'লার্নিং ডিজাবিলিটি' (Learning Disability) কী জন্মগত রোগ? বাচ্চাদের ওপর কী ভাবে প্রভাব পড়ে এই রোগের? কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন এই সমস্যা? কী ভাবে চিকিৎসা করা হয়? বিস্তারিত জানালেন সিনিয়র পিডিয়াট্রিক এবং নিউরো ডেভেলপমেন্টাল থেরাপিস্ট কাজী আরাফাত বাসির (Senior Pediatric & Neuro Developmental Therapist, Kazi Arafat Basir)
এই লার্নিং ডিজাবিলিটি কী আদেও কোনও সমস্যা? পিডিয়াট্রিক কাজী আরাফাত বাসির জানিয়েছেন যে লার্নিং ডিজাবিলিটি শব্দটা এখন অনেকের কাছে পরিচিত। কিন্তু এই রোগের সম্মন্ধে সবার কাছে সঠিক ধারণা নেই।
সম্প্রতি অনেক স্কুলে গরমের ছুটি শেষ হচ্ছে। এই সময় বেশ কিছু ছোট বাচ্ছারা, যারা সদ্য স্কুলের জীবন শুরু করছে। তাদের পড়াশোনায় বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। কিছু কিছু বাচ্ছারা বোর্ড ফলো করতে পারেনা, ঠিক করে পড়তে পারছে না, হাতের কাজ করতে পারছে না, লিখতে পারছে না কিংবা অন্যান্য বাচ্চাদের থেকে সে পিছিয়ে পড়ছে। এই সমস্যাগুলি অনেক সময় অভিভাবকেরা বুঝতে পারেন কিংবা স্কুলের টিচাররা কমপ্লেন করে যে বাচ্চাটির দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। এই সকল বাচ্চাদের মধ্যেই লার্নিং ডিজাবিলিটি রোগটি দেখা যাচ্ছে। এই বাচ্চাদেরকে 'হাই রিস্ক' বাচ্চা কিংবা তাদের বিশেষ নজর প্রয়োজন।
এই রোগটি বোঝার জন্য বাচ্চাটির বাবা মা কিংবা বাড়ির লোকজন এবং সমাজের যেই সমস্ত টিচার রয়েছে, তাঁরাই হল সবচেয়ে ভালো অভিভাবক।
বিজ্ঞান সম্মতভাবে দুটো ভাগে অ্যাসেসমেন্ট করা হয় - একটা হল নন স্ট্যান্ডারাইসড অ্যাসেসমেন্ট এবং ওপরটি হল স্ট্যান্ডারাইসড অ্যাসেসমেন্ট। শিক্ষকেরাই মূলত এই নন স্ট্যান্ডারাইসড অ্যাসেসমেন্টটা করে। সেখানে বোঝা যায় বাচ্চাটির কী কী সমস্যা রয়েছে।
ছোটবেলা থেকে এই সমস্যার কোনও চিকিৎসা না করলে বড়ো হয়ে অন্যান্য বিপদের মুখে পড়তে পারে তারা। যদি কোনও নিউরোলোজিক্যাল সমস্যা থাকে তাহলে সেটাকে এড়িয়ে না গিয়ে ভালো করে চিকিৎসা করলেই ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।
লার্নিং ডিজাবিলিটি কিংবা লার্নিং ডিফিকাল্টি, হল একটা নিউরোলোজিক্যাল সমস্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জন্ম থেকেই আসে এই রোগ।
কী কী ধরণের চিকিৎসা রয়েছে এই রোগের? এই বিষয়ে থেরাপিস্ট কাজী আরাফাত বাসির জানিয়েছেন যে তিনি নন স্ট্রাকচারাল ধরণে পড়াশোনায় কিছু প্রটোকল রয়েছে। সেগুলোর ওপর একটু নজর রাখলে, ব্রেনের কিছু ব্যায়ামের কাজ করলে, ইত্যাদি করলে সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে।
যেই সমস্ত বাচ্চারা টিন এজে পৌঁছেছে তাদের মেডিটেশন এবং কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কম বয়সী বাচ্চাদের প্রোগ্রামগুলো করলে কাজে দেবে ভালো।
আজকালের এই লাইফস্টাইলে বাচ্চাদের কতটা প্রভাব ফেলে? এই বিষয়ে থেরাপিস্ট কাজী আরাফাত বাসির জানিয়েছেন যে কিছুটা করে। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি, ফোন, এই ধরণের জিনিসের প্রভাব পড়ে বাচ্চাদের ওপর। তাই সামাজিক মেলামেশাটা বাচ্চাদের জন্য খুব প্রয়োজন।