ছয় মিনিট বই পড়ুন, দূরে থাকবে অ্যাংজাইটি

কিছুতেই স্ট্রেস কন্ট্রোল করতে পারছেন না-তাহলে নিয়ম করে বই পড়ুন বলছেন চিকিৎসকরা। বই কীভাবে মানসিক চাপ থেকে কমাতে পারে জানালেন, লেখিকা, মনোবিদ শুভ্রা শাহ Shubhra Shah (Author, Psychotherapist)

 মনোবিদ শুভ্রা শাহ জানিয়েছেন, যখন কেউ কাউন্সেলিং-এর জন্য তাঁর কাছে আসে তখন তিনি শুরু থেকেই পরামর্শ দেন রোজ বই পড়ার। বই পড়লে আমাদের মনের অস্থিরতা অনেকটা কমে আসে। হার্ট রেট কম হয়। তাতে মন হালকা বোধ করে।

আজকের প্রচন্ড গতির যুগে মানুষ সারাক্ষণ ছুটছে। এই দৌড় কখন পড়াশোনার জন্য, কখনও কেরিয়ারে জন্য আবার কখন চাকরি ক্ষেত্রে প্রমোশনের জন্য। নিজেকে দেওয়ার মতো সময় নেই তার। কারণ স্থির হয়ে বসতে গেলেই মনে হয় অনেকটা সময় বাজে খরচ হয়ে গেল। সঙ্গে আছে সম্পর্কের টানাপোড়েন।

এই ধরনের সমস্যায় কাজ দেয় বই। বই পড়ার সময় মানুষ শান্ত হয়ে যায়। মেডিটেশনের সময় যেমন সে স্থির হয়ে বসে তেমনি হয় বই পড়ার সময়। সাদা পাতায় কালো অক্ষরের গভীরে ডুবে গেলে মগজের কোলাহল থেমে যায়। যে কোনও বই সঙ্গী হতে পারে। এমনকি পাতলা ম্যাগাজিনও। তবে দারুণ ‘রিলিফ’দেয় শিশু সাহিত্য। হ্যারি পটার বা রূপকথার গল্প পড়তে বসলে যে কোনও বয়সের মানুষ এক অন্য দুনিয়ায় পৌঁছে যায়। সেই মুহূর্তের জন্য জীবনের সব জটিলতাকে ভুলে যেতে পারে সে।

তবে সাধারণের মধ্যে পড়ার অভ্যাস কমছে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও সিলেবাসের বাইরে আলাদা করে বই পড়ার অভ্যাস কমছে। স্কুল থেকে উৎসাহ দেওয়া হলেও বাড়ি ও অভিভাবককে লক্ষ্য রাখতে হবে। বাবা-মায়ের বই পড়ার অভ্যাস সন্তানদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে তারা কিছুটা হলেও অন্যদের থেকে এগিয়ে।

শিশু যখন বাড়ি থেকে স্কুলে পা রাখে তখন অনেক বদল আসে। সেখানে সব কিছুই তার কাছে অচেনা। তবে সব অপরিচিত ভিড়ে তার কাছে একমাত্র চেনা বিষয় পড়াশোনা যা তাকে নতুন পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। বাড়িতে বই পড়ার অভ্যাস তাকে পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে মিশে যেতে সক্ষম হয়। ভিন্ন মানুষ, সংস্কৃতিকে সহজভাবে গ্রহণ করার ক্ষমতা তৈরী হয় তার মধ্যে। যত বড় হয় তত বৃহত্তরে মিশতে পারে। এক্ষেত্রে সেতুর কাজ করে বই।

অ্যাংজাইটি এখম মহামারী। শিশু হোক বা বৃদ্ধ যে কেউ তার শিকার হতে পারে। সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়া, আর ক্যামেরার সামনে থাকার প্রবণতা তার মধ্যে একটা ভয় তৈরী করে। গুরুত্বহীন হয়ে যাওয়ার ভয় তাড়া করে। যদি আশপাশ ভুলে যায় তাকে! এই পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তাহলে মনোবিদের কাছ যাওয়াই বাঞ্ছনীয়।

বইপড়া থেরাপির কাজ করে। দ্বিতীয় হল এক্সারসাইজ। শরীর চর্চায় যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা শরীর মনে বদল আনে। মেডিটেশন অনেকরকমভাবে করা যেতে পারে। কেউ চাইলে গলফ কোর্সেও মেডিটেশন করতে পারে।

মেডিটেশন মানে নিজের শান্তি ও স্বস্তির জায়গায় যাওয়া। যা অ্যাংজাইটি কমায়। অন্যরা কী করেছে সেদিকে মন দিয়ে নিজেকে নিজের মধ্যে থিতু হতে হবে।

গবেষকরা বলছেন ছয় মিনিট বই পড়ুন, চাপই থাকবে না! মহাপুরুষদের জীবনী পড়াও যেতে পারে। তবে যে কোনও বই পড়া যেতে পারে। তবে ই-বুক নয় চিরচেনা বইয়ের পাতাতেই আছে চাপ মুক্তির সন্ধান।

      

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...