বর্তমানে শিশুদের মধ্যে বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা। পরিবারে বংশগত হাঁপানির সমস্যা থাকলে, শিশুর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কি বেড়ে যায়? কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত সেক্ষেত্রে, পরামর্শ দিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পরিচয় বেরা (Dr.Parichaya Bera, Consultant Pediatrician)
ডাঃ পরিচয় বেরা জানিয়েছেন, শিশুদের মধ্যে কাশির সমস্যা বেড়েছে। কারুর কারুর দীর্ঘস্থায়ী কাশি দেখা যাচ্ছে। কারুর আবার অ্যাস্থমা-হাঁপানিও আছে। কাশি এবং হাঁপিনি একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। হাঁপানির প্রধান লক্ষণ কাশি। তবে কাশি মানেই যে হাঁপানি এমন ভয়ের ব্যাপার নেই। যেমন চোখের সামনে কোনও কিছু চলে এলে, নাকে জল ঢুকে গেলে যেভাবে প্রতিক্রিয়া করি সেভাবে কাশিও একটা রক্ষণ প্রক্রিয়া বলা যায়। ফুসফুসে হঠাৎ করে কোনও বিজাতীয় পদার্থ, মিউকাস বা কোনও কিছু গেলে সেটা যাতে ফুসফুসে প্রবেশ করতে না পারে তার রক্ষকের কাজ করে। বেশিরভাগ সময় কাশির প্রধান কারণ ভাইরাল ইনফেকশন অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খাবার খেতে গিয়ে উপরের দিকে উঠে আসে সেসবের কারণেও কাশি হয়ে থাকে। অ্যালার্জি, ধোঁয়া, ধূলো থেকেও কাশি হতে পারে। ভাইরাল ইনফেকশনের কাশি ৬-৭ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। ২-৩ সপ্তাহ হয়।
হাঁপানি কিন্তু একেবারেই আলাদা। এটি ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। যার প্রধান লক্ষণ কাশি। সেই কাশি সাধারণেড় চেয়ে আলদা।
৬ বছর বয়সের নিচে শিশুদের হাঁপানি’র নিশ্চিত পরীক্ষা কিছু করতে পারেন না চিকিট সারা, তাই তাদের ক্ষেত্রে ‘হাঁপানি’ ছাপও দেওয়া যায় না। বলা হয় রিঅ্যাকটিভ এয়ারওয়েড ডিজিজ বলা হয়। হাঁপানির প্রধান লক্ষণ কাশি। শুকনো কফ, রাত ও ভোরের দিকে কাশি হতে পারে। এই ধরনের কাশি সারাবছর ধরে থাকতে পারে। কখনও ওষুধ খেয়ে সেরে যায়, কিন্তু ফের ফিরে আসে ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে। বুক ভার, শ্বাস নেওয়ার সময় হু-হু শব্দ, বুকের যন্ত্রণা দেখা যায়।
অনেক কারণে হাঁপানি হতে পারে। এমন নয় যে কেবলমাত্র মা-বাবার থাকলেই হবে, তবে বাবা-মা দুজনেরই যদি হাঁপানি থাকে তাহলে শিশুর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫-৬ গুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিশুর মায়ের যদি হাঁপানির সম্ভাবনা থাকে।
শিশুদের কাশির পধান কারণ একটা লোয়ার রেস্পেটারি ঁট্র্যাক ইনফেকশন। এই ইনফেকশন হওয়ার পর অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় ৩-২ সপ্তাহ আছে।
রেস্পেটারি ইনফেকশন হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তা এ থেকে বাঁচতে কিছু প্রতিরোধ গ্রহ্ণ করা উচিত। যেমন শিশু যদি হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হয় তাহলে স্কুলে না পাঠানো, ভিড় থেকে দূরে রাখা। মাস্ক ব্যবহার করা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং বারবার হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুতে হবে।
শিশুদের অসুস্থতার অন্যতম কারণ ঠাণ্ডা লাগা, কমন কোল্ড ইনফেকশন। এটি এক ধরনের ভাইরাস ঘটিত সমস্যা। জ্বর আসে, হাঁচি হয়। বড়দের থেকেই বাচ্চাদের থেকে সংক্রমণ ছড়ায়, তাই পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে শিশুদের দূরে রাখা উচিত।
একেবারে ছোটবেলায় শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে অপরিণত তাই বারবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত ব্রেস্ট ফিডিং করানো উচিত। বাচ্চা সলিড ফুড খেতে শিখলে ফল শাক সবজি বেশি পরিমাণে খাওয়ানো উচিত। ঘুম খুব দরকার। যেসব শিশুদের বয়স ১ বছরের কম তাদের ১৬-১৮ ঘন্টা, ১-৫ বছরের শিশুদের ১৪-১৫ ঘন্টা ঘুমের দরকার। বাকিদের ৮-১০ ঘণ্টা।
শিশুদের সব রকম প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন নিয়মমাইফিক নেওয়া উচিত। ভ্যাকসিন অনেক রোগ থেকে বাঁচিয়ে দেয়।
এ বছর অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে শিশুদের মধ্যে একটু বেশি মাত্রায় অসুস্থতা দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য বার ওএরকম অসুস্থতা দেখা যায় তবে এবারে আক্রান্তের হার একটু বেশি। শিশু বা প্রাপ্ত বয়স্ক যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে।