পৌষালীকে কেন ভয় পায় বন্ধুরা? গানে-গল্পে ‘টলিকথা’র আড্ডায় গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধায়ের ছোটবেলার কোন সিক্রেট ফাঁস হল?
প্রঃ তোমার মধ্যে অলওয়েজ একটা গুড ভাইবস দেখতে পাই, এটার সিক্রেট কী?
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: আমাকে কেউ একজন শিখিয়েছেন উদাহরণ এটা যে যদি কেউ দশটাকা উপার্জন করো তাহলে সাত টাকা জমাবে, তিন টাকা ওড়াবে। এই ব্যালেন্স নিয়ে আমি জীবনটা চলি। ঈশ্বরের দয়ায় যদি টাকার অঙ্কটা বেশি হয়ে যায় তাহলেও খুশি যদি কমও থাকে বা ব্যালেন্স থাকে তাহলেও খুশি। যা আমার সামর্থ সেই অনুযায়ী কাজ করি, জমাই, ওড়াই।
প্রঃ ছোট থেকেই কি এরকম একটু দস্যিপনা ছিল?
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: ছিল মানে এখনও আছে। এখন দস্যিপনা একটু ভদ্র ভাবে। তখন এক থাপ্পড়ে দাঁত ভেঙে দিয়েছি এমনও হয়েছে।
প্রঃ একটু শুনি...
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: এটা ক্লাস সিক্সের ঘটনা। একটা ছেলে আমারই বন্ধু অনেকক্ষণ ধরে একটা কথা বলে যাচ্ছে আর সেই সময় আমার কথা শুনতে ভাল লাগছে না। আমি অনেকবার বললাম যে ভাই এই কথাটা শুনতে ভাল লাগছে না, তু্ই চুপ করে যা। কিন্তু শুনবে না সে। বলেই যাচ্ছে এক কথা। শেষ পর্যন্ত বিপদ সীমার ওপরে যখন জলটা চলে গেছে তখন ঠাসিয়ে এক চড়! তারপর দেখি দাঁতটা খুলে পড়ে গেছে!
প্রঃ এটা ঘটেছে!?
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: হুম। দাঁতটা একটু নড়বড়েই ছিল। আমি আর একটু এগিয়ে ভেঙে ফেলে দিয়েছি! একেবারে রক্তরক্তি কান্ড। সবাই হাঁ! তার তিন চারদিন পর গার্জেন মিটিং হল। বাবা মাথা নিচু করে বলল আমার মেয়ে যা করেছে ভুল করেছে। তার ঠিক সাতদিন পর আর একটা মেয়েকে ওই একই ধরনের ব্যাপার। এক লাথি বুকে... মানে খুবই বাজে ব্যাপার...
প্রঃ আমরা সব বুঝে গেছি, পরের প্রশ্নতে যাচ্ছি। আচ্ছা তোমার কিছুদিন আগে একটা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, সেটা একটু বলোম
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: আমি কোনওদিন ভাবতে পারিনি। স্বপ্ন হঠাৎ বাস্তবে বদলে গেলে তুমি কী করবে।
আমি তিন সেকেন্ডের জন্য মানুষটাকে দেখে মনে করছিলাম এই মানুষটা যে আইপিএলের ওপেনিং-এ মহেন্দ্র সিং ধোনিকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিল। হাতে আঘাত লেগেছে তাও শান্ত থেকে গান গেয়েছে। সেই মানুষটা আমার সামনে এটা কী সত্যি! সেদিন পৌনে একটার সময় এক গাল হেসে আমাকে বললেন 'অ্যাম সো সরি পৌষালী আমি তোমাকে দশ মিনিট বসিয়ে রেখেছি'। এরকম বহু বসে থাকি। দশ মিনিট কেন চার পাঁচ ঘন্টাও বসে থেকেছি এখনও থাকি। কিন্তু ওরকম একটা মানুষ হঠাৎ করে এসে যদি বলে এই তুমি কিছু মনে করো না'- ঠিক এরকম করে... আর একটা কথা আমি বলতে চাই, আমি জানি ইন্টারভিউতে বলার সময় আমি 'অরিজিৎ সিং'কে 'ও' এবং 'লোকটা' বলে সম্বোধন করেছি বলে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন তোমার সাহস হয় কী করে ওরকম একটা মানুষকে 'ও' বলার। এই ধরনের চলতি ভাষা ব্যবহার করার জন্য সত্যিই আমি দুঃখিত। কিন্তু আমি এখানে একটা কথা বলব, আমি 'আপনি' 'আজ্ঞে' করেই কথা বলছিলাম। উনি যখন এলেন ওই পাঁচ মিনিটের মধ্যে এমন একটা কমফোর্ট জোন তৈরি করে দিল। দিলই বলছি দিলেনটা বলছি না। তখনই আপনি থেকে তুমিতে আসতে আমার পাঁচ মিনিট লেগেছে। আমি কিন্তু জিজ্ঞাসা করেই নিয়েছি যে আমি কি তুমি বলতে পারি? আমি এটা অন স্টেজও করি। ওই সময় আমার যেটা মনে হয়েছিল আমি সেটাই করেছি। কিন্তু আবেগের বশে বেগ টানতে ভুলে গেছি বলে।
প্রঃ তোমার বন্ধুরা তোমায় এত ভয় পায় কেন? সব সিক্রেট কি জানিয়ে দাও?
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: হ্যাঁ। যার যত ভুলভাল সিক্রেট চান্স পেলেই জানিয়ে দিই। সেই জন্য ওরা খুব 'পৌষালী' 'পৌষালী' করে।
প্রঃ একটুও মনে হয় না এটা করব না?
পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়: যে সিক্রেট রিভিল করার আমি সেটাই করি। যেগুলো করার নয় সেগুলোর ব্যাপারে আমার একদম ক্ষুদিরামের পেট। একেবারে নিজের কাছে রেখে দিই।