অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মেলিটাসের লুকানো বিপদ কোনগুলি? নিয়মিত চেকআপে থাকা কেন জরুরি? এই রোগ শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলি কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে? টিপস দিলেন বিশিষ্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ সুব্রত চক্রবর্তী (Dr Subrata Chakrabarti, Endocrinologist)
হাইলাইটসঃ
১। ডায়াবেটিস কী মারণাত্মক হতে পারে?
২। এই রোগ কীভাবে শরীরের উপরে প্রভাব ফেলে?
৩। নিয়মিত চেকআপে থাকা কেন জরুরি?
ডায়াবেটিস কী মারণাত্মক হতে পারে?
অনেকেই ডায়াবেটিস রোগকে সাইলেণ্ট কিলার হিসেবে অভিহিত করেন। কারণ, এই রোগের ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। তাই এই রোগ শুধুমাত্র রক্তে অনিয়ন্ত্রিত শর্করার রোগ নয়। এটি দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে থাকলে, এর প্রভাবে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক অবধি হতে পারে। যা মারণঘাতী।
এই রোগ কীভাবে শরীরের উপরে প্রভাব ফেলে?
ডায়াবেটিস রোগের ফলে শরীরের নানা অর্গান ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এরমধ্যে অন্যতম হল হার্ট। হার্টের রোগকে মূলত রক্তবাহকজনিত অসুখ নামে অভিহিত করা হয়। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগের প্রভাবেও হার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিক না থাকলে, শরীরে স্বাভাবিক রক্তচলাচল ব্যহত হয়। ফলে হার্টের সমস্যা বাড়তে থাকে।
কত বছর বয়সের পর থেকে ডায়াবেটিসের প্রাধান্য দেখা যায়?
ওয়েস্টার্ন লিটারেচার অনুযায়ী, ৫০ বছর বয়সের পর থেকে পুরুষ ও নারীদের শরীরে ডায়াবেটিসের প্রাধান্য বেশী দেখা যায়। কিন্তু বতর্মানে ভারতবর্ষে ৩০ থেকে ৪০ বছরের কাছাকাছি মানুষেরা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি কী কী?
এই রোগে আক্রান্ত হলে, প্রথমদিকে ডায়াবেটিস শরীরে বিশেষ পার্থক্য দেখা যায় না। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি শরীরে প্রভাব বিস্তার করে। এই অসুখের অন্যতম কিছু লক্ষণগুলি হল –
১। হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
২। কাজে এনার্জি না পাওয়া
৩। চোখের পাওয়ার চেঞ্জ
৪। বার বার প্রস্রাব
৫। অতিরিক্ত জল চেষ্টা
এই কারণে ৩৫ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিতভাবে ডায়াবেটিস বা সুগারের পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
এই রোগ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পাওয়া কষ্টসাধ্য। কিন্তু বর্তমানে ৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারে। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
১। নিয়মিত এক্সারসাইজ
২। ওজন কমাতে হবে
৩। স্থাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে
ডায়াবেটিস কী মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে?
হ্যাঁ, ডায়াবেটিস মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই রোগের ফলে অস্বস্তি, ডিপ্রেশন দেখা যেতে পারে। এর ফলে রোগীর মধ্যে হতাশা বা গ্লানি দেখা যেতে পারে।
বাচ্চারা সাধারণত ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়না। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রচুর পরিমাণে ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে অনেক বাচ্চাদের শরীরে ডায়বেটিস রোগ দেখা দিচ্ছে।
এই রোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকেই সুষম খাবারের প্রতি আকর্ষিত করতে হবে। এছাড়াও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এর ফলে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক গঠন ভালো হবে ও তারা সুস্থ থাকবে।