মহাভারতের একলব্য আর দ্রোণাচার্যকে আজকের দর্শকদের সঙ্গে পরিচয় করাতে কেমন লাগল? টেলি সিরিয়াল থেকে অ্যাকশন মুভি- জার্নিটা ঠিক কেমন? টলিকথার আসরে অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালিত ‘একলব্য’ ছবি নিয়ে আড্ডায় দেবতনু ও জ্যামি বন্দ্যোপাধ্যয়।
প্রঃ এযুগের একলব্য- প্রথমেই একটু চরিত্র নিয়ে বলো।
দেবতনু ও জ্যামিঃ প্রথমত আমরা এই যুগের একলব্য সেইভাবেই বানাতে চেয়েছি। প্লটটা ট্রেলার দেখলে অনেকটাই রিভিল হয়ে যায়। কমার্শিয়াল সিনেমার ক্ষেত্রে গল্পটা খুব একটা বেশি কঠিন হয়না কারন ওটা ‘মাস অডিয়েন্সের’ জন্য ছবি। কিন্তু মাইথোলজিকাল কানেকশনে যেহেতু একলব্যর নতুন প্রেসেন্টেশন দর্শকদের জন্য আছে, একলব্য কথাও গিয়ে যারা বঞ্চিত, সেই মানুষদের দেখানো হচ্ছে স্ক্রিনে। আমার মনে হয়, যারা বঞ্চিত তারা অনেক বেশি রিলেট করতে পারবে কারণ আমরা প্রত্যেকে জ্যামিদা, অরিত্র, আমি, আমরা যেহেতু অর্জুনদের দিকটা সেটাও আমরা গল্পের মাধ্যমে বলছি যে ‘দিস শুড নট বি ডান’। সবসময় অর্জুনরা প্রেফারেন্স পাবে এটা হতে পারে না। যারা গুণী তাদের সবার আগে প্রেফারেন্স দেওয়া উচিত। ওটাই আমাদের গল্পের ফিলোসফি। সেটাকেই গল্পের মোড়োকে কমার্শিয়ালই কিভাবে আমরা প্রেসেন্ট করেছি এবং তার সঙ্গে মাইথোলজিকাল কনেকশন কি আছে এবং সবার ক্যারেক্টার কিভাবে ইনভল্ভড এই গল্পটার স্টোরি-টেলিং-এর মধ্যে সেটাই নিয়েই ছবিটা।
প্রঃ নেগেটিভ ক্যারেক্টরে কতটা এই ছবিতে পজিটিভ ভাইব পেলে দর্শকদের কাছ থেকে?
দেবতনুঃ যখন জ্যামিদা নেগেটিভ রোল করে, ভিলেন হয় তখন কোনও হিরো টিকতে পারে না।
জ্যামি বন্দ্যোপাধ্যয়ঃ এটা দেখার পরে পজিটিভ ভাইব আসবে না। পজিটিভ ভাইব আসার কোনও জায়গাই নেই। এটা এমন ভাবে হয়েছে, আমার যেই লুক অ্যান্ড ফিল পুরো ছবিটায়, এটুকু বলতে পারি ভয় পাবে লোকজন।
প্রঃ আজকের দ্রোণাচার্য, তোমার এই চরিত্রটা করে কেমন এক্সপিরিয়েন্স ছিল?
জ্যামি বন্দ্যোপাধ্যয়ঃ খুব চ্যালেঞ্জিং ক্যারেক্টর, হয়তো আমার প্রেসেন্সটা একটু কম আছে কিন্ত যেটুকু ছিল সেটা করা খুব টাফ আর আমি সেটা করেছি মানে আরিত্র বলেছিল যে আমি শুধু এইটুকুই চাইছি এর বাইরে নয়। তো সেটার মধ্যে নিজেকে বসানো তারপর পোট্রে করা, আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং লেগেছে।
দেবতনুঃ জ্যামিদা রিপ্রেসেন্ট দ্য পাওয়ার। যেরকম ধরো আমি যেখানে স্পিড রিপ্রেসেন্ট করেছি, মৃত্যুঞ্জয়ের ক্যারেক্টরটা কথাও গিয়ে দুটোই ব্যালেন্স করছে, পাওয়ার অ্যাংগার এবং স্পিড। যখন আমরা ক্যারেক্টার বাইফোকেশন করেছিলাম যে এই ক্যারেক্টার এই চরিত্র বহন করে, সেখান থেকেই বুঝেছিলাম যে জ্যামি দা রিপ্রেসেন্টস দা পাওয়ার। জ্যামিদার ক্যারেক্টার সামনে দাঁড়ালেই সবাই ঠান্ডা হয়ে যায়। সেখানে আমি স্পিড। ছবির ক্লাইম্যাক্সে দেখে বোঝা যাবে যে আমি হয়তো ২০ জনকে মেরে দিয়েছি কিন্তু জ্যামিদা একটা পাঞ্চ মারতেই আমি উড়ে গেছি। ওটাতেই বোঝা যাচ্ছে পাওয়ারটা। আমার মনে হয়েছিল যে জ্যামি দা এই চরিত্রের জন্যে ঠিকভাবে শুট করছে। কারণ সব কিছু একসঙ্গে যে ব্যালেন্স করতে পারবে, সেরকম ইন্ডাস্ট্রিতে একজনই আছে সেটা জ্যামিদা।
প্রঃ অ্যানমেরির সঙ্গে অভিজ্ঞতা কিরকম ছিল তোমাদের?
দেবতনুঃ ভীষণই ভালো। অ্যানমেরি খুবই সাপর্টিভ এবং ইন্ডি প্রোডাকশনে হওয়াতে চাপ থাকে যে অ্যাক্টরস শুড বি প্রোডাকশন ফ্রেন্ডলি। সেই দিক থেকে ভীষণ সহযোগিতা করেছে। আগেও এত কাজ করেছে মেগা সিরিয়ালে। কিন্তু সেখানে এইভাবে সাপোর্ট করেছে সেটাই অনেক।
প্রঃ এরম অ্যাকশন ছবির শুটিং-এর মধ্যে কোনও মজার অভিজ্ঞতা ঘটেছে?
জ্যামি বন্দ্যোপাধ্যয়ঃ হ্যাঁ। একবার সকাল ৭টায়, শীতকাল। আমাকে বলা হয়েছিল এন্ট্রি শট নেব একটা গেঞ্জি নিয়ে আসবে। তারপরে বলছে তুমি পুকুরে নামো। পাঁকের পুকুর, পা হড়কে যাচ্ছে। কোনরকম ভাবে ৮-৯ খানা টেক দিয়েছি। কাঁপছি। তবে শেষ পর্যন্ত পেরেছি দিতে।
প্রঃ এই রকম অ্যাকশন ছবি যখন ভাবলে ইউটিউবে রিলিজ করবে, এরকম চিন্তা কিভাবে মাথায় এল?
দেবতনুঃ ওই যে বললাম, মানুষের সাথে যখন সরাসরি ‘কমিউনিকেট’ করছি, তখন মনে হচ্ছে ওই টাকা, সময়, ডিস্টেন্স কভার করে দর্শকদের আনতে হয়, সেটা তারা কেন করবে। তাদের নিজেদের প্রচুর কাজ আছে। দর্শকদের যদি বলে ২০০ টাকা দিয়ে হলে এসে দেখতে, তাহলে কেউ দেখবে না। তাই, আমরা চেষ্টা করলে দর্শকরা আমাদের ভরসা করবে এবং সেটায় বড় প্রোডিউসারদের সুবিধে হবে এরকম ধরনের ছবি বানাতে।