মনের যত্ন নিন

শরীর না মন? এই প্রশ্নের উত্তরে অবধারিতভাবে উত্তর আসে শরীর। কিন্তু মন? মন না ঠিক থাকলে শরীর কি ঠিক থাকে? আসলে শরীর আর মন সমান-সমান। তাই শরীরের পাশাপাশি মন ঠিক রাখাও একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। দুই স্বাস্থ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে শরীরের সমস্যা নিয়ে মানুষ যতটা কথা বলে, মনের স্বাস্থ্য নিয়ে ততটা কথা হয় না। অথচ সব বয়সী মানুষের মধ্যেই মানসিক সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ও লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানালেন মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কনসালটেন্ট ডাঃ নীলাঞ্জনা পাল।

মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কনসালটেন্ট ডাঃ নীলাঞ্জনা পাল, মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক রোগ নিয়ে সেভাবে কথা হয়ে না বললেই চলে। চিকিৎসার বদলে মানসিক সমস্যাগুলোকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টাই মানুষ বেশি করে। কিন্তু শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা জরুরি ঠিক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখাও খুব জরুরি। মানসিক রোগের লক্ষণ সব সময় শারীরিক কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পাবে। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে যে কোনও কাজ করার কনফিডেন্ট, ইমোশন, ভালোলাগা বা খারাপ লাগা বদলাতে শুরু করবে। মানসিক অবসাদের ফলেও এই পরিবর্তনগুলো আসতে পারে। প্রায় সব বয়সের মানুষের মধ্যেই এই মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে। তাই মানসিক রোগ হলে সেটা লুকিয়ে না রেখে বরং তার চিকিৎসা করা উচিত।

ডিপ্রেশন বা মন খারাপ মানসিক রোগের খুব কমন একটা নাম। এমনি বিভিন্ন ধরনের অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, বাইপোলার এফেক্টিভ ডিসঅর্ডারের মতো কিছু সমস্যা রয়েছে। এই ধরনের সমস্যা হলে অবশ্যই সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট সোশ্যাল ওয়াকার ও সাইকিয়াট্রিস্ট নার্সের কাছে নিজের সমস্যার কথা জানাতে হবে।

কিছু কিছু রোগ আছে যা বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। যেমন- ডিমেনশিয়া। এই রোগে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও এলি.এইচ.ডি এমন একটি রোগ যেটা শিশুদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। যার ফলে শিশুরা বেশি চঞ্চল হয় ওঠে। অন্যদিকে মহিলাদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ডিপ্রেশন সমস্যা দেখা দেয়। চার মহিলাদের মধ্যে অন্তত তিন জনের এই সমস্যায়। বর্তমান সময় আমরা অনেকেই দেখেছি বেশ কিছু তারকা মানসিক চাপ না সামলাতে পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এই ঘটনাগুলো ঘটার কারণ হল সঠিক সময় তাদের সমস্যার উপর নজর না দেওয়া। সব সময় মাথা রাখতে হবে যে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়ার আগে তারা একবার হলেও তাদের সমস্যার কথা নিজের কাছের মানুষদের জানানোর চেষ্টা করবে। তখন তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাহলেই তারা কনফিডেন্ট পাবে।

তবে মানসিক চাপ বা সমস্যা এড়িয়ে চলতে হলে সকলকে  লাইফস্টাইল ঠিক রাখতে হবে। তার জন্য প্রতিদিন এক্সারসাইজ করতে হবে, সঠিক সময়ে খাবার খেতে হবে, দিনে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমনো চেষ্টা করতে হবে, কিছু সময় অন্য মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে, ফ্রি টাইমে নিজের পছন্দের কাজটা করতে হবে। যাতে মন খুশি থাকে। তবে কোনও মানসিক সমস্যার লক্ষণ বুঝতে পারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...