থ্রিলার দুনিয়ার বাইরে রিয়েল লাইফের সায়ন্তন ঘোষাল ঠিক কেমন?

‘ইন্দু’ আর ‘সম্পূর্ণা’ দুই নারীর লড়াই চমকে দিয়েছিল বাংলা ওটিটি দর্শকদের। 'ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া'-য় স্থান পেয়েছে তাঁর পরিচালিত ছবি 'রবীন্দ্র কাব্য রহস্য'। ২০১৭ ‘যকের ধন’ থেকে ২০২১-এ ‘গোরা’- রহস্য-রোমাঞ্চ তাঁর প্রিয় বিষয়। বই নিয়ে জগৎ। মা-স্ত্রী-কন্যা নিয়ে পুরোদস্তুর ফ্যামিলি ম্যান। থ্রিলার দুনিয়ার বাইরে রিয়েল লাইফের সায়ন্তন ঘোষাল ঠিক কেমন? কীভাবে কাটান লাইৎ-ক্যামেরা-অ্যাকশনের বাইরে উৎসবের দিনগুলো?কী প্ল্যান তাঁর কালীপুজোয়? ‘টলিকথা’র আড্ডায় পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল জানালেন অজানা কথা।

প্রঃ দিওয়ালীর কী প্ল্যান রয়েছে, যদি একটু বলো।

সায়ন্তন ঘোষালঃ স্পেশ্যাল কিছু না। আমার বাড়ি বারাসাত। ওখানে কালীপুজো বিরাট করে হয়। আর আমার মেয়ের বয়স পাঁচ। যদি ও ঘুরতে যেতে চায় নিয়ে যাব। তবে, সেটা দিনে, রাতে নয়।

প্রঃ তোমার সব কাজ খুব ফেমাস। তবে, নতুন কী কাজ উপহার দিতে চলেছ দর্শকদের? 

সায়ন্তন ঘোষালঃ সম্প্রতি সম্পূর্ণ-২ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ করেছে। এরপর আমার একটা রিলিজ আছে। সেটা ছবি- ‘রবীন্দ্র কাব্য রহস্য’। আরও অনেক ছবি বানানো আছে সেগুলোর পোস্ট প্রোডাকশন কাজ চলছে। যেমন ‘সরলাক্ষ হোমস’, যেটা ‘শার্লক হোমস’র অ্যাডপ্টেশন। আর একটা রোম্যান্টিক কমেডি করেছি। সেটার অ্যানাউন্সমেন্ট এখনও হয়নি তাই বেশী কিছু বলছি না। 

প্রঃ ‘রবীন্দ্র কাব্য রহস্য’ সিলেক্ট হয়েছে 'ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া’, গোয়া, সেটা নিয়ে যদি একটু বলো।

সায়ন্তন ঘোষালঃ একটা বিরাট বড় পাওনা এটা পুরো টিমের কাছে। গোটা ইন্ডিয়া থেকে মাত্র ২৫টা ছবি সিলেক্ট করা হয়েছে। তাই এটা বিরাট বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট। কারণ যেখানে মনি রত্নমের সিনেমা দেখানো হবে, ‘কান্তারা’ আছে তার সঙ্গে একই প্ল্যাটফর্মে আমাদের সিনেমা দেখানো হবে। আরও দুটো বাংলা সিনেমা সিলেক্ট হয়েছে এই বছর। ২৪ তারিখ আমাদের স্ক্রিনিং আছে গোয়াতে।

প্রঃ তোমার সব কাজই ভীষণ হিট। সেখানে রহস্য, থ্রিলার ব্যপারটা খুব থাকে। এই গোয়েন্দা, থ্রিলার এইরকম সিনেমা নিয়ে কাজ করতে কেন ভালোবাসো?

সায়ন্তন ঘোষালঃ কারণ এইগুলো পড়ে আমি বড় হয়েছি। ছোটবেলা থেকে আমার সিনেমা দেখার নেশাটা যতটা বেশী তার থেকে বই পড়ার নেশাটা অনেক বেশী। সেইজন্য বারবার ফিরে আসে। প্রথমের সিনেমাগুলো এইরকমের ভিত্তিতেই হত। কিন্তু এখন সেটা ভাঙছি। নতুন কিছু করছি।    

প্রঃ ইন্দুকে তুমি বাড়ির গৃহিণী থেকে গোয়েন্দা বানিয়ে তুলেছ। এই ভাবনাগুলো কি বই থেকেই আসে?

সায়ন্তন ঘোষালঃ ইন্দুর ভাবনা আমার না। এটার পুরো ক্রেডিটই যাবে সাহানাদির, রাইটার তাঁর। কিন্তু আমার প্রথম কাজ ছিল বিমলকুমার কে যকের ধন অ্যাডপ্টেশন করা। সেখান থেকে ব্যোমকেশ হল। সম্প্রতি ‘হোমস্টে মার্ডারস’ করলাম, সেটাও ডিটেকটিভ। গোরা করেছি। খুব ভালো লাগে এইরকম করতে।

প্রঃ এতগুলো কাজের মধ্যে তোমার সবচেয়ে প্রিয় কাজ কোনটা?

সায়ন্তন ঘোষালঃ এটা বলা খুব কঠিন। কিন্তু যেগুলো বেড়িয়েছে তার মধ্যে থেকে হলে স্পেশ্যাল কাজ অবশ্যই থাকবে ‘যকের ধন’ সিরিজটা। নিজের কাজ সব থেকে প্রিয় বলতে গেলে সেটা হল সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ এবং ওয়েব সিরিজ থেকে ‘হোমস্টে মার্ডারস’।

প্রঃ অন্দরমহলের গল্পগুলো আমরা খুব বিস্তারিত ভাবে দেখতে পাই, এই সিনেমাগুলোর বানানোর আগে কীভাবে রিসার্চ করো?

সায়ন্তন ঘোষালঃ আমার রিসার্চ একটু পরে আসে। আগে বানানোর ইচ্ছা হতে হবে। পুরোনো কলকাতা, ইতিহাস এবং মাইথোলজি এইসব সাবজেক্টের ওপর আমার প্রচুর ইন্টারেস্ট আছে। আমার টিমেরও আছে।

প্রঃ তোমার গল্পগুলোর মধ্যে মহিলাদের যেই চরিত্রগুলো থাকে, সেইগুলোকে বেশ বিশেষ করে তোলা হয়। সেটা নিয়ে কি ভাবনা চিন্তা থাকে?

সায়ন্তন ঘোষালঃ এটা খুব ভালো লাগলো শুনে। কারণ আগের ছবিগুলোয় পুরোপুরি পুরুষ সংক্রান্ত থাকত। সম্প্রতি যেই ছবিগুলো করছি বিশেষ করে ওয়েব সিরিজে মহিলা চরিত্রে প্রচুর গুরুত্ব পাচ্ছে। এটার ক্রেডিট পুরোপুরি রাইটারদের। 

প্রঃ তুমি এত থ্রিলার কাজ করতে ভালোবাসো। তোমার জীবনে কি কোনও থ্রিলিং ঘটনা ঘটেছে?

সায়ন্তন ঘোষালঃ না, কখনও ঘটেনি। সিনেমা করতে ভাল লাগে কিন্তু আমি চাই না এরকম কোনও ঘটনা ঘটুক জীবনে।

প্রঃ ছোটবেলায় উৎসবের দিনগুলোয় তোমার জীবন কেমন কাটত আর এখন কেমন কাটে?

সায়ন্তন ঘোষালঃ ছোটবেলা থেকেই খুব বোরিং প্রকৃতির মানুষ আমি। রাত জেগে ঠাকুর দেখা কোনদিন করিনি। বন্ধুরা যেত। এখনও একই রয়ে গেছি। মেয়ের পাল্লায় পড়ে, বৌয়ের পাল্লায় পড়ে মাঝে-সাঝে যেতে হয়। কিন্তু বাড়িতেই থাকতে ভালো লাগে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...