পরীক্ষার ভীতি কীভাবে সামলাবেন?

পরীক্ষার দিনক্ষণ সামনে এলেই হাত-পা ঠাণ্ডা! ভয়, মানসিক চাপে রাতের ঘুম উধাও! অতিরিক্ত টেনশনে মনে আতঙ্ক! সিলেবাস শেষের ভয়,পরীক্ষা কেমন হবে, ফলাফল কেমন হবে সেসবের সঙ্গে বাবা-মা-অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণের ভার আরও ভার বাড়ায় মনের। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অস্থিরতা বাড়ে অভিভাবকদেরও। এই পরীক্ষা শুধু সন্তানদের নয়, যে তাঁদেরও। কিন্তু প্রবল মানসিক চাপ, পরীক্ষা-ভীতি প্রভাব ফেলে ফলাফলেও। পরীক্ষার ভীতি কীভাবে সামলাবেন, পরামর্শ দিলেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডাঃ রাখী বিস্ত (Dr. Rakhi Bist, Clinical Psychologist)

ডাঃ রাখী বিস্ত জানিয়েছেন, পরীক্ষার হলে চাপমুক্ত থাকার সবচেয়ে সহজ উপায় সারাবছর নিয়ম মেনে পড়াশোনা। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তে বসা। যদি ২ ঘন্টা হয়, তাহলে ২ ঘন্টাই নিয়ম করে কোনও ফাঁকির ভাবনা মাথায় না রেখে মন দিয়ে পড়তে হবে। দিনের পড়া দিনে শেষ করতে পরীক্ষা শুরুর মুখে সিলেবাস শেষ করার বাড়তি চাপ পড়ে না।

এখন অনলাইন পড়াশোনার কারণে মোবাইল, ল্যাপটপ জীবনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে ছাত্রছাত্রীদেরও। তার যেমন ভাল দিক আছে, খারাপ দিকটিও কম না। কারণে,অকারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেটে যায়। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য কীভাবে পড়াশোনায় কাজে লাগাবে সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকে না অনেক সময়। পদ্ধতিও জানা নেই। ফলে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। ছাত্রছাত্রী যতই মেধাবী হোক নিয়ম করে প্রতিদিন পাঠের কোনও বিকল্প নেই। বজায় রাখতেই হবে সেই অভ্যাস।

ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা ভীতির একটা বড় কারণ অভিভাবকদের প্রত্যাশার চাপ। বাবা-মাকে বুঝতে হবে সন্তানের সাফল্য কাঙ্খিত বিষয়, তারা ভবিষ্যতে কোন কেরিয়ার বেছে নেবে সেটা তাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। তাদের কেরিয়ারের স্বপ্ন বাবা-মা’র সঙ্গে নাও মিলতে পারে।

পরীক্ষার প্রস্তুতি ভাল হলেও হলে উত্তরপত্রের সামনে বসে সব জট পাকিয়ে যায় ছাত্রছাত্রীদের এ অতি চেনা সমস্যা। পরীক্ষার টেনশন, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এই সমস্যা হয়। তাই পরীক্ষার সময় মাথা থাকবে একদম ঠাণ্ডা আর শান্ত। মন খোলা রেখে পরীক্ষা দেওয়া উচিত।

পরীক্ষার দিন সকালে কোনও পড়াশোনা নয়। অন্তত দু’ঘন্টা আগে বইয়ের পাতা বন্ধ করে দিতে হবে। শেষ মুহূর্তে পড়তে গিয়ে বাড়তি চাপ নিলে মানসিক চাপ বাড়ে বৈ কমে না।

প্রতিদিন নিয়মিত পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে গিয়ে খেলা শরীর চর্চা জরুরি। গান শোনা, হাঁটা, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বেড়াতে যাওয়া এই সব কিছুই মনের চাপ কাটাতে সাহায্য করে। একটানা পড়াশোনার মধ্যে তাই বিরতিও সমান জরুরি। একঘেঁয়েমি দূর হলে মনঃসংযোগ ভাল হয়। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...