বসার সঠিক ভঙ্গি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। খারাপ ভঙ্গির জন্য অনেকেই অনেক নিউরোলজিক্যাল সমস্যার সম্মুখীন হন। অনেকেরই নিউরোজেনিক ব্যাথা হয়। জিয়ো বাংলার হেলথ কথা-য় এই সমস্ত সমস্যার সমাধানের উপায় জানালেন পি.টি নিউরো ফিজিওথেরাপিস্ট ড. ঐন্দ্রিলা চৌধুরী...
কোন কোন খারাপ ভঙ্গির জন্য নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়?
প্রত্যেকদিন দিনের শুরু থেকে দিনের শেষ অবধি আমরা যা যা কাজে ব্যস্ত থাকি, তার মধ্যে অনেক সময়ই আমরা আমাদের বসার ক্ষেত্রে সচেতন থাকিনা। আমাদের দৈনন্দিন কাজের প্রতিটি বিষয়েরই ভিন্ন ভিন্ন সঠিক ভঙ্গি থাকে। যা আমাদের পক্ষে অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এই সমস্ত ভঙ্গির সঠিক ধরন সম্পর্কে যদি আমরা অবগত থাকি, তবে ব্যাথা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
উদাহরণস্বরূপ, যারা দীর্ঘসময় ধরে রান্না করেন, সেই রান্নার জায়গার উচ্চতা যদি কম বা বেশি থাকে, তবে তাদের জয়েন্ট ব্যাথা হতে পারে। যদি কোন ব্যাথা রেডিয়েটিং হয়, তখন বুঝতে হবে সেখানে কোন নার্ভ সংকুচিত হচ্ছে।
হাড়ের চারিপাশে বিভিন্ন নার্ভ থাকে। সেই নার্ভগুলিকে যখন হাড় সংকুচিত করে তখনই বিভিন্ন নার্ভের সমস্যা দেখা যায়। আর এই সব ব্যাথাই নিউরো সমস্যায় পরিণত হয়।
এই সমস্যা হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
এই ধরনের নিউরোলজিক্যাল সমস্যার মূল লক্ষণ হল, ব্যথা। ব্যাথার নানান ভাগ থাকে, যেমন- নিউরো পেইন, জয়েন্ট পেন, বোনস্ পেইন, মাসল পেইন ইত্যাদি। এছাড়াও, অকারণে হাতের আঙ্গুল কাঁপা, হাতের রিস্টে ব্যাথা বা টান ধরা ইত্যাদি সবই এই ধরনের সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই সমস্যা থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
প্রত্যেক কাজের জন্য আলাদা আলাদা ভঙ্গি রয়েছে। সেই সঠিক ধরন গুলো অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। কিন্তু শুধুমাত্র বসার ক্ষেত্রে নয় দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেটা আমাদের শরীরের পক্ষে খারাপ ক্ষতিকারক।
বসার ক্ষেত্রে সব সময় ৯০ ডিগ্রি সোজা হয়ে বসতে হবে। সবসময়ে এই অভ্যেস অনুসরণ করা সম্ভব হয় না। তাই কাজের মাঝে প্রত্যেক আধঘণ্টা অন্তর যদি নিজের প্রতি খেয়াল রাখা যায়, তবে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে বেশি সময় লাগবে না।
ঘুমানোর ক্ষেত্রেও আমাদেরকে সঠিক পজিশন অনুসরণ করতে হবে। ঘুমানো বা শোয়ার প্রথম ৩০ মিনিট অবধি সঠিক ভঙ্গি থাকা খুব জরুরি। এছাড়াও বালিশ যেন খুব মোটা ও উঁচু না হয়, শোয়ার জন্য তোশকও যেন বেশি নরম না হয়, সেদিকও খেয়াল রাখতে হবে।
বাচ্ছাদের কী নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে?
যারা এক বা দুইবছরের ছোট বাচ্চা, তারা ডবলু পজিশনে বসে। দীর্ঘদিন এভাবে বসলে তাদের কোর মাসল দুর্বল হয়ে যায়। এছাড়াও অনেক বাচ্চারা দীর্ঘ সময় অবধি ভারী ব্যাগ বহন করে স্কুলে যাওয়ার সময়। ফলে তাদের ছোট বয়সেই নানান নিউরোলজিক্যাল প্রবলেম দেখা দিতে থাকে।
কম্পিউটারে দীর্ঘসময় অবধি কাজ করা কতটা ক্ষতিকর?
করোনা অসুখের পর থেকে অনেকেই বাড়ি থেকে অফিসের কাজ, অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোমে কাজ করে। এক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অবধি খাটে বা চেয়ারে বসে অফিসের কাজ করা তাদের নানান সমস্যায় ফেলতে পারে। এর ফলে তাদের নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে।