নিয়মিত যোগভ্যাসে কি PCOS পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (Polycystic ovary syndrome) প্রতিরোধ ও নিরাময় সম্ভব? কী ধরনের যোগ ব্যায়াম PCOS-এর জন্য উপকারী?আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের (International Day of Yoga) বিশেষ পর্বে বিস্তারিত জানালেন ফিজিওথেরাপিস্ট ও যোগ প্রশিক্ষক ডাঃ জি.ডি পান (Dr. G.D Pan, Physiotherapist & Yoga Trainer)
PCOS পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম অনেকগুলো লক্ষণের সমষ্টি। যেটা প্রধান ব্যাপার সেটা হল সিস্টটা হচ্ছে ওভারিতে। একাধিক সিস্ট দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এটা একদিনে হয় না। এই সমস্যা তৈরি হয় জীবনযাত্রার ভুল ভ্রান্তির ওপর। তখন শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। তার অন্যতম কারণ PCOS পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম। তবে সমস্যা সেই অর্থে কোনও ব্যাধি নয়, বলা যায় ভুল জীবনযাত্রার ক্ষতিকারক ফল।
আমাদের শরীরে অনেকগুলো সিস্টেম একসঙ্গে কাজ করে। সেই সিস্টেম চালাতে গেলে একাধিক বিষয়ের প্রয়োজন হয়। যা আসে জীবনযাত্রার মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় যখন বাধাপ্রাপ্ত হয়, শরীর ঠিকমতো যোগান পায় না তখন ভিতরের সিস্টেমে ভারসাম্য-এর অভাব দেখা দেয়। এই অভাবকে মেটাতে পারলেই PCOS কমতে শুরু করে। হরমোনের ভারসাম্য ফিরে আসে। যোগ শুধুমাত্র কতকগুলো আসন নয়। যোগ আসলে শারীরিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য, আধ্যাত্মিকতা সব কিছু মিলিয়ে একটা পদ্ধতি।
PCOS কমাতে এই পদ্ধতি ভীষণ কার্যকর।
পতাঞ্জলির ধারণা অনুযায়ী যোগকে আটটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধ্যান, সমাধি। যম মানে সংযম যা মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। নিয়ম মানে বিধি। নিয়মে শরীর চলে। যোগ শরীর আর মনের মধ্যে ভারসাম্য আনে। শরীর মন নিয়ে একজন মানুষ। তার যদি দুই সুস্থ থাকে তাহলে অন্যান্য সমস্যা থেকেও বেরিয়ে আসা সম্ভব।
PCOS পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম থেকে সেরে উঠতে খাদ্যভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন মানুষের স্বাভাবিক খাবার ধরণ অনেকটা বদলে গিয়েছে। এখন খিদে পেলে খাওয়া নয়, অনেকটাই অভ্যাসে। শরীরের কি সেই খাবারে প্রয়োজন আছে? নেই বলেই সেটা বাড়তি। বাড়তি খাবারটাই শরীরের ক্ষতি করে। তাই খাবারে চাই সংযম। কী খাচ্ছি, কেন খাচ্ছি, কতটা খাচ্ছি তিন দিক খেয়াল রাখতে হবে।
পিরিয়ডস বা ঋতুকালীন সময়ে অন্য শারীরিক সমস্যা থাকলে যোগ অভ্যাস, কসরত এড়িয়ে চলাই ভাল। সব ধরনের যোগা PCOS পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে কাজে দেয়। কিছু নির্বাচিত প্রাণায়াম, যোগিক ক্রিয়া আছে যেগুলো বিশেষভাবে কাজ দেয়। যেমন ত্রিকোণাসন, সুপ্তভদ্রাসন, সেতুবন্ধাসন। ভোরবেলা যোগ অভ্যাস সবচেয়ে উপকারী। সূর্যের আলো যখন প্রথম আমাদের শরীরে এসে পড়ে তখন শরীরের ক্রিয়া গতি পায়। সেই সময় আসন করা হল সেই গতিকে আরও কার্যকরী করে তোলে।