বয়সের ভারে কি জীবনে হতাশা বাড়ে? সেটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত? হতাশা ও মানসিক চাপ কাটানোর উপায় কী? সুস্থ থাকতে কী করবেন? নেতিবাচক চিন্তা ও অতিভাবনা নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে? মনের খেয়াল কী করে রাখবেন? মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে জরুরি পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট মনোবিদ এবং অধ্যাপিকা ডাঃ প্রথমা চৌধুরী (Dr. (Prof) Prathama Chaudhuri , Psychiatrist)
কীভাবে বুঝবেন মানসিক চাপে আছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমা চৌধুরী জানিয়েছেন, মানসিক চাপ মানেই যে সব সময় খারাপ তা নয়। আমাদের জীবনে যদি কোনও চাপই না থাকত তাহলে জীবন কেমন এক ঘেঁয়ে হয়ে যেত। একটু চাপ না থাকলে এগোনো যায় না জীবনে। অন্যের জন্য কোনও ছাপ ও প্রভাব রেখে যাওয়ার জন্য একটু চাপ আসেই। সেই চাপ জীবনের পক্ষে ভাল। তাকে বলা হয় ভাল চাপ বা ইউজ স্ট্রেস। কিন্তু এই চাপ যখন বাড়াবাড়ি হয়ে যায় সেটাকেই বলা হয় ডিসস্ট্রেস। কখন ভাল চাপ খারাপ চাপের দিকে চলে যাচ্ছে এটাই বড় প্রশ্ন। অনেক সময় মানুষ বুঝতেই পারেনা সে তার শরীর ও মনকে চাপের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। চূড়ান্ত পরিণতির আগেই যদি আমরা নিজেদের থামাতে পারি তাহলে অনেক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচা যায়।
প্রথমা চৌধুরীর টিপস
প্রথমত, যদি দেখেন যে ঘুম ঠিক মতো হচ্ছে না, তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে যাচ্ছে বা উল্টোটা খালি ঘুম পাচ্ছে এটাও মানসিক চাপের লক্ষণ।
বারবার অ্যাসিডিটি হচ্ছে, হজমের গোলমাল, খিদে না পাওয়া, মাথা ধরে থাকা, বুকে চাপ এমনকি স্বাভাবিক যৌন জীবনে ছেদ সবই মানসিক চাপের লক্ষণ হতে পারে।
কথায় কথায় রেগে যাওয়া, কাজের প্রতি ইচ্ছে হারানো, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, ভয়, আচরণগত এই সব পরিবর্তনই জানান দেয় যে মানসিক চাপ চলছে।
টিনএজারদের মধ্যেও মানসিক চাপের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে আজকাল। বাবামাদের এক্ষেত্রে সন্তানদের সঙ্গে সহজভাবে মিশতে হবে। আপনি সন্তানকে পরামর্শ দিতে পারেন কিন্তু আদেশ,উপদেশের আকারে নয়। সন্তানরা নিজেদের সমস্ত কথা আপনাকে বলবে তা কিন্তু নয়। প্রাইভেট স্পেস সকলের জন্যই প্রয়োজনীয়।
বয়স্ক মানুষের মানসিক চাপ অনেক কারণে হতে পারে। একাকিত্ব, সন্তানের সঙ্গে দূরত্ব, শারীরিক সমস্যা, মৃত্যুভয় সব যেন ঘাড়ে চেপে বসে। অবসরের পর ফিনান্সশিয়াল প্ল্যানের সঙ্গে সোশ্যাল প্ল্যানও করা উচিত। নতুন শখ, ব্যস্ততা, সোশ্যাল সাপোর্ট খুঁজে নিন। ষাট, পয়ষট্টিতে মোটেই জীবনের শেষ হয় না। চল্লিশ থেকেই নিজের খেয়াল রাখতে শুরু করুন।