হার্নিয়া চিকিৎসা পদ্ধতি কী?

হার্নিয়া সাধারণত পুরুষদের অসুখ নামে পরিচিত হলেও মহিলাদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা যায়। বিশেষত পেট ও কুঁচকিতে এই সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে কুঁচকিতে হার্নিয়া বেশি দেখা যায়। তবে এই সমস্যা দেখা দিলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিন্তু এই সমস্যার চিকিৎসা করা হয় কীভাবে?

এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন চিকিৎসক ডাঃ বি. রামানা

চিকিৎসক ডাঃ বি. রামানা (Dr B.Ramana) জানিয়েছেন, হার্নিয়া হলে পেট অথবা কুঁচকির একটি অংশ ফুলে যায়। কখনও ব্যথা অনুভব করা যায়। হার্নিয়া হল পেটের চামড়ার মধ্যে থাকা একটি ফুটো বা গ্যাপ। এই গ্যাপ দিয়েই যখন অন্ত্র বা চর্বি যখন বাইরে বেরিয়ে আসে তখন জায়গাটা ফুলে যায়। হার্নিয়া অনেক প্রকারের হয়। খুব সহজ করে বললে রোগীর অপারেশনের জায়গায় হলে সেটাকে বলা হয় ইনসিসনাল হার্নিয়া। এছাড়াও আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া যা জন্ম থেকেই রোগীর রয়েছে। এই দুই ধরনের হার্নিয়াই পেটের উপরে হয়। অন্যদিকে সবচেয়ে কমন যে হার্নিয়া হয় সেটি হল ইনগ্যুইনাল হার্নিয়া। এই ধরনের হার্নিয়া সাধারণত পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। এই হার্নিয়া কুঁচকির দিকে হয়। হার্নিয়ার মূল সমস্যা হল যখন তখন একটা কমপ্লিকেশন অ্যারাইভ করতে পারে। অন্ত্রটা পেটের নিচ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। যখন অন্ত্র বাইরে বেরিয়ে আসে তখন প্রাণ হারানোরও সম্ভবনা রয়েছে। তাই আগেই চিকিৎসা করা উচিত।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী অনেক পরে চিকিৎসা শুরু করেন যার ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা থেকেই যায়। এতদিন ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি মাধ্যমে হার্নিয়ার চিকিৎসা করা হতো। কিন্তু এখন রোবটিক্স টেকনোলজি মাধ্যমে হার্নিয়া চিকিৎসা করা হয়। আজকালকার দিনে এই রোবটিক্স টেকনোলজির উপর নির্ভর করেই সার্জারিও করা সম্ভব হচ্ছে। যার ফলে খুব কমপ্লেক্স অপারেশনের সময় অনেকটাই চাপ কমে গেছে। হার্নিয়ার অপারেশনের একদিনের মধ্যেই সমস্ত কাজ করতে পারবে রোগী। তাতে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

যাদের বহুবার অপারেশন হয়েছে, শরীরের ফ্যাট রয়েছে বা অন্য কোনও কারণে মাংস পেশীতে চাপ পড়ছে তাহলেই হার্নিয়া হতে পারে। তবে অপারেশন ফলে যে হার্নিয়া দেখা দেয়, সেটিকে আমরা প্রিভেন্ট করতে পারি। অপারেশনের সময় একটি ছোট মেস লাগিয়ে দেওয়া হয় হার্নিয়া প্রিভেন্ট করার জন্য। এছাড়াও যদি ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি করা হয় তাহলে হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

তবে রোগীকেও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যাতে হার্নিয়া না হয়। ওজন কমাতে হবে, ধূমপান করা বন্ধ করতে হবে, যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের খাওয়া দাওয়া ঠিক করতে হবে। তবে শুধুমাত্র রোগীর বয়স বেশি হলেই যে অপারেশন ফেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন নয়। কিন্তু যদি রোগীর অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে অপারেশন সাকসেসফুল হওয়া নিয়ে একটা চিন্তা থেকেই যায়। হার্নিয়া দেখা দিলে সাধারণত পেট অথবা কুঁচকির ফুলে যাওয়া অংশেই ব্যথা অনুভব করা যায়। কিন্তু এই ব্যথা যখন তীব্র হবে তখন রোগীর শীঘ্র চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। পুরুষদের কুঁচকির কাছাকাছি একটি জন্মগত গ্যাপ রয়েছে। এই গ্যাপের ফলেই পুরুষদের মধ্যে হার্নিয়া হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। হার্নিয়া হলে খাওয়া দাওয়ার পরিবর্তন করার দরকার নেই। কিন্তু হার্নিয়ার অপারেশনের আগে ওজন কমাতে হয়। সেই কারণেও অনেক সময় খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হতে পারে। তবে কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিত। তাহলেই সুস্থ থাকবে শরীর।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...