তাপপ্রবাহের ফলে শরীরে কী কী সমস্যা দেখা দেয়?

গ্ৰীষ্ম মানেই চড়া রোদ আর কড়া তাপমাত্রা। প্রচন্ড গরম আর তাপপ্রবাহ শরীরকে কাহিল তো করেই সঙ্গে সানস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশনের মতো বিপদেও ফেলে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দরকার ছাড়া বাড়ি থেকে না বেরোনোই উচিত। তবে গরমে শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। সেই নিয়মগুলি সম্পর্কে বিশদে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডাঃ রাজীব শীল।

চিকিৎসক ডাঃ রাজীব শীল জানিয়েছেন, গরমে হিট ওয়েভের ফলে আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে ঘামের সাথে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় মিনারেল ও সল্ট বেরিয়ে যায়। যাদের বিভিন্ন ধরনের অসুখ (যেমন- লাঙ্গসের সমস্যা) রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই হিট ওয়েভ বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। কিন্তু যাদের এধরনের কোনও অসুস্থতা নেই, বিপদ তাদেরও। বিশেষ করি যদি তাদের কাজের জন্য বাইরে ঘুরতে হয়। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় মাথায় রাখতে হবে কী ধরনের জামা কাপড় পরে বেরনো উচিত সেই বিষয়। সব সময় সুতি ও লাইট রঙের জামা-কাপড় পরতে হবে। আর জলের বোতলটা সব সময় নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। সারা দিনে কম করে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খেতে হবে। তবে দরকার পড়লে এর চেয়ে বেশিও খাওয়া যেতে পারে।

হিট ওয়েভের ফলে বাড়ির বাইরে ও‌ ভেতরের টেম্পারেচারের মধ্যে বিশাল পার্থক্য তৈরি হয়। ১০৪ ডিগ্ৰি সেলসিয়াস বা ৪০ ডিগ্ৰি ফারেনহাইটের ওপর যখন তাপমাত্রা বেড়ে যায় তখন শরীর আর সেই তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। ফলে মাথা ঘোরে, পালস রেট, হার্ট রেট বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পড়লে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঐ ব্যক্তির বডি ঠান্ডা করার জন্য ঠান্ডা ঘরে বা এসি রুমে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও জল খেতে হবে যাতে শরীরের ভিতরটা ঠান্ডা হয়।

এই সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে জল বেরিয়ে যায় তাই পরিমাণ মেনে জল খেতে হবে প্রত্যেক দিন। পিপাসা না পেলেও জল‌ খেতে হবে, তাহলেই শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ সম্ভব। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকেরও সম্ভবনা দেখা দেয়। এই সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্ৰীষ্মকালে যারা সকালে মর্নিং ওয়াক করতে যান তাদের ভোর চারটে নাগাদ যেতে হবে। আর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসতে হবে। আর বাড়িতে এসে নুন চিনির জল খেতে হবে। এছাড়াও দুপুর বেলা অবশ্যই একটা করে ফল খেতে হবে। গরম থেকে বাড়িতে আসার পর অবশ্যই মুখ চোখ ধুতে হবে।

গরমে হালকা খাবার খেতে হবে। ব্রেকফাস্টের সময় টোস্ট বা ডিম পাউরুটি খাওয়া যেতে পারে। দুপুরে ভাত, ডাল সঙ্গে মাছ খাওয়া যেতে পারে। আর প্রত্যেক দিন একটা করে ফল খেতেই হবে। আর ডিনারের পর অন্তত দু ঘন্টা পর বিছানায় শুতে যেতে হবে। এছাড়াও জিম করার সময় পেট ভর্তি করে জল খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও স্ট্রিট ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...