রঙের উৎসব তাঁর কাছে সবসময় অত্যন্ত বিশেষ। সুরে সুরে, রঙ রঙে রঙিন হয়ে ওঠে তাঁর বসন্ত। তবে তিনি একা মাতেন না এই রংমিলন্তি খেলায়, সঙ্গী করেন আরও বহু মানুষকে। শিল্পীর নাম ইমন চক্রবর্তী। গত সাত বছর ধরে নিজের শহর হাওড়ায় তিনি আয়োজনে করে আসছেন বসন্ত উৎসবের। রাশি রাশি রাঙা হাসি, আবিরে পলাশে, এ এক অন্যরকম বসন্ত উৎসব। লিলুয়া মীরপাড়ার মাঠে নদীর দুই তীর মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় রঙের বন্যায়। কিন্তু দোলের দিনটি কেমন কাটে শিল্পীর?
'জিয়ো আড্ডা উইথ অনিন্দিতা সরকার' শোয়ে আজ অতিথি সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী। এবারের দোলে স্পেশ্যাল প্ল্যান কী, কীভাবে মেতে উঠবেন রঙের উৎসবে তাঁর মুখে শুনুন সেই কথা।
প্রঃ কখনও ভেবেছিলে তুমি আজকে যে জায়গায় আছো সেই স্বপ্নকে স্পর্শ করতে পারবে, নাকি শুধুই ভালোবাসার টানে?
ইমন চক্রবর্তীঃ আমার কখনও এই ক্রাইসিসটা ছিল না যে বড় হয়ে কী করব। আমি ছোট থেকেই জানতাম গানটাই গাইব। আমি জানি না আমি কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, তবে জানি অনেকটা পথ চলতে হবে। আমি শুধুই সঙ্গীতের ছাত্রী। কত গুণী মানুষরা এই সময় আছেন, সার্ভ করছেন আমাদের, আমি যদি কোনভাবে তাঁদের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে পারি তাহলে বুঝব সত্যি সত্যিই আমি ঈশ্বরের আশির্বাদধন্যা।
প্রঃ তুমি একটা রিয়েলিটি শোয়ের মেন্টর, আমাদের সময়ে আমরা যে কোনও আর্ট ফর্মের সঙ্গে যখন যুক্ত থাকতাম তখন বাবা-মা কখনও বলে দিতেন না, এটা শিখছ বলে ওখানে যেতে হবে, এখন সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে…
ইমন চক্রবর্তীঃ ইনফ্যাক্ট আমার কাছে অনেকে শিখতে আসে, তাদের কোনও বক্তব্য থাকে না কিন্তু তাদের বাবা-মাদের বক্তব্য থাকে ‘আচ্ছা আমার ছেলে মেয়ে কি ওই রিয়েলিটি শোয়ে গান গাইতে পারব?’ আমি তাদের পরিষ্কার বলে দিই ‘আপনি পরদিন থেকে আর আপনার ছেলেমেয়েকে আনবেন না’। তাঁদের এই ধারণাটা খুব ভুল। অভিভাবকদের ছেলেমেয়েদের এটা বলা উচিত যে তুমি একজন স্তম্ভ হবে। তুমি একজন ইন্সটিটিউশন হবে। এটা তাঁরা করেন না। আমি প্রত্যক্ষ করেছি বলেই বলছি। আমার কাছে বলা হয়েছে। ‘আপনি একটু কিশোর কুমারের গান শিখিয়ে দেবেন বা অমুক রিয়েলিটি শোতে গাইবে’। আমার তো ওটা সাবজেক্ট না। আমার কাছে যেটা শিখতে আসবে তাকে সেটাই মন দিয়ে ভাল করে শিখতে হবে।
প্রঃ এখন সুযোগ অনেক বেশি, রিয়েলিটি শোইয়ের প্লাটফর্মে এই যে এত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসছে মেন্টর হিসেবে তোমার ভূমিকা কেমন?
ইমন চক্রবর্তীঃ জানিনা আমাকে অনেকেই বলে আমার উপস্থিতিটা তাদের মধ্যে পজিটিভিটি এনে দেয়। আমি সেই পজিটিভিটিটাই ছড়াবার চেষ্টা করি। মেন্টালি বুস্ট করার চেষ্টা করি। বলি ‘ পারতে হবে’। আর এটুকু বলি ‘যতই ওপরে ওঠো না কেন পাটা যেন মাটির সঙ্গে থাকে’। বাদ বাকি আমি জানি সামান্যই। আমি কী শেখাবো আমার সেই ক্ষমতাই নেই। যেটুকু শিখেছি আমি এক্সচেঞ্জ করতে পারি। ওদের থেকেও আমি অনেক শিখি।
প্রঃ তোমার জাতীয় পুরস্কার আমাদের জন্য খুব আনন্দের, কিন্তু তার একটা ভার আছে, সেটা কী করে সামলাও?
ইমন চক্রবর্তীঃ আমি জানি ভাল বা খারাপ কোনওটাই স্থায়ী নয়, স্থায়ী হল ব্যবহার।
প্রঃ সামনেই দোল, তোমার প্ল্যান কী?
ইমন চক্রবর্তীঃ ১৭ তারিখ সবে বসন্তোৎসব করলাম। ম্যাসিভ সাড়া পেয়েছি সবাই পাশে থেকেছে। এই দোলে আমি শান্তিনিকেতনে থাকব। ৭ তারিখ আমার একটা গানের শো আছে, শান্তিনিকেতনে গান গাইব। সেই নিয়ে খুব উত্তেজিত।
প্রঃ তুমি খুব শরীর সচেতন, তুমি যোগা করো। তুমি শেয়ার করেছিলে ফিজিক্যালি ভাল থাকার জন্য তুমি আরও বেশি যোগা ভালবেসেছ।
ইমন চক্রবর্তীঃ হ্যাঁ, কিছু শারীরিক সমস্যা হয়েছিল এবং সেটা যোগা, শরীরচর্চা ছাড়া কোনভাবেই কমত না। এখন আমি রানিং-এর ওপর কনসেনট্রেট করছি। আধঘন্টা যখন দৌড়চ্ছি তখন ফুল কনসেনট্রেট করছি নিজে ওপর। এটাই একটা মেডিটেশন।