‘যে লোকের কালচার নেই তার সঙ্গে আমি কাজ করি না’

‘জিয়ো আড্ডা উইথ লাবণ্য’ শোয়ে আজ অতিথি সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ঝিলম গুপ্ত। তাঁর ‘ঝিকিমিকি টুম্পা’ লোকের মুখে মুখে ঘোরে। আদতে বরানগরের মেয়ে- যেমন মিষ্টি, তেমন ঠোঁটকাটা। আবার ভয়ডরও অভিধানে নেই। স্পষ্ট কথা বলতে কষ্ট নেই তাঁর। এই ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য ঠোঁট কি ফেটেছিল কখনও? স্পষ্ট কথার জেরে বিপদে পড়তে হয়নি তাঁকে? কেমন ছিল তাঁর ছোটবেলার দিনগুলো? কেরি সাহেবের শহর কীভাবে জুড়ে গেল জীবনে? রসিক ঝিলমের ঠোঁটকাটা গল্প শুনুন

জিয়ো বাংলাঃ তোমার জার্নি কীভাবে শুরু হয়েছিল? কেমন ছিল ছোটবেলা?

ঝিলম গুপ্তঃ ছোটবেলায় যেমন ছোট থাকে সবাই তেমন ছোটই ছিলাম। এর বাদ দিয়ে যদি জার্নি বলো তাহলে জার্নিটা খুব একটা সুখের নয়, কারণ শ্রীরামপুর থেকে হাওড়া আসতে হয়, হাওড়া থেকে বাসে করে এখানে আসতে হয়। স্কুলে আমি খুব ভদ্র বাচ্চা ছিলাম না। আবার খুব অসভ্য বাচ্চাও ছিলাম না, যাইহোক আসলে আমার ছোট থেকে সেই অর্থে কোনও এম্বিশন কিছু ছিল না। ছোটবেলায় আমি আমার বন্ধুদের নকল করে বলতাম আমি বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। ইঞ্জিনিয়ার মানে কী আমি জানতাম না। কিন্তু বলতাম। তারপর বুঝলাম যে আমার এই সব হাসি গল্প আড্ডা-পরিষ্কার কথা চ্যাবলামি আর এদিক ওদিক করতে ভাল লাগে। কিন্তু সেটা তো কারও কেরিয়ার হতে পারে না। যাইহোক আমি লেখালেখির সূত্রেই বিভিন্ন অফিসে কাজ করেছি টুকটাক ক্রিয়েটিভ রাইটার হিসেবে কোথাও। কয়েক বছর জার্নালিস্ট হিসেবে...

জিয়ো বাংলাঃ তুমি তো রেডিয়ো স্টেশনেও কাজ করেছ?

ঝিলম গুপ্তঃ করেছি, that also for a brife period, but ব্যাপারটা সেটা না। যদি কাজটা মনের মতো হয় আমার কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যে আমার ওপরে থাকবে কাজের ক্ষেত্রে সে যদি বেশি ছড়ি ঘোরায় এবং যদি দেখি তাঁর ছড়ি ঘোরানোর যোগ্যতা নেই, তাও ঘোরাচ্ছে, সেটা আমি মেনে নিতে পারিনা। তুমকো তুমহারী জব মুবারক হো, বলে আমি বাড়ি চলে আসি।

জিয়ো বাংলাঃ কর্পোরেট কালচারে তো এটা ভীষণই ব্যাপার আছে

ঝিলম গুপ্তঃ কর্পোরেট কালচার কিনা জানিনা, যে লোকের কালচার নেই তার সঙ্গে আমি কাজ করি না। পরিষ্কার ব্যাপার!

জিয়ো বাংলাঃ রোস্টিং একটা বেশ ইম্পরট্যান্ট রোল প্লে করে, সবাই করে। তোমার কী মনে হয় এটা কতটা ইম্পরট্যান্ট?

ঝিলম গুপ্তঃ ইম্পরট্যান্ট যদি তুমি মনে করো যে আজকে আমার চাকরিটা ইম্পরট্যান্ট নয়। সবটাই ভাবার ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে করতে ভাল লাগে কিন্তু এক এক জনের রোস্টিং-এর ফরম্যাট এক একরকম।

জিয়ো বাংলাঃ রাইট

ঝিলম গুপ্তঃ আমি যেটা করি চেষ্টা করি মজা করে করব, যাতে যাকে বা যে ব্যাপারটা নিয়ে রোস্ট হচ্ছে তার সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যেন আঘাত না পায়, তারাও যেন মজা পায়।

জিয়ো বাংলাঃ তো Roasting is ok আর কী?

ঝিলম গুপ্তঃ Roasting is ok for me. তার বিভিন্ন স্তর আছে

জিয়ো বাংলাঃ কিছু কিছু সময় এটাও তো মানতে হবে কিছু মানুষ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।

ঝিলম গুপ্তঃ মাত্রা ছাড়িয়ে যায় আমি বলব না, এক একজনের স্টাইল এক এক রকম। বিদেশে যেটা হয়। আমি আগেও কোনও ইন্টারভিউতে বলেছিলাম যে ওখানে বাপ মাকেও ছাড়ে না, এবং যারা আসছে তারা জানে আমার সঙ্গে কী করা হবে। আমি তৈরি হয়ে যাব যে এগুলো আমায় শুনতে হবে। কিন্তু দ্যাখো সেই কায়দা আমিও চাইলে করতে পারি, কিন্তু কোথাও গিয়ে আমার আসে না। দূর থাক না ঠিক আছে, মজা করছি এটাই ভাল।

জিয়ো বাংলাঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কোনও জিনিস আপলোড করার যে প্রবণতা এটা কি কিছু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত হয়েছে?

ঝিলম গুপ্তঃ স্বেচ্ছাচারী তো আমরা সবাই, মানে আমরা কি হতে চাই না? আমি যেটা করতে চাই সেটা যদি করতে গেলে আমায় বাধা দেয়, তখনই পট করে মাথা গরম হয়ে যায়। পৃথিবীতে আমাদের সাধারণ ভিডিয়ো আপলোড থেকে নিউক্লিয়ার যুদ্ধ সমস্ত কিছুই কিন্তু শুধু মতের মিল না হওয়ার ফল, আর তো কিছু নয়। সায়া ব্লাউজ কমিউনিটি তৈরি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা আপলোড করছে তাদের ইচ্ছায়। এবার একটা বাচ্চা যদি সেটা দেখে ফেলে বা এনি চান্স, তার মনে একটা প্রভাব পড়বেই। সুপ্ৰভাব না কুপ্রভাব সে ক্ষেত্রে আমি যাচ্ছি না, কারণ সেটা তার জানার বয়স হয়নি। মানুষ বয়স অনুযায়ী ঠিক শিখেই যায়। কিন্তু সেটা যদি বয়সের আগে দেখে তখন তার মধ্যে বয়স অনুযায়ী দরকারি জিনিস বাদে যদি সেগুলো প্লে করে তাহলে খারাপ।  কিছু বাবা মা আছে যারা বাচ্চাকে মোবাইল দিয়ে দেয়।

দ্যাখো অসভ্য লোক এবং অসভ্য  এক্টিভিটি কেউ ঠেকাতে পারবে না। কিন্তু সেই জায়গা থেকে কেউ যদি পরিবারের সদস্যকে বাঁচাতে ইচ্ছে হয় তাহলে আমার মনে হয় নিজেদের কন্ট্রোলে থাকা উচিত।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...