডনি প্রতিস্থাপনের দ্বারাও রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা যায়। কিডনির আরও একটি বড় সমস্যা কিডনিতে পাথর জমা। এই বিষয়ে ডাঃ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেছেন, কিডনিতে পাথর জমলে সবসময় পিঠের নিচে ব্যথা হবে। যে কোনও বয়সের  মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যেতে পারে। অনেক সময় জল না খাওয়ার জন্য এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও মাংস ও চর্বি জাতীয় খাবার খেলে কিডনিতে পাথর জমে। তাই ২.৫-৩.৫ লিটারের মতো জল খেতে হবে প্রত্যেক দিন যতটা সম্ভব চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

কিডনির সমস্যা বোঝার জন্য বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা গলি মধ্যে প্রথমেই ব্লাডসুগার পরীক্ষা করতে হবে।ছোটবেলাতে যাদের হাত-পা মুখ ফুলে যাওয়ার ব্যাধি হয়েছিল তাদের একবার কিডনির পরীক্ষা করে নিতে হবে। কিডনির সমস্যা আছে কিনা তা বোঝার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার যে পরীক্ষার সেটি হচ্ছে ইউরিন এ,সি ,আর। এছাড়াও ইউরিয়া ক্রিটিনিন-এর পরীক্ষা করতে হবে। এই পরীক্ষা থেকে বোঝা যাবে কিডনির কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা ও কিডনি কোনভাবে সংক্রমিত হয়েছে কিনা। তবে কারুর সুগার থাকলে তাকে প্রত্যেক বছর কিডনির পরীক্ষা করাতেই হবে। কিন্তু কারুর যদি কিডনির সমস্যা দেখা যায় তাহলে তাকে অবশই তাকে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে, কোনো ভাবে যেন কিডনিতে আঘাত না লাগে তা দেখতে হবে, জল খেতে হবে সময় মতো।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...