কীভাবে নিজের দক্ষতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবেন?

সাফল্যের ময়দানে সেরা অস্ত্র আত্মবিশ্বাস (Confidence)! নেগেটিভ ভাবনা (Negative Thoughts) সরিয়ে কীভাবে মোটিভেট (Motivate) করবেন নিজেকে? কীভাবে নিজের দক্ষতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবেন? মনের জোর আর সুস্থ আত্মবিশ্বাস (Healthy Self-Confidence) গড়ে তোলার কৌশল কী?  উপায় জানালেন ক্যান্ডিড কমিউনিকেশনের ডিরেক্টর পারমিতা ঘোষ (Paromita Ghosh, DIRECTOR, CANDID COMMUNICATION)

সৌন্দর্য আত্মবিশ্বাসের একটা ছোট্ট ভাগ। কারণ ব্যক্তিত্বর মধ্যে আরও অনেক দিক থাকে যা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র-এই ভাবনা মিথ ছাড়া আর কিছুই নয়। ফর্সা রঙ, সুন্দর মুখকে সমাজে সব সময় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হিন্দির প্রবাদ 'পহলে দর্শনধারী ফির গুণ বিচারী'- বহুদিন ধরে এই ভাবনা সমাজের সর্ব স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে কিন্তু আজকের পৃথিবী অন্য কথা বলে। যদি সেরা দশ ক্ষমতাশালী মহিলার তালিকা দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে যে সেখানে কি সবচেয়ে সুন্দরী মহিলারা রয়েছে? তাহলে কেউ কীভাবে বলতে পারে এই প্রবাদ? তাহলে কীভাবে মাদার টেরিজার সৌন্দর্য, দ্রৌপদী মুর্মুর আত্মবিশ্বাস, পিটি ঊষার জিত এই সাফল্যকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা হবে? এঁরা কি সুন্দর নন?  প্রশ্ন আসবেই তাহলে শুধু সৌন্দর্য-এর ওপর ফোকাস কেন?

সৌন্দর্য কোনও কোনও সময় একটা শুধু প্লাটফর্ম দেয়। যদি দীপিকা পাদুকনের দিকে দেখা যায় তাহলে এই দিকটি আরও স্পষ্ট হবে। দীপিকা অসাধারণ সুন্দরী। তবু চরম ডিপ্রেশনের শিকার তাকে হতে হয়েছিল এক সময়। যখনও সে নিজের আসল ক্ষমতাকে শান দেওয়া শুরু করল তখনই ঘুরল তার কেরিয়ারের চাকা। আজ গোটা পৃথিবীতে দীপিকা ফেনমেনন। নিজের ভিতরের গুণ সে ঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পেরেছে তাই দীপিকা আজ এই জায়গায়। যখন মানুষ কোমরের মাপ, গায়ের রঙ, চুলের ঘনত্ব, উচ্চতা নিয়ে মন্তব্য করবে তখন তাদের জানিয়ে দেওয়া দরকার রূপ কখনই একটা মানুষের সামগ্রিক অংশ নয়। তার মধ্যে অনেক দিক আছে। মানুষ অনেক গুণ আর বিশেষত্ব নিয়ে জন্মায়। সেসব খুঁজে বের করাই জীবনের উদ্দেশ্য। তবেই খুঁজে পাওয়া যাবে এগোনোর পথ।

একটি মেয়ে যখন জন্মায় তখন তার চারপাশ শুধু তার অপেক্ষাকৃত দুর্বল দিকগুলিকে খুঁজে বের করে আঙুল তুলতে শুরু করে। শরীরের গঠন, গায়ের রঙ এসব নিয়ে তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা করা হয়। এই পরিস্থিতিতে নিজের প্রতি বিশ্বাস হারালে চলবে না। খুঁজে বের করতে হবে নিজের দক্ষতার জায়গা। প্রতিদিন ঘষে মেজে তাকে ঝকঝকে আর ধারালো করে তুলতে হবে। একদিন সেই দক্ষতার l তৈরি হবে পরিচিত। খেলার মাঠ থেকে রাজনীতি বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু নক্ষত্র বারবার প্রমাণ করে দিয়েছেন এই সত্য। এই আত্মবিশ্বাসটাই তৈরি করতে হবে। এই পথে চলতে গিয়ে অনেকে সঠিক পথ দেখানোর মানুষ খুঁজে পায়, আর অনেককে একাই খুঁজতে হয় পথের দিশা। নিজেই হতে হয় নিজের গাইড। নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে প্রথমে তারপর দেখতে হবে কীভাবে দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠা যায়। সব থেকে জরুরি নিজেকে ভালবাসা। ভারতীয় মহিলাদের ছোটবেলা থেকে শিখিয়ে দেওয়া হয় পরিবার সব কিছুর ওপরে। পরিবারকে ভাল রাখাই তার কর্তব্য। সেখানে তার নিজের স্বপ্ন, জীবন তুচ্ছ। সে ভুলে যায় নিজের অস্তিত্ব। কিন্তু এ কথা মনে রাখা দরকার কেউ যদি নিজে খুশি না থাকে তাহলে তার প্রভাব পড়বে তার সব কাজে। তখন পরিবারও ভাল থাকে না। তাই নিজেকে খুশি রাখুন, সেই খুশি ছড়িয়ে পড়বে চারপাশে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...