জন্মদিনে বাংলা ছবির এক অনন্য ‘ঋতু’

বাংলা সিনেমা যে সময় মননশীল দর্শকদের ত্রিসীমানার বাইরে চলে যাওয়ার জন্য একেবারে প্রস্তুত, ঠিক সেই সময়ই বাংলা ছবির ঋতু পরিবর্তনের জন্য আবির্ভূত হয়েছিলেন এক ঝকঝকে অভিব্যক্তির প্রতিভাশালী তরুণ।
সত্যজিৎ, মৃণাল, ঋত্বিক, তরুণ, বুদ্ধদেব, গৌতম –এঁদের মতো পরিচালকদের হাত ধরে বাংলা ছবির যে পরিভাষা আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিতি পেয়েছিল, তা অবলুপ্তির আগেই আবার স্বমর্যাদায় ফিরিয়ে এনেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ
তিতলি, উনিশে এপ্রিল, দহন, বাড়িওয়ালি, অসুখ, উৎসব, শুভ মহরত, চোখের বালি, রেইনকোট, অন্তরমহল, দোসর, সব চরিত্র কাল্পনিক, আবহমান, আরেকটি প্রেমের গল্প, নৌকাডুবি, চিত্রাঙ্গদা, সানগ্লাস, মেমোরিজ ইন মার্চ, জীবনস্মৃতি, সত্যান্বেষী, খেলা, দ্য লাস্ট লিয়ার -তাঁর পরিচালিত প্রায় প্রত্যেকটি ছবিতেই ধরা পড়েছে পারিবারিক বা মানবজীবনের পারস্পরিক সম্পর্কগুলোর মধ্যকার জটিল মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন। সাবলীল ভাষায় ছবি বানাতেন অথচ প্রত্যেকটিই হয়ে উঠত আদ্যন্ত সাহিত্য। তাঁর ছবিতে, তাঁর আয়নায় তিনি যেমন নিখুঁতভাবে, যত্ন নিয়ে মহিলাদের মন এবং সামাজিক অবস্থান ফুটিয়ে তুলতেন, তেমনটা খুব কম জনই পেরেছেন। ২১ বছরের পরিচালক জীবনে তিনি মোট ১৯টি ছবি বানিয়েছিলেন, যার মধ্যে ১২টিই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত
শিক্ষা-মেধা-জ্ঞান-প্রতিভা সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন অতুলনীয়। সব পেয়েও নিজের জগতের একাকী সম্রাট হয়েই থেকে যেতে হয়েছিল তাঁকে, তাই অনেকটা সন্ধ্যের পাখি’র মতোই বিষাদের সুর নিয়ে অসময়ে চলে গিয়েছেন তিনি। আজ ৩১ আগস্ট, তাঁর ৫৬তম জন্মবার্ষিকীতে জিয়ো বাংলার পক্ষ থেকেই রইল এই স্মরণিকা।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...