সামাজিক জমায়েতে যেতে ইচ্ছে করে না? চেনা-অচেনা মানুষের সঙ্গে কথা বলতে অস্বস্তি? মুখ খুললেই সমালোচনা- এই ভয়ে গুটিয়ে থাকেন? আপনি সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে (Social anxiety disorder) ভুগছেন না তো? সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার বা সোশ্যাল ফোবিয়া (Social phobia) কেন হয়? এই সমস্যার লক্ষণ (Social anxiety disorder symptoms) কী? কীভাবে সেরে উঠবেন?
বিস্তারিত জানালেন বিশিষ্ট মনোবিদ ডাঃ সুব্রত সাহা (Dr. Subrata Saha, Psychiatrist)
ডাঃ সুব্রত সাহা জানিয়েছেন, কারণের ভিত্তিতে সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। পরিবেশগত ও শারীরিক। সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার অতি পরিচিত সমস্যা। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রিটি কম বেশি সকলেই এমন ফোবিয়ার শিকার হয়েছে। এমনকি আমেরিকার এক বিখ্যাত রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত এই সমস্যায় ভুগেছেন।
আমাদের মস্তিষ্কে যে সমস্ত নিউরো ট্রান্সমিটার থাকে সেগুলির মধ্যে সামঞ্জস্যর অভাব দেখা যায়। রিসেপ্টর-এও সমস্যা হয়। সেই কারণেই এই সমস্যা হয়ে থাকে।
বয়ঃসন্ধিকালে সাধারণভাবে শুরু হয়। আবার ৪-৫ বছর বয়সেও হতে পারে। আবার ৩৫ বছর বয়সেও দেখা দিতে পারে। স্কুল বা বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে কোনও কার্যকলাপের ক্ষেত্রে হঠাৎ কথা ভুলে যাওয়া, আটকে যাওয়ার সমস্যা হয়। তখনই ঘাটতি দেখা যায় আত্মবিশ্বাসে। সেই ভয়টাই বারবার ব্যর্থতার ভয় দেখায়। এটাকে বলা হয় ভিসিআর সাইকেল।
লাজুক অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষদের এই রোগ বেশি দেখা যায় এমন ধারণা ভুল। কিন্তু তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার মানে নয় যে বহিরমুখী ব্যক্তিত্বরা আক্রান্ত হন না।
অনেক মানুষের মধ্যে কথা বলায় ভীতি, তোতলামি, কথা জড়িয়ে যাওয়া সোশ্যাল ফোবিয়ার লক্ষণ। এরকম অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে সাইক্রিয়াটিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। তিনিই ঠিক করবেন চিকিৎসার পথ।
ফার্মকো থেরাপি আর সাইকো থেরাপি দুই ভাবে চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসায় এই সমস্যা পুরোপুরি সেরে যায়। একেবারে না সারলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। সবটাই নির্ভর করে রোগীর রোগ মাত্রার ওপর।
সামাজিক ক্ষেত্রে সমালোচনার মুখে পড়ে তার মধ্যে সোশ্যাল আনক্সাইটির সঙ্গে ডিপ্রেশনেও আসতে পারে। এটাকে কো মর্বিডিটি বলা হয়।
এই সমস্যাকে লঘু করে দেখা একেবারেই উচিত নয়। সঠিক চিকিৎসার ওভাবে সমইয়ের সঙ্গে সঙ্গে রঅগের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে রোগী আত্মবিশ্বাসের অভাবে কাজে সব উদ্যোম হারায়। হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। অবসাদ গ্রাস করে। তাই সমস্যা দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ চাই।