হট ফ্লাশ কী?

চল্লিশ বা তার চেয়ে বেশি বয়স্ক মহিলাদের মধ্যে প্রায় মেনোপজের সমস্যা দেখা দেয়। মেনোপজ শরীরে অন্যান্য সমস্যা ডেকে আনে‌। যার মধ্যে অন্যতম হল হট ফ্লাশ। এই সমস্যায় আপার বডির তাপমাত্রা বেড়ে যায়, রেড র‍্যাশ দেখা দেয় ও শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বেরিয়ে যায়। যার ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় মিনারেলের অভাব দেখা যায়। কিন্তু হট ফ্লাশের চিকিৎসা কী?

হট ফ্লাশের সমস্যা এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদে জানিয়েছেন ডায়েটিশিয়ান রাখী চট্টোপাধ্যায়

ডায়েটিশিয়ান রাখী চট্টোপাধ্যায়(Rakhi Chatterjee)জানিয়েছেন, মেনোপজ হল একধরনের ব্যায়োলজিক্যাল প্রসেস যেটা আফটার ফরটি মহিলাদের মধ্যে মাসিক চক্র চলে আসছে তা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে মহিলাদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন আসে। তাই প্রত্যেকটা মেয়ের কাছেই এই মেনোপজ খুব চ্যালেঞ্জিং।

এই মেনোপজের সময় মহিলাদের মুড সুউং হয়, ঘুমের সমস্যা হয়, ইউ.টি.আই-এর সমস্যা দেখা দেয়, এছাড়াও ইররেগুলার পিরিয়েডসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।আর এই মেনোপজের ফলেই হট ফ্লাশের সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে হট ফ্লাশ দেখা দিলে আপার বডি থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বেরোয়। শরীর গরম হয় যায়‌। এছাড়াও রেড র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। হট ফ্লাশের সমস্যা নিয়ে মানুষ এতদিন পর্যন্ত কোনও ভাবনা চিন্তা করত না। তবে সময় মতো এই সমস্যার সমাধান না করলে পরে আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। একদম শুরুর দিকেই যদি এই সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে কার্ডিয়াক প্রবলেম আসার সম্ভবনা তৈরি হয়।

এছাড়াও ওজন বেড়ে যেতে পারে হট ফ্লাশের ফলে। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে তাহলেই এই সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব। ওয়েট কন্ট্রোল রাখতে গেলেও সময় মতো খাওয়া দাওয়া করা খুব জরুরি। প্রত্যেকদিন চার ঘণ্টা পর পর কিছু না খেতে হবে। তবে ভাজা খাবার ও চিনি বেশি খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও কম নুন দিয়ে খাবার খেতে হবে। ফল খেতে হবে।

যেহেতু এই সময় শরীরে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায় তাই সোয়াবিন জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। পুদিনাপাতা ও শশা খাওয়া যেতে পারে। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে হট ফ্লাশের চিকিৎসা সম্ভব। এই থেরাপির মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ড্রাগ এক সঙ্গে শরীরে ইনজেক্ট করা হয়। কিন্তু অনেক সময় হরমোন থেরাপি বন্ধ করে দেওয়ার পর আবার হিট ফ্লাশের সমস্যা ফিরে আসে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই হরমোন থেরাপি বন্ধ করতে হবে। এই সময় মহিলাদের মুড সুউং করে। তাই এই সময় মন ভালো থাকতে ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন- ডার্ক চকলেট খাওয়া যেতে পারে। যার ফলে মুড ভালো থাকে। তরমুজের বীজেও অনেক মাইক্রো নিউট্রেশান থাকে। তাই এই বীজ ডাস্ট করে টক দই খাওয়া দেওয়া যেতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধে এক চিমটে হলুদ,ঘি ও মধু মিশিয়ে খেতে হবে। চল্লিশ থেকে ষাট বছর বয়সী সব মহিলাদের মধ্যেই এই মেনোপজের সমস্যা দেখা যায়। আর মুড সুউং-এর সমস্যাটি নিয়েও সচেতন না। তাই পরিবারের সবাইকেও এই সময় তাদের পাশে থাকতে হবে। এই সমস্যার এড়িয়ে চলতে গেলে যোগা ও ওয়াটার মেডিটেশন করা যেতে পারে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, তাহলে এই সব শারীরিক সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...