কিডনির সমস্যার চিকিৎসা কী?

কাজের ব্যস্ততায় বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা। অনেকসময় কাজের ঘড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে পাল্টে যাচ্ছে রোজকার রুটিন। দেখা দিচ্ছে নানান রোগ-অসুখ। আজকাল আর কিডনির সমস্যা শুনলে অবাক হয় না মানুষ, কিন্তু দুশ্চিন্তায় ভোগে। কিডনির সমস্যা থেকে এড়িয়ে চলতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত আবশ্যক। সেই নিয়মগুলি সম্পর্কে জানিয়েছেন চিকিৎসক ডাঃ শঙ্কর কুমার চট্টোপাধ্যায়।

চিকিৎসক ডাঃ শঙ্কর কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন,   দেশের আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে শরীরে নুনের প্রয়োজনীয়তা। পশ্চিমবঙ্গে খুবই আর্দ্রতা বেশি। যার ফলে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ঘাম কম হয়। তার জন্য ৬-৮ গ্ৰাম নরমাল সল্ট ইনটেক করতে হবে। পশ্চিমী দেশগুলিতে সল্ট ইনটেক ৪-৬ গ্ৰাম দরকার হয়। মানুষের শরীর খুবই সেনসিটিভ। তাই শরীরে যতটা নুনের প্রয়োজন জিভ ততটাই নুন নেয়। কোনও জিনিসে বেশি নুন থাকলে সেটা আর খেতে ইচ্ছা করবে না। যাদের কিডনির সমস্যা, হাই ব্ল্যাডপ্রেসারের সমস্যা ও ইউরিন আউটপুট যাদের ভালো নয়। কিন্তু তাও যদি তাঁরা যদি পরিমাণের বেশি নুন খেয়ে ফেলেন তাহলে জল তেষ্টা পাবে বা কার্ডিয়াক রোগী হলে তার শরীরে ফ্লুইড ডিটেনশন হতে পারে। ন্যাচরাল সল্টে এমন কিছু জিনিস রয়েছে যা শরীরের কাজে লাগে।

সাধারণত আমাদের আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া উচিত। কিন্তু খুব ঠান্ডা জায়গায় থাকলে শরীরে জলের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কলকাতার মতো গ্ৰীষ্ম প্রধান শহরে মানুষের প্রচুর ঘাম হয়। তাই বেশি পরিমাণে জল খেতে হয়। তবে যার ইউরিন আউটপুট জিরো তার ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে জল খাওয়া উচিত নয়। সারা দিনে তাকে সাড়ে সাতশো এম এল বা আটশো এম এলের বেশি জল খাওয়া উচিত নয়।

তবে কিডনির সমস্যার যদি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হয়, তাহলে সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু কিডনি সমস্যা দেখা দিলে সহজে তা বোঝা সম্ভব না। আসলে কিডনির অসুখ অনেক রকমের হয়। গ্ৰোমেরুলার ডিজিস হতে পারে ইন্টারস্টেসিয়াল ডিজিস হতে পারে। সব কিডনির রোগের লক্ষণ এক নয়। গ্ৰোমেরুলার ডিজিস হলে প্রোটিন লিক করে। পা ফুলে যায়, মুখ ফুলতে শুরু করে, অ্যাডভান্স স্টেজে গিয়ে শ্বাস কষ্ট হয়। যদি ইন্টারস্টেসিয়াল ডিজিস থাকে তাহলে তা ধরা অনেক মুশকিল। এই সমস্যা হলে হিমোগ্লোবিন কমতে শুরু করে, এই সময় হাঁটা হাঁটি করলে তাড়াতাড়ি হাপিয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। ডায়বেটিক কিডনি ডিজিস থাকলে সুগার কন্ট্রোল ইনসুলিনের মাধ্যমেই করতে হবে। এখন ৭.০ নীচে রাখতে হবে। আর ব্ল্যাড প্রেসার নরমাল রাখতে হয়।

খাওয়া দাওয়া খুব একটা ক্ষতি করে না কিডনির। তবে ধূমপান করলে বা বেশি অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য পান করলে কিডনির ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু মেইনটেইন করে অ্যালকোহল খেলে শরীর সুস্থ থাকে। ওবিসিটি থেকেও কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই জাঙ্ক ফুড খাওয়া কমাতে হবে। এছাড়াও ইউনিরন চেপে রাখার ফলে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন দেখা দেয়। যার ফলে কিডনিরও ক্ষতি হতে পারে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...