আগে হাড়ের সমস্যা শুনলেই মনে হত এতো বার্ধ্যকের সমস্যা, কিন্তু এখন হাড়ের অসুখ আর বয়স মানে না। শিশু থেকে তরুণতরুণী ভুগছেন হাড়ের অসুখে। নেপথ্যে অবশ্য কারণ এক নয়, বহু। জাঙ্কফুড, খাওয়ার অভ্যাস, শোয়ার অভ্যাস সবই প্রভাব ফেলছে হাড়ের স্বাস্থ্যে।
হাড় মজবুত করতে প্রতিদিন মেনুতে থাকতেই হবে কোন কোন খাবার, জানালেন নিউট্রিশনিস্ট ডাঃ সুচরিতা সেনগুপ্ত (Dr. Sucharita Sengupta, Consultant Nutritionist)
নিউট্রিশনিস্ট ডাঃ সুচরিতা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হাড়ের সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে সচেতনতার অভাব। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে কাজের ধরণ, জীবনযাত্রায় হঠাৎ বদল, খাবারদাবার যা খাচ্ছে সেগুলো স্বাস্থ্যকর তো নয়ই, বরং স্বাস্থ্যের ক্ষতিই করছে। বাচ্চাদের অত্যাধিক ফাস্ট ফুড খাওয়ার প্রবণতা হাড়ের ক্ষতি করছে। ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের যদি এমনভাবে তৈরী করা যায় যে তারা এমন খাবার পছন্দ করবে যা হেলদি হবে তা তাদের জন্য ইতিবাচক। জাঙ্কফুড মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেটাই অভ্যাস হয়ে গেলে মুশকিল।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর জন্য যে সমস্ত সাপ্লিমেন্টস ফুড পাওয়া যায় সেগুলো কখনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো বাইরে থেকে খাওয়া ঠিক নয়।
প্রতিদিনের জীবনে স্বাভাবিক ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার দুধ, দই, বিভিন্ন রকমের বাদাম, দানাজাতীয় শস্য, পোস্ত, তিল ভীষণভাবে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। শাকসব্জিও খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরী।
ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। তাই ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি খেতে হবে ভিটামিন ডি। নাহলে যতই ক্যালসিয়াম খাওয়া হোক না কেন, কোনও কাজ হবে না। মাশরুম, ডিমের সাদা অংশ, ম্যাকারেল, স্যামন, সার্ডিন, হেরিং এইসব মাছেও ভিটামিন ডি আছে।
যাদের দুদ্ধজাত খাবারে সমস্যা তারা শাকসবজি খেতে পারেন। নিরামিষভোজীদের মধ্যে ভিটামিন ডি’র অভাব খুব বেশি মাত্রায় দেখা যায়। তাঁরা প্রাণীজ প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে আঞ্জীর, বাদাম এইসব দিয়ে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে পারেন।
অত্যাধিক ওজন, ওবিসিটি হলে হাড়ের সমস্যা হয়। তখন প্রতিদিনের ডায়েটে ফ্যাটি ফিশ বা এই গোত্রের খাবার রাখা হলে ক্যালরি ক্যালকুলেশন সেভাবেই করা উচিত।
হাড়ের সমস্যা থেকে বাঁচতে ধূমপান, অ্যালকোহলের অভ্যাস থেকে দূরে থাকায় বাঞ্ছনীয়। নেশার বদভ্যাস হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িইয়ে দেয়।