কোন নিয়ম মানলে ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা এড়ানো যাবে?

শরীরে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ হল যকৃৎ বা লিভার।শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে এই অঙ্গ। খাদ্য থেকে পানীয় সবই পরিপাক হয় এই লিভারের মাধ্যমে। ১৯ এপ্রিল দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব লিভার দিবস হিসেবে। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে লিভার সম্পর্কিত সমস্যা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা।

ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ চেনা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগে লিভারে ফ্যাট জমে। শুরুর দিকে লক্ষণও তেমন বোঝা যায় না। কিন্তু সচেতন না হলে এই রোগ হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর।   

ফ্যাটি লিভার কেন? কোন নিয়ম মানলে এই রোগের সম্ভাবনা এড়ানো যাবে, বিশ্ব লিভার দিবসের বিশেষ পর্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন ডাঃ বিকাশ প্রকাশ (Dr. Vikash Prakash - DM, ILBS DELHI)

ডাঃ বিকাশ প্রকাশ জানিয়েছেন, আলট্রা সাউন্ড দিয়ে ডায়াগনেসিস করা হয় ফ্যাটি লিভার। লিভার ফাংশন টেস্ট করা হলে ST  আর  ELT যদি বেশি থাকে তাহলে বুঝতে হবে লিভারে সমস্যা চলছে। তারপর আলট্রা সাউন্ড করে বোঝা যায় ফ্যাটি লিভারের সমস্যা আছে কিনা। ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ১-২-৩ গ্রেড থাকে। দেখা হয় লিভারে ফ্যাট এলো কেন। নানা কারণে লিভারে ফ্যাট আসতে পারে।

লাইফস্টাইল, খাওয়াদাওয়া, অতিমাত্রায় মদ্যপান, হেপাটাইটিস সি-এরকম একাধিক কারণ আছে। ফ্যাট আসার কারণ জানার পর শুরু হয় চিকিৎসা। শুরুতে এই রোগে লক্ষণ না থাকলেও ধীরে ধীরে লিভার পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। এটাকে সিরোসিস বলে। জন্ডিস, পেটে জল জমা, রক্ত বমির মতো সমস্যা হয়। তারপর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। তাই রোগ ধরা পড়ার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু হওয়া দরকার। ফ্যাটি লিভার রোগটির দুটি ভাগ রয়েছে। অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।

বছরে ১-২ বার ব্লাড টেস্ট, আলট্রা সাউন্ড চেকআপ জরুরি। এছাড়া যাদের লাইফ স্টাইল, অত্যাধিক ফাস্ট ফুড, মদ্যপানের অভ্যাস যাদের আছে তাদেরও টেস্ট করা উচিত। সব সময় ক্লান্তিভাব, উর্ধাঙ্গে ব্যথা দেখা যায় অনেক সময়। আবার ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে তেমন কোনও লক্ষণ দেখাও যায় না। জন্ডিস, পেটে জল জমার সমস্যা নিয়ে গেলে ধরা পড়ে।

ভারতের ২৫ শতাংশ মানুষ ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভোগে। ভাত, মিষ্টি, ময়দা, ফ্যাট জাতীয় খাবার থেকে লিভারে ফ্যাট জমতে পারে। এমন কোনও খাদ্য বস্তু নেই যা সরাসরি এই রোগকে প্রতিহত করতে পারে। পরিমিত খাওয়া দাওয়া, নিয়মিত শরীর চর্চা, ফাস্ট ফুড, অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপানের অভ্যাস থেকে দূরে থাকা এবং নিয়মিত লিভার পরীক্ষা করলে সচেতন থাকা যায়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...